
আর্থসামাজিক বিশৃঙ্খলায় দেশ
বর্তমানে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা এক অস্থিরতার মধ্যে চলছে। কিছু ক্ষেত্রে বেশ ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেলেও, বেশ কিছু খারাপ দিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। মূল্যস্ফীতি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, বিনিয়োগের স্থবিরতা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে কিছুটা স্বস্তির ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে, যেমন রিজার্ভে পতন নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা, খাদ্য মূল্যস্ফীতির কিছুটা হ্রাস এবং মুদ্রা পাচারের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর ব্যবস্থা।
১. ঝুঁকিতে উচ্চ মূল্যস্ফীতি : উচ্চ মূল্যস্ফীতি বর্তমানে একটি গুরুতর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মার্চ থেকে মুদ্রাস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে, যা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রধান কারণ। বিশেষ করে খাদ্যপণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শেষ সময় থেকে বাংলাদেশে প্রতি মাসে খাদ্যপণ্যের দাম ৫ শতাংশের বেশি থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা এবং শুল্কছাড় দেওয়া সত্ত্বেও বাজারে তার প্রভাব না পড়া এই মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে, যেখানে নীতি সুদহার (রেপো রেট) ১০ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আশা প্রকাশ করেছেন যে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে জানুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে এবং চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২০২৫) শেষ মাস জুন নাগাদ এটি ৭ থেকে ৮ শতাংশে নেমে আসবে। এ ছাড়া আগামী বছরে মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।