সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, সহিংসতা ও বর্বরতার শেষ কোথায়?
সাতচল্লিশে দেশভাগের মর্মন্তুদ বেদনা নিয়ে লেখা উর্দুভাষী ঔপন্যাসিক কৃষণ চন্দরের দাঙ্গার গল্প 'পেশোয়ার এক্সপ্রেস'র ভূমিকায় উর্দু কবি আলি সরদার জাফরি লিখেছিলেন, 'ভারত ও পাকিস্তানে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধের আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এই আগুনের লেলিহান শিখায় মানুষ, ঘরবাড়ি আর পাঠাগারের পাশাপাশি আমাদের জীবন, স্বাধীনতা, সভ্যতা এবং কৃষ্টি পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। কয়েক মাসের ব্যবধানে এর তীব্রতা কিছুটা কমলেও এখনো সম্পূর্ণ কমেনি। ছাইয়ের নিচে আগুন এখনো চাপা পড়ে আছে, যা একটু ফুঁ দিলেই আবার জ্বলে উঠতে পারে। এই ছাইয়ে বাতাস দেওয়ার লোকেরও অভাব নেই।'
ভারত বিভক্তির ২৪ বছর পর দ্বিজাতি তত্ত্বকে ভুল প্রমাণ করে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করে জন্ম হয় সেক্যুলার স্বাধীন বাংলাদেশের। অত্যন্ত আধুনিক, প্রগতিশীল, সাম্য, সমতা, সকলের জন্য ন্যায়বিচার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার রাষ্ট্রদর্শন নিয়ে যাত্রা শুরু করে দেশটি। পঁচাত্তরে সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়েই শুরু হয় বাংলাদেশের উল্টো পথে যাত্রা, যা আজও থামেনি। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও কিছু মানুষ সাম্প্রদায়িক পাকিস্তানি রাষ্ট্রদর্শন ও চিন্তা-চেতনা থেকে মুক্ত হতে পারেনি।