বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের এত তাড়া কেন?

ঢাকা পোষ্ট জাকির মজুমদার প্রকাশিত: ০৯ মার্চ ২০২৫, ১৯:২৪

স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার সর্বস্তরে যে ক্রীড়নক, স্তাবক প্রশাসনিক কাঠামো ও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে গেছেন তার মূলোৎপাটন, পুনর্গঠন ও সংস্কার সত্যিই আজ এক বাস্তবতা। একইসঙ্গে মুনাফাখোর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভাঙা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বাভাবিক ভারসাম্য ও গতিশীলতা ফেরানো জরুরি।


ভোক্তা পর্যায়ে মূল্যস্ফীতি সহনশীল এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা ও জননিরপত্তা বিধান সবচেয়ে অগ্রাধিকার হওয়া বাঞ্ছনীয়। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার বিগত সাত মাস দেশি-বিদেশি নানা অযাচিত উৎপাত এবং কথিত আন্দোলন, দাবি-দাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ-সংগ্রাম মোকাবিলায় বেশিরভাগ সময় ব্যয় করেছেন।


রাষ্ট্রকাঠামো পুনর্গঠন ও সংস্কার দূরে থাক, একটি সুষ্ঠু, অবাধ, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করার মতো প্রস্তুতি নেওয়াও সম্ভব হয়নি। সুতরাং সবকিছুর আগে সরকারের স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রের সর্বস্তরে বিদ্যমান প্রশাসনের মধ্যে বোঝাপড়ার ঘাটতিও দূর হয়নি।


এত বছরের রাষ্ট্রকাঠামোতে আহামরি সিস্টেম ডেভেলপ হয়নি বা রাষ্ট্রকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর (ফাংশনাল) করা যায়নি। বরং যেটুকু করা গেছে হাসিনার স্বৈরাচারী দেড় দশকে তাও ভেঙে পড়েছে। এছাড়া রক্তাক্ত একটি গণবিপ্লব পরবর্তী রাষ্ট্রের সর্বস্তরের ভারসাম্য এবং আদেশ, নির্দেশ ও আনুগত্যের জায়গা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই কারণে সরকার ও প্রশাসনে স্থবিরতা অসম্ভব কিছু নয়। এখন প্রয়োজন সরকার ও প্রশাসনে পারস্পরিক বোঝাপড়া, গতিশীলতা, প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং রাজনৈতিক ও জাতীয় ঐক্য। তারপরই জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভাবার বিষয়টি আসতে পারে।



জাতীয় নির্বাচনের আগেই রাষ্ট্রের গোটা সিভিল প্রশাসন, বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন এবং এর প্রশাসনিক পুনর্গঠন ও সংস্কার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পুনর্গঠন ও সংস্কার অতীব জরুরি। সংসদের নির্বাচনী এলাকা পুনর্বিন্যাস ও বিশ্বাসযোগ্য ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিষয়টিও আবশ্যিক।


নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্ত এবং মৃত্যুজনিত কারণে ভোটার তালিকা সংশোধনের বিষয় কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। নতুন নির্বাচন কমিশনকে এজন্য যৌক্তিক সময় দেওয়া জরুরি। কোনো রাখঢাক না করেই বলছি, উল্লেখিত প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করাসহ রাষ্ট্রব্যবস্থাকে স্থিতিশীল পর্যায়ে না এনে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না করে, মূল্যস্ফীতির মোটামুটি টেকসই সমাধান না করে এবং ভঙ্গুর অর্থনৈতিক অবস্থার পুনর্বাসন ও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় না পৌঁছা পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচন ন্যূনতম সমাধান নয়। বলা যায়, তাড়াহুড়ো করে যেনতেন নির্বাচন দেশের ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতার নিশ্চায়ন করে না।


বিশ্লেষক, বিশেষজ্ঞদের অনুমিত ধারণা ও বাস্তবতার নিরিখে বলা যায়, সব স্তরে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করতে কমপক্ষে তিনবছর সময় প্রয়োজন। বিপ্লবোত্তর রাষ্ট্রের সর্বস্তর, রাজনীতি ও অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ফেরানো প্রয়োজন। তার আগে নির্বাচন হলে আগের জায়গায় ফিরবে দেশ। সুতরাং রাষ্ট্রকাঠামোর সার্বিক পুনর্গঠনের জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের যে দাবি উঠেছে তা যৌক্তিক ও সময়োপযোগী। অনস্বীকার্য, বিপ্লবোত্তর জনআকাঙ্খা ধারণে বিএনপির মতো বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তির অবস্থান নিয়ে জনমনে সংশয় তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার, সংবিধান পুনর্লিখন ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ প্রশ্নে। এসব বিষয়ে সুস্পষ্ট সমাধানই মূলত ভবিষ্যৎ রাজনীতির ইতিবাচক স্থিতিশীলতা ও গতিপ্রকৃতি নির্ধারিত হওয়ার কথা।


যদি সত্যিই জুলাই বিপ্লব ঘোষণা না হয় অথবা গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার বা পুনর্লিখন না হয়, সর্বোপরি রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার ছাড়া আমরা জাতীয় নির্বাচনের দিকে মনোযোগী হই; তবে জেনে রাখুন, দেশ অবধারিতভাবে এত বছরের পশ্চাৎপদ রাজনৈতিক জঞ্জালকে উতরাতে পারবে না। সংকট জিইয়ে থাকলো।


আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনে ভারত, কিছু পশ্চিমা মোড়লের একাট্টাকে সমর্থন জানানোর ইঙ্গিত হলো দ্রুত নির্বাচন দাবি। দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি বুঝে বা না বুঝে সেই ফাঁদে পা দিয়েছে। অথবা গণবিপ্লবের পর নতুন কোনো রাজনৈতিক শক্তি বিকল্প হিসেবে দাঁড়িয়ে যায় কিনা এমন আশঙ্কা থেকে দ্রুত নির্বাচন দাবি বিএনপির মতো রাজনৈতিক দলের জন্য প্রাসঙ্গিক।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও