খ্যাতির ক্ষুধা, তারকাবাজি ও অস্থির সময়
তারকাখ্যাতি পাওয়া অসম্ভব কঠিন ছিল একটা সময়ে। সাহিত্য, সংস্কৃতি কিংবা বিনোদন মাধ্যমে তারকার সংখ্যাও ছিল হাতেগোনা। তাঁদের দেখা পাওয়া ছিল অনেকটাই আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো। তাঁদের সম্পর্কে জানার সুযোগও ছিল খুব কম। তাঁদের সম্পর্কে জানতে হলে একটি কিংবা দুটি টেলিভিশন চ্যানেল আর হাতেগোনা কয়েকটি পত্রিকাই ছিল সম্বল। এখন সময় বদলেছে। আমাদের চারপাশে অনলাইন কিংবা অফলাইন মাধ্যমে তারকার অভাব নেই। এখন আমাদের জীবন তারকাখচিত।
আমরা চাই আর না চাই; আজকের মেটা-দুনিয়ায় তারকারা নিজেরাই হাজির হন আমাদের দোরগোড়ায়। ভার্চুয়াল জগতে নিয়মিত আলোচিত হওয়ার বাসনায় তাঁদের অনেকেই যে পরিমাণ সময়, অর্থ ও শ্রম ব্যয় করেন, তা সম্ভবত তাঁরা নিজেদের শিল্পীসত্তার বিকাশেও করেন না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিখ্যাত হওয়ার এই প্রবণতা বদলে দিয়েছে তারকার সংজ্ঞা। তারকারা আজকাল আর আগের মতো শুধু তাঁদের প্রতিভা কিংবা গুণ-মান দ্বারা বিখ্যাত হন না। তাঁরা বিখ্যাত হন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ফলোয়ার, ভিউ, শেয়ার, লাইক আর কমেন্টের মানদণ্ডে। তারকা হিসেবে সংজ্ঞায়িত হওয়ার নতুন কায়দা অনেক গুণ-মানহীন অর্বাচীনকেও তারকার আসনে বসিয়েছে। জনপ্রিয় হওয়ার নতুন এই সংজ্ঞাটি একদিকে যেমন সার্বিকভাবে তারকাদের গ্রহণযোগ্যতা কমিয়েছে; একই সঙ্গে তা আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহাকারীদের মধ্যেও ব্যক্তিত্বহীনতা, অস্থিরতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ছড়িয়ে দিয়েছে। ব্যতিক্রম যাঁরা, তাঁরাই কিন্তু দিনের শেষে মর্যাদা নিয়ে টিকে থাকেন।