সামিয়ার বাবা কেন মেয়ে হত্যার বিচার চান না

প্রথম আলো মারুফ মল্লিক প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০২২, ১৩:১২

কার শাস্তি চাইব? বিচার নাই, বিচার কার কাছে চাইব—কথাগুলো সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত সামিয়া আফরান জামালের বাবা জামাল উদ্দিনের। মেয়ে হত্যার বিচার চান না অসহায় বাবা। কতটা কষ্ট ও হতাশা বুকে চাপা দিয়ে একজন বাবা তাঁর মেয়ে হত্যার বিচার চাইতে অপারগতা প্রকাশ করেন। জামাল উদ্দিনের কোথাও বিচার চাওয়ার জায়গা নেই। কোনো সুস্থ-স্বাভাবিক রাষ্ট্রে এমনটা হওয়ার কথা নয়।


অস্ত্রের ঝনঝনানি, গুম, খুন, অপহরণ, নিরীহ মানুষের মৃত্যু—এসব ঘটনা সাধারণত লাতিন আমেরিকার মাফিয়া নিয়ন্ত্রিত কিছু দেশে দেখা যায়। আমরা দেখি, সেখানে অপরাধের কোনো বিচার হয় না। মাফিয়ারা সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও ভাবনার বিষয়, আমরা কি সে অবস্থার দিকে এগোচ্ছি?  


এলাকা নিয়ন্ত্রণ, মাদক-বাণিজ্য ও চাঁদাবাজি করতে গিয়ে মাফিয়ারা হরহামেশা খুনোখুনিতে লিপ্ত হয়। লাতিন চলচ্চিত্রে একটি চিত্র প্রায়ই দেখা যায়—বিশাল বড় দাগি মাফিয়া শহরের ব্যস্ততম এলাকা দিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ রাস্তার মাঝখানে ফল বিক্রেতার ভ্যান এসে অযথাই আটকে দিল মাফিয়ার গাড়ি বা কোনো গলিতে যানজট। এর মধ্যেই প্রতিপক্ষের মুহুর্মুহু গুলিতে মাফিয়ার জীবনাবসান। হামলার পর ফাঁকা গুলি ছুড়ে আততায়ী দলের মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থল ত্যাগ। সবকিছু হয়ে যাওয়ার পর পুলিশ আসে। এই পুলিশের অনেকেই বিবাদমান মাফিয়াদের চর হিসেবে কাজ করে। এ কারণে এসব হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার হয় না। মারিজুয়ানা, কোকেন, হেরোইন, বনজ সম্পদ পাচারসহ নানা কারণেই লাতিন মাফিয়াদের নানা দল-উপদলের মধ্যে সংঘাত-ঠোকাঠুকি চলতেই থাকে। হত্যা-অপহরণ সেখানে নিত্যদিনের ঘটনা।


শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু হত্যায় যেন লাতিন সেসব চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যের হুবহু বাস্তবায়ন। টিপু নিজে মতিঝিল এলাকার কুখ্যাত গডফাদার হিসেবে পরিচিত। প্রকাশ্যে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ঠিকাদারির ব্যবসা থাকলেও আড়ালে এলাকা নিয়ন্ত্রণের রাজনীতি ছিল। এলাকার দখল বজায় রাখা নিয়ে প্রতিপক্ষের গডফাদারদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল। এ দ্বন্দ্বের ফলাফল হচ্ছে টিপু হত্যা। গডফাদারদের খুনোখুনির মধ্যে পড়ে অস্ত্রধারীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে টিপুকে বহনকারী মাইক্রোবাসের পাশে রিকশায় বসে থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান জামালের জীবনপ্রদীপ নিভে গেল চিরতরে। একটি সম্ভাবনায় প্রাণের কী করুন সমাপ্তি! একটি পরিবারের স্বপ্নের, আশা-ভরসার অকাল-অবসান।


এই খুনোখুনির ঘটনার তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সামিয়ার বাবা বিচার না চাওয়া। সামিয়ার বাবা সবার সামনে দেশের প্রকৃত পরিস্থিতিকে আরও একবার তুলে ধরলেন। কার কাছে বিচার চাইবেন সামিয়ার বাবা, জানেন না। কারণ তিনি মনে করেন, দেশে ন্যায়বিচার নেই। বিচার চাইলে পাবেন তো না-ই, উল্টো নানা হয়রানির শঙ্কা থাকে। তাই বুকে পাথর চেপে তিনি মেয়ের মৃত্যুশোক বয়ে যাবেন। এভাবেই শোক বয়ে যাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি বা দিনদুপুরে পুরান ঢাকায় খুন হওয়া দরজি বিশ্বজিতের স্বজনেরা। সাংবাদিক সাগর-রুনির হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল ৭৯তম বারের মতো পিছিয়েছে। রুনির মা গত হয়েছেন কোনো বিচার না দেখেই।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও