আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশের সমান্তরাল পথচলা: ঐতিহাসিক পাঠপর্যালোচনা
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের অন্যান্য দলগুলোর মতো গতানুগতিক কোনো দল নয়। আওয়ামী লীগ অনেক কারণেই অন্যদের থেকে পুরোপুরি আলাদা এবং একেবারেই অনন্য। প্রথমত, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার দুই দশকের বেশি সময় আগে প্রথম বিরোধী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই আওয়ামী লীগ। দ্বিতীয়ত, এই দল প্রতিষ্ঠার প্রধান লক্ষ্যই ছিল বাঙালি জাতির অধিকার ও মুক্তি অর্জন। তৃতীয়ত, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পাকিস্তানিদের জেল–জুলুম–নির্যাতনের মধ্য দিয়েই দেশের তৃণমূল পর্যন্ত বিকশিত হয়েছে এই দল। চতুর্থত, বাঙালি জাতিকে একটি মানবিক কল্যাণরাষ্ট্র উপহার দেওয়াই ছিল এই দলের মূল উদ্দেশ্য। পঞ্চমত, প্রান্তিক মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি চেষ্টা করার কারণে স্বাধীনতার পরেও দুই দশকের অধিক সময় নির্যাতনের শিকার হয়েছে এই দলের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগের রক্তে বারবার রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে, কিন্তু কখনো এই দল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়নি। তাই বঙ্গবন্ধুর হাতে প্রতিষ্ঠিত এই দলটিকে নিয়েই আজ বঙ্গবন্ধুকন্যা বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পেরেছেন।
তাহলে আসুন, আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশের যুগলযাত্রা সম্পর্কে সংক্ষেপে একবার ইতিহাসে চোখ ফেলি। আসুন জেনে নেই ১৯৪৭ সালের আগে অখণ্ড ভারতবর্ষের সময়কার একটি ছোট্ট তথ্য, সেই সময় অখণ্ড বাংলার অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কলকাতার ইসলামিয়া কলেজের এক ছাত্রনেতার কথা। তরুণ শেখ মুজিবুর রহমান দেশ ভাগের আগেই ইসলামিয়া কলেজ ছাত্র সংসদের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন। অখণ্ড বাংলার শেষ মুখ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর স্নেহধন্য ছাত্রনেতা হিসেবে দেশভাগের আগেই জনপ্রিয় তরুণ নেতায় পরিণত হয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা মোকাবিলা এবং প্রকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় কাজ করেছেন তৎকালীন পূর্ব–বাংলা থেকে শুরু করে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে। যারফলে দেশভাগের পর ঢাকায় এসে খুব দ্রুতই সংগঠন গুছিয়ে নিতে পেরেছিলেন তিনি। তার এই সাংগঠনিক তৎপরতা নতুন বা আকস্মিক কিছু নয়। আসুন এবার মূল প্রসঙ্গ থেকে একবার ঘুরে আসি। যার শুরুটা ছিল দেশভাগ দিয়ে।