শিল্প বিপ্লবের মাধ্যমে ত্বরান্বিত হওয়া পাশ্চাত্য দুনিয়ার বৈশ্বিক প্রভাব কেবল প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মাধ্যমে হয়নি। বরং এর পেছনে ছিল বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান এবং উদ্ভাবনে কৌশলগত বিনিয়োগ। কৃষিনির্ভর অর্থনীতি থেকে শিল্পভিত্তিক সমাজে রূপান্তরের পেছনে ছিল কিছু বিপ্লবাত্মক আবিষ্কার-যেমন : স্টিম ইঞ্জিন, যন্ত্রচালিত উৎপাদনব্যবস্থা এবং পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব অগ্রগতি। এসব উন্নয়ন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি পাশ্চাত্য দুনিয়ার বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত নেতৃত্ব এবং বৈশ্বিক প্রভাবও সুদৃঢ় করেছে।
এই অগ্রগতির কেন্দ্রে ছিল মৌলিক গবেষণার প্রতি একনিষ্ঠ ও নিরলস অনুসন্ধান। এই প্রয়াসে অনেক সময় হয়তো তাৎক্ষণিক অর্থনৈতিক লাভ ছিল না। কিন্তু প্রকৃতির নিয়ম বোঝার প্রতি কৌতুহল এবং আকাঙ্ক্ষায় তারা এই অনুসন্ধান চালিয়েছে। ব্রিটেনের রয়্যাল সোসাইটির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এবং আমেরিকার গবেষণাভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হয়ে ওঠে আবিষ্কারের কেন্দ্র। এই গবেষণাধর্মী ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েই গড়ে ওঠে এমন সব উদ্ভাবন, যা বিশ্বকে পুরোপুরি বদলে দেয়। যেমন অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসাবিজ্ঞানকে পরিবর্তন করে দিয়েছে, রাডার ও পরমাণু জ্বালানি বৈশ্বিক শক্তির ভারসাম্য পালটে দিয়েছে। এছাড়া ছিল আরও অনেক যুগান্তকারী পরিবর্তন, যা বিশুদ্ধ বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান থেকে আত্মপ্রকাশ করেছে।