বিশ্বকে কোন পথে ঠেলে দিচ্ছেন বাইডেন

কালের কণ্ঠ গাজীউল হাসান খান প্রকাশিত: ২০ জুলাই ২০২২, ১০:৫৪

শুধু ইরানের সম্ভাব্য পারমাণবিক বোমা তৈরি ঠেকাতেই নয়, মধ্যপ্রাচ্যে চীন ও রাশিয়ার উত্তরোত্তর প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধির রাশ টেনে ধরার বৃহত্তর লক্ষ্য নিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তেল আবিব ও বিশেষ করে জেদ্দায় ছুটে গিয়েছিলেন। তবে এর পেছনে ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের যথেষ্ট কূটনৈতিক তদবির পরিলক্ষিত হয়েছে তার বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট দিক থেকে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামল থেকেই যুক্তরাষ্ট্র সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আফগানিস্তান, ইরাক ও সিরিয়া থেকে তার সাম্রাজ্যবাদী থাবা গুটিয়ে নেওয়ার। কিন্তু সেই সুযোগে সেখানে ঢুকে পড়ে ইরান, রাশিয়া, তুরস্কসহ এক বৃহত্তর পরিকল্পনা নিয়ে চীন। সিরিয়ায় ইরান ও তুরস্কের নিজস্ব আঞ্চলিক নিরাপত্তাসংক্রান্ত সংকট তীব্র হয়ে উঠলেও রাশিয়া ও চীনের মূল উদ্দেশ্য ছিল মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করা। এতে তুরস্ক ছাড়া ইরানের নীরব সম্মতি ক্রমে ক্রমে অত্যন্ত পরিষ্কার হয়ে ওঠে। ইরানের মূল লক্ষ্য ছিল মধ্যপ্রাচ্যের স্বার্থ ও ভূ-রাজনৈতিক পরিমণ্ডল থেকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের আজ্ঞাবহ ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের সামরিক প্রভাব রোধ এবং ফিলিস্তিনসহ বিভিন্ন আরব ভূখণ্ড মুক্ত করা।


ষড়যন্ত্র কিংবা চক্রান্তের ক্ষেত্রে চরম কৌশলী ইসরায়েলের দীর্ঘ কূটনৈতিক তৎপরতার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শেষ পর্যন্ত অনুধাবন করতে সক্ষম হন যে মধ্যপ্রাচ্যে তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি বলতে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকছে না। সেই অবস্থায় প্রথমেই চরম সংকটের মুখে পড়বে আরব রাষ্ট্রবেষ্টিত ইসরায়েলের অস্তিত্ব। ইউক্রেনে ক্রমে ক্রমে সংঘাত বিস্তৃত হলে সিরিয়ার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি থেকে রাশিয়া তার সৈন্যবাহিনী ও সমরাস্ত্র সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় এবং সেই অবস্থায় ইরানের ওপর সম্পূর্ণ বিষয়টি দেখাশোনার দায়িত্ব অর্পিত হয়। এতে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের সহজ টার্গেটে পরিণত হয় ইসরায়েল। তা ছাড়া ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তিতে ফিরে আসতে যুক্তরাষ্ট্রের দোদুল্যমানতার কারণে পশ্চিমাজগতে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে গেছে। ইসরায়েল সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে ইরানের সম্ভাব্য বোমা তৈরির বিরুদ্ধে প্রায় সমগ্র আরববিশ্বকেই ঐক্যবদ্ধ করতে থাকে। সে ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকেনি সৌদি আরব, আমিরাতসহ অন্যরা।


উপরোক্ত মোক্ষম পরিস্থিতিতে কৌশলী ইসরায়েলি নেতারা পড়ন্ত ও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক ‘প্যাকেজ ডিল’ উপস্থাপন করেন। আর তা হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক, অর্থনৈতিক ও ক্ষমতার প্রভাববলয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ শক্তি নিয়ে আবার ফিরে আসা, ইরানের সম্ভাব্য পারমাণবিক বোমা তৈরি বন্ধ করা, আরব রাজতন্ত্রের নিরাপত্তা বিধান করা এবং শক্তিশালী সামরিক জোট গঠন করা। এর পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা এবং এ অঞ্চল থেকে পশ্চিমাজগতে সত্বর জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা। গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলভুক্ত (জিসিসি) ছয়টি আরব রাষ্ট্র এবং মিসর, জর্দান ও ইরাককে নিয়ে বিশেষত ইরানবিরোধী একটি সামরিক জোট গঠন করার তাগিদ ছিল জো বাইডেনের সফরের পেছনে। শুধু তা-ই নয়, এই জোটে অত্যন্ত কৌশলে অনারব ও অমুসলিম রাষ্ট্র ইসরায়েলকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়াস রয়েছে সর্বাঙ্গীণভাবে। কারণ মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলই একমাত্র রাষ্ট্র, যাদের কাছে রয়েছে উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন সমরাস্ত্র এবং সামরিক শক্তিতে যারা এ অঞ্চলে অদ্বিতীয়। আরব রাষ্ট্রগুলোর সেই ক্ষমতা নেই। তাদের নিরাপত্তা বিধান করবে ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে আরবদের ইরানের বোমার বিরুদ্ধে সে ধরনেরই একটি ‘ট্যাবলেট’ গিলিয়েছে ইসরায়েল। বিশেষভাবে ইরান এবং পক্ষান্তরে রাশিয়া ও চীনের বিরুদ্ধে ‘মধ্যপ্রাচ্যের ন্যাটোর’ সমতুল্য একটি সামরিক জোট গঠনের চিন্তা-ভাবনা চলছে, যার পৃষ্ঠপোষকতা করবে যুক্তরাষ্ট্র। সেই জোটে সামগ্রিকভাবে সামরিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করবে ইসরায়েল। তারাই অন্যদের নিয়ে সেই প্রস্তাবিত সামরিক জোটের রণনীতি ও রণকৌশল নির্ধারণ করবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও