
ধর্ম শান্তি ও সম্প্রীতির শিক্ষা দেয়
প্রতিটি ধর্মই সমাজে শান্তি, সম্প্রীতি আর ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দেয়। সমাজ ও দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এমন কোন শিক্ষা ধর্ম আমাদেরকে দেয় না। সকল ধর্মই শান্তির বার্তাবাহক। সমাজ ও দেশে যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করলে সৃষ্টিকর্তা অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হোন। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছে, সবাই যেন শান্তিপূর্ণ ভাবে জীবন যাপন করে। আর এই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই আল্লাহপাক সর্বশেষে ইসলাম নামক ধর্মকে সর্বশ্রেষ্ঠ নবি হজরত মুহাম্মদ (সা.)এর মাধ্যমে পাঠিয়েছেন। ইসলাম এমন এক সুন্দর ও শান্তিপ্রিয় ধর্ম যার মাঝে অশান্তির কোনো স্থান নেই। এর আগাগোড়া কেবল শান্তিই আর শান্তি। এক কথায় বলা যায়, ইসলাম পরিপূর্ণ শান্তির ধর্ম।
গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। নিরীহ মানুষের ওপর চলমান বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে দেশজুড়ে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। তবে এই প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ থেকে অন্তত পাঁচ জেলায় কেএফসি, পিৎজা হাট, বাটাসহ বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর-লুটপাট হয়েছে, যা মোটেও ঠিক নয়।
নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের জন্য আপনার আমার হৃদয়ে অবশ্যই রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা তাদের শান্তির জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করি এবং এই নির্মম নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাই ঠিকই কিন্তু দেশের সম্পদ নষ্ট করে নয়। তাই আমাদের প্রতিবাদ হবে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ, সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এমন কোন কাজ আমরা যেন না করি।
বিশ্ব নিয়ন্ত্রণকর্তা সব সময়ই মানুষকে শান্তির পথে আহ্বান করে থাকে। প্রকৃত শান্তির ধারক ও বাহক ইসলাম ধর্মের নিষ্ঠাবান, শান্তিপ্রিয় অনুসারী মুসলমান কখনো সমাজের ও দেশের অশান্তির কারণ হতে পারে না। আল্লাহতায়ালা ইসলামকে পূর্ণাঙ্গীন দ্বীন হিসেবে মনোনীত করেছেন, আর হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)কে বানিয়েছেন সকলের জন্য অনুসরণীয় আদর্শ। মহানবির (সা.) জীবনাদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে যে কোনো ব্যক্তির জীবন শান্তিময় হতে পারে, হোক সে ইহুদি, খ্রিষ্টান বা যেকোনো ধর্মের অনুসারী। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করার অনুমতি ইসলামে নেই।
আজ সমগ্র বিশ্বে ধর্মের নামে যে বিশৃঙ্খলা তা পবিত্র কুরআন ও ইসলামি শিক্ষার সম্পূর্ণ বিপরীত। নৈরাজ্যের মাধ্যমে কেবল বিশৃঙ্খলাই দেখা দিতে পারে, শান্তি নয়। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য চাই শান্তিময় পরিবেশ। নৈরাজ্য সৃষ্টি করে কাউকে ইসলামের সুশীতল ছায়ার বেহেশতি বাতাসের স্বাদ উপভোগ করানো যেমন যায় না, তেমনি সমাজে শান্তিও প্রতিষ্ঠা করা যায় না। যদিও জোর করে আমি কাউকে আমার মত ও পথের দিকে আনতে পারি কিন্তু তার হৃদয়কে সম্ভব নয়। হৃদয় জয় করতে হলে উত্তম আদর্শ প্রতিষ্ঠা করা চাই, যা করেছিলেন আমাদের প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি (সা.) মানব হৃদয় তরবারি দিয়ে জয় করেননি, তিনি জয় করেছিলেন উত্তম আদর্শ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।