বিশ্ব অর্থনীতিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব ও বাংলাদেশ
যুদ্ধে জড়ানোর ভালো সময় বলতে কিছু নেই। তবুও বর্তমান সময়টা যে একেবারেই বৈরী, সেকথা বলার অপেক্ষা রাখে না। চলমান অতিমারীর কারণে বিশ্ব এখন একটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতি একেবারেই পর্যুদস্ত। উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থা প্রায় পুরোপুরি অচল ছিল এ সময়ে। অগণিত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে জাতীয় অর্থনীতিতে। ২০২০ সালেই বিশ্বের মোট দেশজ উৎপাদন ৩ দশমিক ৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। প্রাকৃতিক এ সংকট কাটিয়ে বিশ্ব যখন মন্থরগতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ সেই গতি আরো মন্থর করবে।
ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে আদর্শিক দ্বন্দ্ব অনেক পুরনো। রাশিয়া চায় ইউক্রেনের সরকার রাশিয়ার ছায়া হয়ে থাকুক। অন্যদিকে ইউক্রেন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়ার আদর্শ থেকে দূরে থেকে পশ্চিমা ধাঁচে নিজেকে গড়তে চায়। এরই মধ্যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যেন কোমর বেঁধে নেমেছেন ন্যাটোয় যোগ দেয়ার জন্য। ইউক্রেন যদি এ লক্ষ্যে সফল হয়, সোভিয়েত-পরবর্তী রাশিয়ার পরাশক্তি হয়ে ওঠার যে খায়েশ তা হালে পানি পাবে না। এমনিতেই ন্যাটো পূর্ব দিকে বিস্তৃত হয়ে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আলাদা হওয়া অনেক স্বাধীন রাষ্ট্রকে সদস্য করেছে। ন্যাটোর এ বিস্তার রাশিয়ার কাছে যারপরনাই অপছন্দ। নিজের দরজার সামনে ন্যাটো কড়া নাড়বে, এটা রাশিয়া চায় না। কারণ এতে রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে বলে দেশটি অনেক দিন থেকেই বলে আসছে। তাই ইউক্রেনের ন্যাটোয় যোগ দেয়া রাশিয়া যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করবে বলেই বিজ্ঞ মহলের ধারণা।