আহা, আরও অনেক ইসরায়েলি যদি গাজার শিশুদের জন্য কাঁদত!
রজার ওয়াটার্সকে নিয়ে ইসরায়েল রীতিমতো ভীত ও ক্ষুব্ধ। অবশ্য ৭ অক্টোবরকে অস্বীকার করে এমন সবার প্রতিই ইসরায়েলের এহেন অবস্থান। আজকে ইসরায়েলিদের চোখে ওই দিনের নৃশংসতা অস্বীকারের চেয়ে জঘন্যতম আর কিছু নেই। তাঁরা অবশ্য সঠিক। এটা তো হলোকাস্টকে অস্বীকার করার শামিল।
৭ অক্টোবরের নৃশংসতা তো ওই দিনের পর থেকে ইসরায়েল যা করেছে ও করে আসছে, সেসবের বেঠিক যৌক্তিকতা। সে কারণেই তাঁদের ক্ষোভ এত আক্রমণাত্মক।
ইসরায়েলিদের চোখে তো এটা অজানা থাকা অসম্ভব যে হামাসের অপহৃত জিম্মিদের মধ্যে একটি ইসরায়েলি শিশু রয়েছে। অথচ বেশির ভাগ ইসরায়েলি এটা অস্বীকার করছেন যে ১৭ হাজার ফিলিস্তিনি শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে চ্যানেল থার্টিনের এক অনুষ্ঠানের উপস্থাপক দুটি সম্ভাবনার কথা বললেন: হয় রজার ওয়াটার্সের মাথা বিগড়ে গেছে, অথবা তিনি মিথ্যাচারী। তারপর ওই উপস্থাপক দাবি করেন যে আসলে ওয়াটার্স দুটোই। কিন্তু মোটেও তা নন, আর তাঁর স্বপক্ষে দাঁড়ানোর জন্য আমাকেও তাঁর দরকার নেই।
[বিশ্ববিখ্যাত রকসংগীত গোষ্ঠী পিং ফ্লয়েডের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও গায়ক রজার ওয়াটার্স সম্প্রতি এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেন যে গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০–এর বেশি ইসরায়েলি নাগরিকের মৃত্যুর জন্য মূলত ইসরায়েল নিজেই দায়ী। তিনি এ–ও বলেন যে ফিলিস্তিনিরা স্বাধীনতার সপক্ষে যাঁরা লড়াই করে যাচ্ছেন, তাঁদের নৈতিক ও আইনি অধিকার কাছে দখলদারদের বিরুদ্ধে পাল্টা আঘাত হানার। এ ছাড়া রজার ওই দিন হামাস জঙ্গিদের দ্বারা কোনো নারী ধর্ষিত হয়েছেন, এর কোনো প্রমাণ নেই।]
এটা ঠিক যে ৭ অক্টোবর অস্বীকার করা হলো একটি অন্যায়। ওই দিন হাজার হাজার সাধারণ ও নিরীহ ইসরায়েলির বিরুদ্ধে ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, যদিও চুল্লিতে পুড়ে কোনো শিশু নিহত হয়নি।
তবে এরপর থেকে গাজায় ইসরায়েল যা করে আসছে, তাতে যে কেউই শোকাহত হতে পারে এবং হওয়া উচিতও। আর তা ৭ অক্টোবর নিয়ে ভিত্তিহীন কোনো বয়ানকে আমলে না নিয়েই।
নোভা উৎসব থেকে কিব্বুতজ, ওফাকিম থেকে কিব্বুতজ বেয়েরি পর্যন্ত যা ঘটেছে, তাতে যে কারও ইসরায়েলি ভুক্তভোগীদের প্রতি সমবেদনা জাগতে পারে এবং জাগা উচিতও। একই সঙ্গে তাদের তো গাজায় ইসরায়েলের অপরাধগুলোতেও মর্মাহত হওয়া উচিত এবং সেখানকার লাখ লাখ আক্রান্ত মানুষের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করা উচিত।
যেকোনো একটির বিস্তারিত বিবরণীর সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার বিষয়টি অবান্তর এ জন্য যে ৭ অক্টোবরের গোটা ছবিটা পরিষ্কার ও মর্মান্তিক।