‘বিপদে আমি না যেন করি ভয়…’
বিশ্ব এক মহামন্দার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। করোনার ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এই মন্দাকে অবশ্যম্ভাবী করে তুলেছে। এই মন্দা ঠেকানোর একমাত্র উপায় এই মুহূর্তে যুদ্ধ বন্ধ করা। বিশ্ববিবেক সবসময়ই যুদ্ধের বিপক্ষে। জি-২০ বৈঠকে বিশ্বনেতৃত্বও যুদ্ধ বন্ধের ডাক দিয়েছেন। ডাক দেওয়া সহজ, কিন্তু যুদ্ধ বন্ধ করা কঠিন। নয় মাসে পড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের কোনও লক্ষণ নেই। কোনও একপক্ষ হার শিকার করবে তেমন ইঙ্গিতও মিলছে না। যুদ্ধ প্রলম্বিত হলে ২০২৩ সালে গোটা বিশ্বকেই কঠিন এক সংকটে পড়তে হবে। গোটা বিশ্বই একটা গ্রামের মতো। এই গ্রামের কোথাও যুদ্ধ লাগলে তার ঢেউ লাগে সবখানে। বাংলাদেশও এই বৈশ্বিক গ্রামের বাইরে নয়। তাই মন্দার ঢেউ লাগছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও। আর ব্যাপারটা এমন অবশ্যম্ভাবী যে এটা লুকিয়ে রাখারও বিষয় নয়। কেউ সেই চেষ্টাও করেনি। বরং প্রধানমন্ত্রী নিজে সবার আগে সম্ভাব্য মন্দার কথা বলেছেন। বারবার তিনি মন্দা মোকাবিলায় সাশ্রয়ের কথা বলছেন। মন্দা মোকাবিলায় সরকারের সতর্কতার পাশাপাশি জনগণকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন।
মন্দার ঝাপটা বিশ্বের সব দেশেই লাগবে। প্রশ্ন হলো, আপনার অর্থনীতি কতটা সবল, সেই ঝাপটা সামাল দেওয়ার মতো সক্ষমতা আছে কিনা? ঝড় যত বড়ই হোক, সব ঘর কিন্তু তাতে ভেঙে পড়ে না। যার ঘর যত শক্ত ভিতের ওপর গড়া, তা তত টেকসই। বাংলাদেশের অর্থনীতি একদম উন্নত বিশ্বের মতো সবল হয়তো নয়, তবে মন্দার ঝড়ে উড়ে যাওয়ার মতো দুর্বলও নয়। হয়তো কিছু দিন দরজা-জানালায় খিল এঁটে বসে থাকতে হবে। কিন্তু উড়ে যাওয়ার ভয় নেই। ঝড়ের পূর্বাভাস যেহেতু আমরা পেয়েছি, তাই যতটুকু সময় আছে চেষ্টা করতে হবে ঘরটা আরও কত মজবুত করা যায়। শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের মতো দুর্বল অর্থনীতি কিন্তু ঝড়ের প্রথম ঝাপটাতেই উড়ে গেছে।