শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ন্যায়বিচার

জাগো নিউজ ২৪ মাহমুদ আহমদ প্রকাশিত: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:৫৪

সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা ও সুখ-সমৃদ্ধির জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা একান্ত অপরিহার্য। শান্তি আর সম্প্রীতির জন্য ন্যায়বিচার অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় ব্যক্তি ও মানব জীবনের সব শাখায় শরিয়তসম্মত জীবন বিধানে যার যে হক বা পাওনা- তা আদায়ের সুব্যবস্থা করা সম্পর্কিত কর্মকাণ্ডকে ‘আদল’ বলা হয়। অত্যাচারের প্রতিবিধান এবং বিচারে ন্যায়ের মানদণ্ড এমনভাবে ধারণ করা, যাতে পক্ষদ্বয়ের কারও প্রতি পক্ষপাতিত্ব না হয়, এটাও আদল।


ন্যায়বিচারকারীদের বিষয়ে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ন্যায়বিচারকারী আল্লাহর নিকটে আরশের ডানে নুরের মিম্বরে অবস্থান করবে। এ অবস্থানে ওইসব লোক থাকবে, যারা নিজের পরিবার এবং নিজের জনগণের প্রতি ইনসাফের সহিত বিচারকার্য সম্পন্ন করে (মুসলিম)।


সমাজ ও দেশের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ন্যায়বিচারের বিকল্প নাই। বিশ্বজুড়ে সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মূল কারণ হচ্ছে ন্যায়বিচারের অভাব। দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রে বড় ধরনের অপরাধ করার পরেও অপরাধী কোনো না কোনো ভাবে শাস্তি থেকে মুক্ত হয়ে যাচ্ছে আর অপরাধীকে সার্বিক সহযোগিতাও করছে একটি মহল। অথচ পবিত্র কুরআনের শিক্ষা হচ্ছে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে যদি নিজ পিতামাতার বিরুদ্ধেও সাক্ষ্য দিতে হয় তা যেন দেয়া হয়। আর আমরা আজ করছি উলটো, অপরাধী নিজের আত্মীয়স্বজন হলে তাকে কীভাবে রক্ষা করা যায় সেই চেষ্টায় রত হই।



পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘হে যারা ইমান এনেছ! আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সাক্ষ্যদাতা হিসেবে তোমরা দৃঢ়ভাবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকারী হও, এমনকি সেই সাক্ষ্য তোমাদের নিজেদের বা পিতামাতার অথবা নিকটাত্মীয়দের বিরুদ্ধে গেলেও। যার সম্পর্কে সাক্ষ্য দেয়া হচ্ছে, সে ধনী হোক বা গরীব, আল্লাহ্ উভয়েরই সর্বোত্তম অভিভাবক। অতএব তোমরা যাতে ন্যায়বিচার করতে সক্ষম হও, সেজন্য তোমরা কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করো না আর তোমরা যদি পেঁচানো কথা বল অথবা সত্য এড়িয়ে যাও, তবে মনে রেখো, তোমরা যা কর সে বিষয়ে নিশ্চয় আল্লাহ পুরোপুরি অবগত আছেন’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১৩৫)।


এ আয়াতে শুধু সুবিচারের কথাই স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়নি, বরং সুবিচার প্রতিষ্ঠার অপরিহার্য শর্তাবলিও উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, শুধু সুবিচার প্রতিষ্ঠাই নয়, বরং সুবিচারের পতাকাকেও সমুন্নত রাখতে হবে। যেখানেই ন্যায়বিচার ভূলুণ্ঠিত হতে দেখা যাবে, সেখানে তা সমুন্নত করাতে সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে। মামলায় কোন পক্ষের হার-জিতের জন্য সাক্ষ্য নয়, বরং শুধু মাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্যই সাক্ষ্য দিতে হবে। কেননা, সত্য সাক্ষ্য ব্যতিরেকে সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। সত্য সাক্ষ্য দিতে গিয়ে যদি নিজেদের স্বার্থে আঘাত লাগে অথবা নিজ পিতামাতার বা নিকটাত্মীয় পরিজনের প্রতিকূলেও যদি যায়, তবুও সত্য সাক্ষ্য দিতে হবে। ন্যায়বিচারের উচ্চ মানদণ্ড ছাড়া সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয়। তাই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হলে একমাত্র সত্যকেই মাধ্যম বানাতে হবে।


আজ যারা সমাজ ও দেশে নানা অপকর্ম করছে তারা তো কোনো না কোনো পরিবারেরই সদস্য। অপরাধীদের পরিবার যদি প্রথমে সোচ্চার হত তাহলে অপরাধের মাত্রা এমনিতেই অনেক কমে যেত কিন্তু আমরা তা করছি না। এজন্যই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ইসলাম অত্যধিক গুরুত্বারোপ করেছে। আল্লাহপাক হলেন সবচেয়ে বড় ন্যায়বিচারক। ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা যেহেতু আল্লাহরই কাজ, তাই শাসনকার্যে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সবাইকে আল্লাহপাক এ নির্দেশই প্রদান করেন, তারা যেন ন্যায়পরায়ণতা, দক্ষতা এবং নিরপেক্ষতার সাথে নিজেদের কর্তব্য পালন করেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও