নদীদূষণ ছড়িয়ে পড়েছে দেশের সর্বত্র
বছর বিশেক আগেও ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো বড় শহরেই কেবল নদীদূষণ দেখা গেলেও এখন এটি সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়েছে।
নতুন এক জরিপে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নদীগুলো প্রাকৃতিকভাবে পানিপ্রবাহ কম থাকা অবস্থায় চরম দূষণের শিকার হয়েছে।
ঢাকা, খুলনা, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল এবং চট্টগ্রাম বিভাগে নির্বাচিত ৫৬টি নদীতে বছরব্যাপী সমীক্ষাটি চালায় রিভারস অ্যান্ড ডেল্টা রিচার্স সেন্টার (আরডিআরসি)। এতে দেখা গেছে প্রতিটি নদীই দূষণের শিকার।
বেসরকারি সংস্থা আরডিআরসি নদী নিয়ে গবেষণা করে থাকে এবং এই গবেষণাটি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এই বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পরিচালিত হয়। বিভিন্ন পত্রপত্রিকার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে জরিপের জন্য নদীগুলো তারা বেছে নিয়েছিল।
সংস্থাটি গাজীপুরের একটি গবেষণাগারে প্রতিটি নদীর পানির পিএইচ লেভেল, পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন, ক্যামিকেল অক্সিজেন ডিমান্ড (সিওডি) এবং বায়োলজিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড (বিওডি) পরীক্ষা করে।
যেকোনো মিশ্রনে অক্সিজেনের পরিমাপ হয় সিওডি দিয়ে। রাসায়নিকভাবে কোনো জৈব পদার্থকে পুরোপুরি জারিত বা অক্সিডাইজড করতে প্রতি লিটার পানিতে ২০০ মিলিগ্রাম অক্সিজেন দ্রবীভূত থাকতে হয়। আর বিওডি হলো কোনো মিশ্রণে ব্যাক্টেরিয়াসহ বিভিন্ন অনুজীবের অক্সিজেন চাহিদা, যা প্রতি লিটারে ৫০মিলিগ্রাম। পিএইচ হল মিশ্রনের অম্লতা কতটা তার পরিমাপ, পানির ক্ষেত্রে যা আদর্শভাবে ৬-৯ এর মধ্যে থাকা উচিত।
আরডিআরসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজাজ বলেন, 'আমরা সাধারণ ধারণা দেশের সবচেয়ে দূষিত নদী হলো বুড়িগঙ্গা। তবে আমরা জরিপে দেখেছি ঢাকা বিভাগেই বুড়িগঙ্গার চেয়েও দূষিত নদী আরও আছে'।
'আমরা আরও যা দেখেছি ৫৬টি নদীর সবগুলোতেই প্লাস্টিক এবং পলিথিন দূষণ রয়েছে, যা সত্যিই উদ্বেগের,' বলেন তিনি।
গবেষণার ৫৬টি নদীর ১৯টি ঢাকা বিভাগের যার সবগুলোই মারাত্মক দূষণের শিকার।
এছাড়াও জরিপে খুলনার ৭টি, সিলেটের ৫টি, চট্টগ্রামের ৮টি, রাজশাহীর ২টি, বরিশালের ১১টি ও রংপুরের ৪টি নদীর দূষণমাত্রা দেখা হয়।