বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সমন্বিত বা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা চালু করতে অনেক বছর সময় লেগেছে। শিক্ষার্থীদের দাবি ও আন্দোলনের মুখে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বেশির ভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা চালু করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা একটি পরীক্ষা দিয়েই তাঁদের যোগ্যতা ও পছন্দ অনুযায়ী গুচ্ছে থাকা যেকোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারতেন। তবে বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সে সময়ও আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হতো।
প্রথম আলোর খবর থেকে জানা যায়, আসন্ন ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি সামনে রেখে কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছপদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এককভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে। ইতিমধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই পথ অনুসরণ করতে চায় আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়।
এর ফলে উচ্চশিক্ষায় ভর্তি নিয়ে আবারও পুরোনো ভোগান্তি ফেরার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছোটাছুটি করতে হবে এবং ভোগান্তি ও ব্যয় দুটোই বাড়বে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজস্ব আইন, একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত ও স্বকীয়তার কথা বললেও বাস্তবে আর্থিকভাবে লাভবান হতেই আলাদা পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে তারা। ভর্তির ফরম বিক্রি বাবদ বিপুল আয়ের বড় অঙ্কই শিক্ষকসহ ভর্তির কাজে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা পেয়ে থাকেন।
বর্তমানে সারা দেশে ৫৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও ১১৪টি অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ৮৮১টি কলেজে স্নাতক (সম্মান) পড়ানো হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আসন্ন শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ পরীক্ষা পদ্ধতিতে ভর্তির ব্যবস্থা অনুসরণ করতে উপাচার্যদের অনুরোধ করলেও তা আমলে নেওয়া হচ্ছে না।