সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি বাস্তবায়নযোগ্য রোডম্যাপ

ডেইলি স্টার সাইফুর রহমান প্রকাশিত: ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৩:১৬

অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রের ভিত্তি হলো অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। তাই নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার, যার জন্য নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন প্রয়োজন।


তবে ভোটাধিকার সম্পর্কে জনসাধারণের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করাও সমানভাবে জরুরি। যদিও নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন যেকোনো সরকার ইচ্ছা করলেই স্বল্প সময়ে করতে পারে, সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার সম্পর্কে মনোভাব পরিবর্তন করা একটি দীর্ঘমেয়াদী কাজ—যার একটি প্রক্রিয়া অন্তর্বর্তী সরকার অন্তত শুরু করে যেতে পারে।


উভয় লক্ষ্য অর্জনে একটি বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ লেখাটিতে উপস্থাপন করা হয়েছে।


নির্বাচন কমিশন সংস্কার


নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রধান সমস্যা হলো স্বার্থের অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব। পাঁচ বছরের মেয়াদে নিয়োগপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনাররা প্রায়ই নিরপেক্ষ সেবা প্রদানের চেয়ে নিজ পদে বহাল থাকার বিষয়েই বেশি মনোযোগ দেন। অন্যদিকে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা—যেমন: রিটার্নিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসার, জেলা নির্বাচন অফিসার এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মী—সরকারি কর্মচারী হওয়ায়  বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারেন না।


তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেও এই স্বার্থের দ্বন্দ্ব বজায় থাকতে পারে। কারণ মাঠপর্যায়ে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা একজন সরকারি কর্মচারী প্রায়ই সম্ভাব্য বিজয়ীদের পূর্বানুমান করতে সক্ষম এবং সে অনুযায়ী আনুগত্য প্রদর্শন করতে পারেন।


পদের প্রতি লোভ দূর করতে কমিশনারদের স্বল্পমেয়াদী চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে, যা নির্বাচনের ধরন অনুযায়ী তিন থেকে ছয় মাস পর্যন্ত হতে পারে। নির্বাচন কাজে অভিজ্ঞ অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তাদের থেকে কমিশনার নির্বাচন করা যেতে পারে। নির্বাচন সংক্রান্ত যেকোনো বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের একটি পুল তৈরি করা যায়, যারা প্রয়োজন অনুযায়ী মামলার নিষ্পত্তির জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ আদালতও গঠন করতে হবে।



ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজটি দ্রুত শুরু করা প্রয়োজন। স্বচ্ছতার জন্য এই তালিকা জনগণের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য একটি অনলাইন ভোটিং সিস্টেম তৈরি করা যেতে পারে, যাতে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি ভোটাররা সহজেই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।


রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচনী এলাকার আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা প্রধান কর্মকর্তার জায়গাটি প্রশাসন, সামরিক ও পুলিশ বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের দিয়ে সহজেই পূরণ করা যেতে পারে। প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার—যাদের বড় সংখ্যায় প্রয়োজন হয়—বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে আসতে পারেন। সরকারি কর্মচারীদের নিয়োগের প্রয়োজন হলে, নিজ নিজ এলাকার বাইরে নিযুক্ত করতে হবে।


মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের ইউনিট সশস্ত্র বাহিনী, বর্ডার গার্ড, রিজার্ভ পুলিশ, আনসার ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠন করা যেতে পারে, যা পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর জুনিয়র কর্মকর্তাদের কমান্ডে পরিচালিত হবে।


জনসম্পৃক্ততা


যদি গ্রামের কোনো ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হয়, 'কেন অনেকই এক কাপ চায়ের বিনিময়ে ভোট বিক্রি করে দেয়?' উত্তর হবে, 'মানুষ তাদের নৈতিক মূল্যবোধ হারিয়েছে। তারা স্বার্থপর এবং দেশ ও সমাজের কল্যাণের প্রতি উদাসীন।' তারা আরও বলতে পারেন, কেবল মানসিকতার মৌলিক পরিবর্তনই এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। তবে, আমি এমন ধারণার সঙ্গে একমত নই। আসল সমস্যা হলো, মানুষ তাদের ভোটের প্রকৃত মূল্য সম্পর্কে অজ্ঞ।


ল্যারি ডায়মন্ড তার লেখা 'ডেভেলপিং ডেমোক্রেসি: টুয়ার্ড কনসোলিডেশনে' উল্লেখ করেছেন, একটি টেকসই গণতন্ত্র গড়ে তোলার জন্য শুধু নির্বাচনী সংস্কারই যথেষ্ট নয়। এমন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলা প্রয়োজন, যা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও