You have reached your daily news limit

Please log in to continue


মুক্তিযুদ্ধের টার্নিং পয়েন্ট তেলিয়াপাড়া

১৯৭১ সালের ৪ ও ১০ এপ্রিল যদি জেনারেল ওসমানীর নেতৃত্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দুঃসাহসী ও দেশপ্রেমিক তরুণ বাঙালি অফিসাররা সম্মিলিত হয়ে তেলিয়াপাড়া চা-বাগানে বৈঠক করতে না পারতেন, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের পুরো নেতৃত্ব হয়তো ভারতীয় আর্মির হাতে চলে যেত, এবং ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ছাড়া ভারতের পক্ষে পাকিস্তানি বাহিনীকে পর্যুদস্ত করা এত সহজসাধ্য কখনো হতো না। দীর্ঘ সময়ের যুদ্ধে একসময় ধৈর্যহারা হয়ে যে কোনো পক্ষ রণে ভঙ্গ হয়ে পিছপা হতো এবং জাতি হিসাবে আমরা কোন অবস্থায় থাকতাম, তা কেবল সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানবেন। তাই আমাদের অগ্রজ দুঃসাহসী, নির্ভীক, নিখাঁদ দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের প্রতি জানাই অজস্র শ্রদ্ধা, সম্মান, হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা।

রাজনৈতিক আন্দোলন যেমন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ছাত্র ও রাজনীতিকরা, সামরিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি বেগবান করছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা, যার নেতৃত্বে ছিলেন জেনারেল মুহাম্মদ ইশফাকুল মজিদ ও কর্নেল মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানী। এ দুজন পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রের বিভিন্ন খবর গোপনে জানতে পারছিলেন পাকিস্তানে অবস্থানরত সিনিয়র বাঙালি জেনারেল খাঁজা ওয়াসিউদ্দিনের কাছ থেকে। তারা গোপনে বহু বৈঠক করে যাচ্ছিলেন এবং অবসরপ্রাপ্তদের ঐক্যবদ্ধ করতে শুরু করেছিলেন সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য। এরপর পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের হাতে গ্রেফতার হন জেনারেল ইশফাকুল মজিদ। কোনো রকমে গ্রেফতার এড়িয়ে ২৫ মার্চ রাতে ওসমানী পালিয়ে গেলেন কেরানীগঞ্জের জিঞ্জিরায় এবং সেখান থেকে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে আগরতলা।

ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বিদ্রোহ ঘোষণা : ২৫ মার্চ গভীর রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অতর্কিতে আক্রমণ চালায় নিরীহ জনগণের ওপর এবং শুরু করে নির্বিচারে গণহত্যা। এ সময় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৮টি ব্যাটালিয়নের মধ্যে ৩টি ছিল পাকিস্তানের লাহোর ও করাচিতে, বাকি ৫টির অবস্থান ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে। এ ৫টি ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিনায়কদের মধ্যে দুজন ছিলেন বাঙালি। বাকি তিনজন অবাঙালি। বাকি দুই ব্যাটালিয়নের দুই অধিনায়কই পাকিস্তানিদের কাছে প্রচণ্ড চাপের মুখে আত্মসমর্পণ করেন এবং বহু সদস্য পাকিস্তানিদের হাতে শহিদ হন। কিন্তু বাকি বাঙালি অফিসার ও সৈনিকদের নিয়ে এ ৫টি ব্যাটালিয়নই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। ২৬ মার্চ চট্টগ্রামে ৮ম ইস্ট বেঙ্গল, জয়দেবপুরে ২য় ইস্ট বেঙ্গল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল, ২৮ মার্চ সৈয়দপুরে ৩য় ইস্ট বেঙ্গল গণহত্যার প্রতিবাদে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং প্রতিরোধ সংগ্রামে লিপ্ত হয়। চট্টগ্রামে ৮ম ইস্ট বেঙ্গলের উপ-অধিনায়ক মেজর জিয়াউর রহমান বীর উত্তম (পরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি) কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ৫টি ইউনিট পাঁচ স্থানে। যুদ্ধের ময়দানে তখন পাঁচটি ইউনিটের কমান্ডই ছিল মেজর ও ক্যাপ্টেনদের হাতে। জেনারেল ইশফাকুল মজিদ গ্রেফতার হওয়ার ফলে তখন সর্বজ্যেষ্ঠ সামরিক অফিসার ছিলেন কর্নেল ওসমানী, যিনি ২য় বিশ্বযুদ্ধ, কাশ্মীরযুদ্ধ এবং ’৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কমান্ডার। তিনি এবং অন্য অফিসাররা একটি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক সরকারের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে ৪ এপ্রিল একত্রিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

তেলিয়াপাড়ার ঐতিহাসিক দিন : ২৫ মার্চের কালরিত্রের পর বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন ছিল ৪ এপ্রিল ও ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল তেলিয়াপাড়া। এটাই ছিল মুক্তিযুদ্ধের টার্নিং পয়েন্ট। সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমার (বর্তমানে জেলা) মাধবপুর থানার অন্তর্গত ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক কিংবা তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশন থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার অভ্যন্তরে ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা স্থানে অবস্থিত তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের ম্যানেজার বাংলো। এ বাংলোয় প্রথম বৈঠক মুক্তিযুদ্ধের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এখানে উপস্থিত হন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ২৭ জন বীর সেনানী, যারা ছিলেন স্বাধীনতাযুদ্ধের সংগঠক অকুতোভয় সিপাহসালার। এ সভা অনুষ্ঠিত না হলে এবং জেনারেল ওসমানীকে সর্বাধিনায়ক ও প্রবাসী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া না হলে মুক্তিযুদ্ধ একটি বিশৃঙ্খল যুদ্ধে পরিণত হতো নিঃসন্দেহে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন