ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে ইরান
মানুষ নামেই স্বাধীন, কিন্তু বাস্তবতা হলো প্রতি পদে আমরা পরাধীন। নানাভাবে আমরা বন্দি। ব্যক্তি সম্পর্কই বলুন বা সামাজিক বিধিনিষেধই বলুন, আমাদের নানা বাঁধন। নানা লাল চোখ সব সময় আপনাকে পাহারা দিচ্ছে। আর এখন তো কে কী খাবে, কী পরবে, রাজনৈতিক সামাজিক ব্যক্তিগত জীবনে কে কার সঙ্গে মিশবে, কী বিশ্বাস করবে, তা নিয়েও আসছে নানা ফতোয়া। বিশেষত ধর্মের নামে বেশ কিছু রাষ্ট্রে নাগরিকদের ওপর এমন জোর-জবরদস্তি চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে পোশাকের নামে জুলুম চরম আকার ধারণ করেছে। আর রাষ্ট্রীয় এই ফতোয়ার বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে সে দেশের সচেতন নাগরিকরা। ফলে দেশটিতে সৃষ্টি হয়েছে এক অরাজক পরিস্থিতি। হিজাব না পরার অপরাধে সেখানে প্রাণ গিয়েছে এক তরুণীর।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর পরিবারের সবার সঙ্গে গাড়িতে ইরানের কুর্দিস্তান থেকে রাজধানী তেহরানে এক আত্মীয়ের বাড়ি আসছিলেন ২২ বছর বয়সী মাহশা আমিনি। সেই সময়ে তাদের গাড়ি আটকায় ইরানের নীতিপুলিশ। ইসলামিক রীতি মেনে নারীরা পোশাক পরছেন কি না, তা দেখাই এই নীতিপুলিশদের কাজ। সেদিন গাড়িতে মাহশা হিজাব পরেননি বলে তাদের অভিযোগ। তাকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে আটক করে পুলিশ। থানায় তার রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়। পুলিশের দাবি, আটক হওয়া অন্য নারীদের সঙ্গে অপেক্ষা করার সময়ে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন মাহশা আমিনি। তাতেই মৃত্যু হয়েছে তার। কিন্তু পরিবারের অভিযোগ, পুলিশি নির্যাতনে মাহশার মৃত্যু ঘটেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে প্রথমে পথে নামেন সে দেশের নারী সমাজ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে এই প্রতিবাদ দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে। নিজেদের চুল কেটে, হিজাব জ্বালিয়ে দিয়ে প্রতিবাদে সরব হতে থাকেন নারীরা। তারা পুলিশের নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।
- ট্যাগ:
- মতামত
- ভূরাজনীতি
- ভূরাজনৈতিক অবস্থান