‘নতুন বাংলাদেশে’ সাংবাদিকতা কতটা মুক্ত

প্রথম আলো সোহরাব হাসান প্রকাশিত: ০৩ মে ২০২৫, ১৩:১৫

কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ফটো কার্ড ঘুরছে। তিনটি বেসরকারি চ্যানেলের তিন সাংবাদিকের চাকরিচ্যুতি। সেই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের একটি বক্তব্যের স্ক্রিনশটও, যাতে তিনি বলেছেন, ‘আপনারা মন খুলে সরকারের সমালোচনা করুন।’


উল্লিখিত তিন সাংবাদিকের একজন উপদেষ্টার কাছে বাংলা নববর্ষের আয়োজন ও জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের তালিকা নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। তিন সাংবাদিকের প্রশ্নের মান ও ঔচিত্য নিয়ে সংশয় আছে। থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। শহীদদের বিষয়ে প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের আরও সতর্ক ও সংবেদনশীল থাকা উচিত ছিল। কিন্তু অনুচিত প্রশ্ন করার কারণে সাংবাদিকের চাকরি যাওয়ার উদাহরণ সম্ভবত এটাই প্রথম।


আশির দশকে আমাদের একজন অগ্রজ সাংবাদিক স্বয়ং রাষ্ট্রপতিকে কঠিন প্রশ্ন করেছিলেন। বলেছিলেন, শামসুর রাহমান, আল মাহমুদের কবিতা প্রথম পাতায় ছাপা হয় না। আপনার কবিতা প্রথম পাতায় ছাপা হয়। আপনি কি তাঁদের চেয়েও বড় কবি? এই প্রশ্নের জন্য তাঁর চাকরি যায়নি। ঢাকা থেকে বদলি করে অন্যত্র পাঠানো হয়েছিল।


তথ্য উপদেষ্টার দিক থেকে বলা হয়েছে, ওই তিন সাংবাদিকের চাকরি যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না। সরকারের হস্তক্ষেপ ছিল এ কথা কেউ বলেনওনি। বাস্তবতা হলো, ওই ঘটনার পর একটি সংগঠন ওই তিন সংবাদমাধ্যম কার্যালয় অভিমুখে অভিযানের ঘোষণা দেয়। এরপর ওই তিন প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয়।  



গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম মব ভায়োলেন্সের শিকার হয়েছে। অনেক সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী পদে রদবদল এসেছে। কিছু সম্পাদক ও সাংবাদিক পত্রপাঠ বিদায় হয়েছেন, তাঁদের স্থলে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা সাংবাদিকতার স্বাধীনতার নিশ্চয়তা না দিলেও মালিকের স্বার্থ সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিয়েছেন। তাঁদের রদবদল প্রক্রিয়ায় কেবল বর্তমান সরকার নয়, ভবিষ্যৎ ক্ষমতার হিসাব–নিকাশও কাজ করেছে। 


সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার, মামলা ও হয়রানি নিয়ে কোনো প্রশ্ন করলেই অনেকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কটি পত্রিকা বা টিভি চ্যানেল বন্ধ করা হয়েছিল কিংবা কতজন সাংবাদিক গ্রেপ্তার, কতজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সেই উদাহরণ টানেন। আওয়ামী লীগ সরকার সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করেছে, সাংবাদিকদের ওপর জেল–জুলুম চালিয়েছে, তার পরিণতিও তারা ভোগ করেছে। তাই স্বৈরাচারী সরকারের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের তুলনা হতে পারে না; যারা দেশের সংবাদমাধ্যমের সর্বোচ্চ স্বাধীনতা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 


আজ ৩ মে মুক্ত সংবাদমাধ্যম দিবস। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ) এই দিনে মুক্ত সাংবাদিকতায় বিভিন্ন দেশের অবস্থানের ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এবার বাংলাদেশের সূচক ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৪৯। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬৫তম। ১৬ ধাপ অগ্রগতি। তা সত্ত্বেও আরএসএফের বিশ্লেষণে আমরা ‘বেশ গুরুতর’ অবস্থায় আছি। এবার ভারতের অবস্থান ১৫১তম, পাকিস্তানের ১৫৮তম ও ভুটানের ১৫২তম। সূচকে এই তিন দেশ বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে। তবে নেপাল (৯০তম), শ্রীলঙ্কা (১৩৯তম) ও মালদ্বীপ (১০৪তম) এগিয়ে আছে।


আওয়ামী লীগ আমলে কেউ সরকারের বিরোধিতা করলেই  ‘বিএনপি–জামায়াত’ ট্যাগ লাগানো হতো। এখন ট্যাগ লাগানো হয় ‘স্বৈরাচারের দোসর’। আওয়ামী আমলে কোনো সংবাদমাধ্যম সরকারের সমালোচনা করলেই সম্পাদক ও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (ডিএসএ) মামলা ঠুকে দেওয়া হতো। ২০২৩ সালের ২৬ মার্চ প্রথম আলোর অনলাইনে প্রকাশিত একটি ফটো কার্ডের জন্য সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে কয়েক দিন কারাগারে আটক রাখা হয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও