বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: রোল মডেল বনাম মাঠ-বাস্তবতা
গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ ভারত সম্পর্কে একধরনের স্থিতাবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় থেকেই রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের ভালো বোঝাপড়া ছিল। বিশেষ করে কংগ্রেস দলের উচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যক্তিগত পর্যায়ে ঘনিষ্ঠতা ছিল বরাবর। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ইন্দিরা গান্ধীর এবং প্রণব মুখার্জির সঙ্গে শেখ হাসিনার সুসম্পর্ক সুবিদিত।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে, ভারতে তখন কংগ্রেস ক্ষমতাসীন। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে পরাজিত হয়ে কংগ্রেস ক্ষমতা হারায়। বিজয়ী হয় বিজেপি, নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন।
কংগ্রেসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সৌহার্দ্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে অনেকে ভেবেছিলেন, এবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারত সরকারের বিশেষ সম্পর্কের অবসান হবে। বস্তুত এ রকম ধারণা অনেকটাই ছিল অজ্ঞতাপ্রসূত। ভারতের জন্য আওয়ামী লীগ হচ্ছে একটি পরিচিত সংগঠন এবং ভারতের যেকোনো সরকারের জন্যই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকার থাকা সুবিধাজনক।
প্রথমে কংগ্রেস এবং পরে বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারতের সঙ্গে গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। দুই পক্ষেরই নেতাদের মুখ থেকে সম্পর্কের সোনালি সময় চলছে, সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে ইত্যাকার বাক্যাবলি নিঃসৃত হয়েছে নিয়মিত বিরতিতে। এর সঙ্গে আর যে বাক্যটি যোগ হয়েছে, তা হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ‘রোল মডেল’।
১৮ ডিসেম্বর দৈনিক ভোরের কাগজ ‘জহুর হোসেন চৌধুরী মেমোরিয়াল লেকচার ২০২৩’–এর আয়োজন করে স্থানীয় একটি হোটেলে। বক্তৃতার বিষয় ছিল ‘বাংলাদেশ-ভারত প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের রোল মডেল’। সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের মূল বক্তা ছিলেন দুজন—বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার (পরে ভারতের ডেপুটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজর) পঙ্কজ সরণ ও ভারতে বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার তারেক করিম।
পঙ্কজ শরণ তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, বাংলাদেশে কীভাবে নির্বাচন হবে, সেটা দেশের জনগণ ও গণতান্ত্রিক সংগঠনগুলোই ঠিক করবে। এ নিয়ে মূল্যায়নের অধিকার অন্য কাউকে দেওয়া হয়নি। ‘স্থিতিশীলতা’ বজায় রাখার ওপরও তিনি গুরুত্ব দেন।
- ট্যাগ:
- মতামত
- বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক