বিজ্ঞানের আলোকে সরস্বতী পূজার মাহাত্ম্য

ঢাকা পোষ্ট ড. মিহির লাল সাহা প্রকাশিত: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৩৪

বাঙালি সংস্কৃতিতে দেবী সরস্বতীকে শিক্ষা, সংগীত, শিল্পকলার আশীর্বাদ ধাত্রী মনে করা হয়। বর্ষ পরিক্রমায় মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমীর পুণ্য তিথিতে সরস্বতী মায়ের পূজার দিন। শিক্ষা, সংগীত ও শিল্পকলায় জ্ঞানলাভের আশায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা ভক্তিভরে দেবী সরস্বতীর পূজা করে থাকে।


দেবী সরস্বতীর এক হাতে বীণা, অন্য হাতে থাকে পুস্তক। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী পার্বতী কর্তৃক অনুপ্রাণিত হয়ে শিব রুদ্রবীণা সৃষ্টি করেন। রুদ্র শিবের অপর নাম। রুদ্রবীণা বলতে ‘রুদ্রের বীণা’ বা ‘শিবের বীণা’ বোঝায়। বীণা একটি বাদ্যযন্ত্র হলেও এতে সুর রয়েছে বিধায় এটিরও জীবন আছে। বীণার সেই জীবন খুবই ছন্দময়। বীণার ঝংকারে ওঠে ধ্বনি বা নাদ।


বিদ্যার দেবী সরস্বতীর ভক্তরা একাগ্রচিত্তে কায়মনোবাক্যে সাধনার দ্বারা সিদ্ধিলাভ করলে বীণার ধ্বনি শুনতে পায় বলে মনে করা হয়। বীণার সুর অত্যন্ত মধুর। বিদ্যার্থীদেরও মুখনিঃসৃত বাক্যও যেন বীণার মতো মধুর হয়। সেই কারণেই বিদ্যার দেবী সরস্বতীর হাতে বীণা। তাই সরস্বতীর আরেক নাম ‘বীণাপাণি’। তিনি কখনো বীণাপাণি (যাঁর হাতে বীণা শোভা পায়), কখনো বিদ্যাদাত্রী (যিনি বিদ্যা দান করেন), কখনো বীণাবাদিনী (যিনি বীণা বাজান), কখনো পুস্তকধারিণী (যিনি হস্তে পুস্তক ধারণ করেন), কখনো হংসবাহিনী (যে দেবীর বাহন রাজহংস) কখনো বাগদেবী (বাক্যের দেবী) নামেও পরিচিত।


এছাড়া তিনি শ্রুতদেবী নামেও কথিত হন। বেদে সরস্বতী প্রধানত নদীর অধিষ্ঠাত্রী দেবী। সরস শব্দের অর্থ জল। তাই সরস্বতী শব্দের আদি অর্থ হলো জলবতী বা নদী। ধ্যানমন্ত্রে দেবী সরস্বতীকে শ্বেতবর্ণা, শ্বেত পদ্মে আসীনা, মুক্তার হারে ভূষিতা, পদ্মলোচনা ও বীণাপুস্তকধারিণী বলা হয়েছে।



সরস্বতী জ্ঞানের দেবী। তিনি জ্ঞান, সংগীত, শিল্প এবং শিক্ষার সাথে যুক্ত। পার্বতী, সরস্বতী এবং লক্ষ্মী মিলে হলো ত্রিদেবী। একারণে সরস্বতী হলেন ত্রিদেবীর একজন। এই ত্রিদেবীর কাজ হলো ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিবকে যথাক্রমে জগৎ, সৃষ্টি, পালন করতে সাহায্য করা। সরস্বতীর গায়ের রং শুভ্র (সাদা)। পদ্মাসনে অধিষ্ঠিত তিনি। এই পদ্মকে জ্ঞানের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়।


পুরাণ অনুসারে বসন্ত পঞ্চমীতেই দেবী সরস্বতীর জন্ম হয়। সরস্বতীকে চার বেদের জননী বলা হয়। সূর্যের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়েছিলেন গায়ত্রী এবং বেদের সৌর দেবতা। গায়ত্রীকে বেদমাতাও বলা হয়। সরস্বতীর বাগ্মিতার ক্ষমতা ও দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে সরস্বতীকে 'বাগদেবী' নামে ভূষিত করেন ব্রহ্মা। বিভিন্ন রূপ ধারণ করতে পারেন দেবী। এ কারণে সরস্বতীর আর এক নাম 'শতরূপা'।


দেবীকে শুক্লবর্ণা বলা হয়। শুক্ল বর্ণ মানে সাদা। আর সাদা হলো শুদ্ধ গুণের প্রতীক। সরস্বতী জ্ঞানে গুণান্বিতা বলে তার গায়ের রঙ শুক্লবর্ণ অর্থাৎ দোষহীনা। পবিত্রতার মূর্তি আর জ্ঞানদান করেন বলেই তিনি জ্ঞানদায়িনী। দেবী হংসবাহনা। জ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর বাহন রাজহংস।


হিন্দু পুরাণে, হংস একটি পবিত্র পাখি। হাঁস অসারকে ফেলে সারকে গ্রহণ করে। দুধ ও জলের মিশ্রণ থেকে জল ফেলে শুধু দুধটুকু গ্রহণ করে কিংবা কাদা মিশ্রিত স্থান থেকে শুধুমাত্র তার খাদ্য খুঁজে নিতে পারে। সরস্বতী পূজার সময় এই প্রার্থনা করা হয় যেন, অবিদ্যা থেকে বিদ্যাকে ছেঁকে নেওয়ার শিক্ষা পাওয়া যায়। এটাই আসল শিক্ষা, তাই সরস্বতীর বাহন রাজহংস।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও