সুস্থধারার রাজনীতির সন্ধানে
রাজধানী ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র রাজনীতিতে যে ব্যাপক সংঘাত-সহিংসতার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল, সেই অবস্থা থেকে আপাতত রেহাই পাওয়া গেছে। বড় কোনো ধরনের সংঘাত-সহিংসতা ছাড়াই মহাসমাবেশ শেষ হয়েছে।
কিন্তু এই সমাবেশকে ঘিরে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে বৈরিতা ও দূরত্ব আরও বেড়েছে। এটা ভবিষ্যতের জন্য মোটেও সুখবর নয়। দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের দেশে একটা রাজনৈতিক অচলাবস্থা চলছে। ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের মধ্যে ন্যূনতম সৌহার্দ্য-সদ্ভাব নেই। একে অপরকে জব্দ করার মিশন নিয়ে তারা পথ চলছেন। উভয় দলের কাছে ক্ষমতাই মুখ্য। ক্ষমতা দখল ও ক্ষমতায় থাকার বাইরে তাদের আর কোনো ভাবনা নেই। যারা ক্ষমতায় আছেন, তারা আর কী কী করবেন, এমন কোনো রূপরেখা যেমন নেই, যারা ক্ষমতায় যেতে চান, ক্ষমতায় গেলে তারা কী করবেন তারও কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই।
ক্ষমতায় যাওয়া কিংবা ক্ষমতায় যেতে পারলে সেটি যে কোনো ভাবে আগলে রাখাÑ এই বৃত্তের বাইরে দেশের রাজনীতির আপাতত কোনো গন্তব্য নেই। অথচ দেশের সার্বিক আর্থিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি একটু একটু করে খারাপ হচ্ছে। সুশাসনের অভাবে প্রশাসন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। কোথাও কোনো সুখবর নেই।
বক্তৃতা-বিবৃতি, বেফাঁস মন্তব্য আর নিজেদের মধ্যে খেয়োখেয়ির মধ্যেই আটকে আছে দেশের রাজনীতি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আর্থিক উন্নতি, সুশাসন প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলো নীরব ভূমিকা পালন করছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা গেলেও তা নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দল কোনো ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেনি। বিএনপির রাজনীতি খালেদা জিয়ার মুক্তি আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি আর হুমকির মধ্যেই আটকে আছে। ফলে পরিবর্তনের কোনো দিশা কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
- ট্যাগ:
- মতামত
- রাজনৈতিক সহিংসতা
- রাজনৈতিক পরিবেশ