পরিবেশ রক্ষায় সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে

যুগান্তর ডা. মো. মাহতাব হোসাইন মাজেদ প্রকাশিত: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৪

প্রতিবছর ২২ এপ্রিল বিশ্বজুড়ে পালিত হয় ‘ধরিত্রী দিবস’ বা ‘Earth Day’। এটি এমন একটি দিন, যেদিন মানুষ পরিবেশ, প্রকৃতি ও পৃথিবী রক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। আধুনিক সভ্যতা যত এগিয়ে যাচ্ছে, ততই প্রকৃতি ও পরিবেশের ওপর চাপ বাড়ছে। এই দিনে বিশ্ববাসী একত্রিত হয়ে পৃথিবীকে আরও বাসযোগ্য, সবুজ ও টেকসই রাখার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হয়। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববাসী জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে সোচ্চার হয়ে আন্দোলন ও আলোচনা অব্যাহত রাখছে বিশ্বজুড়ে। বিভিন্ন দেশের মানুষ এ আন্দোলনে অংশগ্রহণও করছে নিয়মিত। শিল্পোন্নত দেশের খামখেয়ালিপনার দৃষ্টান্ত তুলে ধরছে আলোচনা ও লেখালেখির মাধ্যমে। পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখতে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে আনার প্রচেষ্টায় লড়াই করে যাচ্ছে তারা। তাদের অভিযোগের তির শিল্পোন্নত দেশগুলোর দিকে। মূলত শিল্পোন্নত দেশগুলোই পরিবেশের বিপর্যয় ঘটিয়ে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বাড়িয়ে দেওয়ার নেপথ্য খলনায়ক। বড় বড় শিল্পকারখানা, পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণ, নির্বিচারে বন উজাড়, নদীশাসন ইত্যাদির ফলে ব্যাপকভাবে পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে সারা বিশ্বে। শিল্পোন্নত দেশগুলোর খামখেয়ালিপনার কারণে সিএফসি গ্যাস, কার্বন ডাই-অক্সাইড ও কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের নির্গমন বেড়ে গেছে। এ গ্যাস নিঃসরণের কারণে পৃথিবীর ফিল্টার নামে খ্যাত ওজোনস্তর পাতলা হয়ে ভূপৃষ্ঠ তপ্ত হচ্ছে ক্রমান্বয়ে। অর্থাৎ সূর্যের প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে ছেঁকে বিশুদ্ধ করে পৃথিবীর উপযোগী তাপমাত্রা পাঠাতে ব্যর্থ হচ্ছে ওজোনস্তর। উল্লেখ্য, পৃথিবীর জন্য সুষম তাপমাত্রা হচ্ছে ১০-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (কমবেশি হতে পারে)। অথচ সেই সুষম তাপমাত্রা এখন আর বিরাজ করছে না, বরং উলটোটি ঘটছে। ধীরে ধীরে বরফযুগের সমাপ্তি ঘটিয়ে পৃথিবী উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ক্রমেই। তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে ৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। কয়েক বছর আগে (৮ জুন, ২০১৯ সালে) কুয়েতের তাপমাত্রা বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল। সেখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছিল। ওই তাপে গাড়ির চাকার টায়ারও গলে গেছে। অবাক করার বিষয় হচ্ছে, ছায়াযুক্ত স্থানেও ছিল ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা, যে তাপমাত্রায় একজন মানুষের পক্ষে বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে।


আশঙ্কা করা হচ্ছে, তাপমাত্রা ৬৩-৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠার বিষয়টি অতি নিকটেই। উল্লেখ্য, তাপমাত্রা ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে গেলেই ডিম সেদ্ধ হতে থাকে। কাজেই আমরা বলতে পারি, এটি বিশ্বের জন্য একটি অশনিসংকেত। পৃথিবীতে মানুষ ছাড়াও কোটি কোটি প্রাণী রয়েছে, উদ্ভিদ আছে, যারা আমাদের জীবনরক্ষায় সহযোগিতা করে। সুতরাং প্রতিটি প্রাণের টিকে থাকার পরিবেশ আমাদেরই তৈরি করতে হবে। পৃথিবী টিকিয়ে রাখতে প্রাণ ও প্রকৃতির প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। আমাদের এই গ্রহ এখন প্রায় ৮০০ কোটি মানুষ আর হাজার হাজার কোটি উদ্ভিদ ও প্রাণীর বাসস্থান। সঙ্গে আছে নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত, সাগর, মরুভূমি, জলপ্রপাত। আমাদের ধরিত্রী আমাদের দিয়েছে জীবন ধারণের জন্য নির্মল বায়ু, পানি, খাদ্যসম্ভার, বসবাসের উপযোগী সব উপকরণ।



আজ আমাদের এই ধরিত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হুমকির মুখে। পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে একদিকে যেমন তীব্র তাপপ্রবাহ; আরেক দিকে প্রচণ্ড শীত অথবা বন্যা, খরা, ঝড়-বৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস বা দাবানলে আজকের ধরিত্রী জর্জরিত। এগুলোর জন্য মানুষের কর্মকাণ্ড অনেকটা দায়ী। অতিলোভী মানুষ প্রকৃতির সম্পদের অপব্যবহার করেছে। পাহাড়-পর্বত, বনাঞ্চল কেটে উজাড় করেছে। নদ-নদী, খাল-বিল, জলাশয় ভরাট করে আবাস্থল আর শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠা করেছে। বনাঞ্চল কমে যাওয়ায় বৃষ্টির পরিমাণ কমে যাচ্ছে আর তাপপ্রবাহ বাড়ছে। তীব্র তাপপ্রবাহে মানুষের শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। দেশের বিভিন্ন জলাশয়ে পানি সংকট দেখা দিচ্ছে। জলবায়ু-বিপর্যয় থেকে রক্ষা করার জন্য বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রাখতে হবে। এর উপরে গেলে প্রাণিকুলের বাঁচার সম্ভাবনা কম।


পৃথিবী সম্পর্কে কিছু তথ্য


পৃথিবী পুরোপুরি গোল নয় : আমাদের পৃথিবীকে সাধারণত গোল বলে বর্ণনা করা হয়, কিন্তু এটি আসলে পুরোপুরি গোলাকৃতির নয়। দুই মেরুর কাছে পৃথিবী কিছুটা চাপা। কাজেই আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে, পৃথিবী আসলে উপ-বর্তুলাকার। আর সব গ্রহের মতোই মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এবং নিজের অক্ষের উপর ঘূর্ণনের কারণে সৃষ্ট কেন্দ্রাতিগ শক্তির প্রভাবে মেরু অঞ্চল কিছুটা চ্যাপটা, আর নিরক্ষীয় অঞ্চল কিছুটা চওড়া। এ কারণেই বিষুবরেখা বরাবর পৃথিবীর ব্যাস এক মেরু থেকে অন্য মেরু বরাবর ব্যাসের চেয়ে ৪৩ কিলোমিটার বেশি।


পৃথিবীর ৭০ ভাগ পানি : পৃথিবীতে পানি আছে কঠিন, তরল ও বায়বীয় এই তিনটি আকারে। এছাড়া বিশ্বের উপরিভাগের তিন-চতুর্থাংশই পানিতে ঢাকা, যা আছে হিমবাহ, জলাভূমি, লেক, নদী, সাগর কিংবা মহাসাগরের আকারে। তবে বিশ্বের পানির ৯৭ ভাগই মহাসাগরের লবণাক্ত পানি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও