নির্বাচন কমিশন আস্থা অর্জন করতে পারবে তো?
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেমন হবে? আগের দুটি নির্বাচন নিয়ে যেমন রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছিল, পরের নির্বাচনও সংকটমুক্ত পরিবেশে হচ্ছে, সেটা বলা যাচ্ছে না। তবে ২০১৪ কিংবা ২০১৮ সালের মতো হুবহু এক অবস্থা ২০২৪-এর নির্বাচনে অবশ্যই নয়।
২০১৪ সালে বিএনপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় আওয়ামী লীগ ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিল। সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা বিনা ভোটে অর্জনের পর বাকি আসনগুলোর ভোট গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। তাছাড়া ওই নির্বাচন ভণ্ডুল করার জন্য বিএনপি-জামায়াত ব্যাপক সহিংসতা চালিয়েছিল। তা সত্ত্বেও নির্বাচন হয়েছিল। নিয়ম রক্ষার গণতন্ত্রের একটি বিশেষ ধরন নির্বাচনী রাজনীতিতে সংযোজিত হয়েছিল।
২০১৮ সালের নির্বাচনে সব দল অংশ নিলেও অসংখ্য ভোটার নিজের ভোট নিজে দিতে না পারলেও ‘নির্বাচন’ ঠিকই হয়েছিল। ওই নির্বাচন নিয়ে ক্ষোভ-অসন্তোষ যতই থাক, সরকার তার মেয়াদকাল ঠিকই শেষ করছে। আসন্ন নির্বাচনেও বিএনপিসহ কিছু দল অংশ নেবে না, এটা নিশ্চিত। তবে আগামী নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতার ধারা বহাল রাখা হবে না বলেই মনে হচ্ছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়া ঠেকাতে বিকল্প (ডামি) প্রার্থী রাখার পরামর্শ দিয়েছেন স্বয়ং আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গণভবনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের চাপ প্রয়োগ না করতেও আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের নির্দেশ দিয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) একটি বিতর্কমুক্ত নির্বাচন উপহার দিতে পারবে কিনা দেখার বিষয় সেটাই। ইসির ভূমিকা নিয়ে সব নির্বাচনেই কথা ওঠে।
নির্বাচনের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, আবার নির্বাচন কমিশনের বড় কর্তা হলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। আরও কয়জন নির্বাচন কমিশনার থাকলেও মূলত সিইসির ভূমিকাই হলো ইসির কাজকর্মে গুরুত্বপূর্ণ। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন থাকায় ইসি ও সিইসি নিয়ে আলোচনা এখন বেশ বাজার পাচ্ছে। এর মধ্যে সিইসি বা প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্য কমিশনারদের কিছু বক্তব্য নিয়ে পানি ঘোলা করার তালবেতালও চলছে। নির্বাচন কমিশনারদের একটু বাকসংযমী হওয়াই বোধ হয় ভালো।