জুম্’আর খুতবা

দৈনিক আজাদী সম্পাদকীয় প্রকাশিত: ২১ আগস্ট ২০২০, ০৭:২২

.tdi_2_f23.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_2_f23.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});ইসলামে মহররম মাসের গুরুত্বসমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি সূর্য ও চন্দ্রকে বছর ও হিসাব গণনার জন্য সৃজন করেছেন। যিনি সম্মানিত মাস দ্বারা বছরের সূচনা করেছেন, যিনি নভোমন্ডল ভূমন্ডল ও এতদোভয়ের মধ্যে সবকিছু মাত্র ছয়দিনে সৃষ্টি করেছেন। তিনি বারটি মাস সৃষ্টি করেছেন, তন্মধ্যে চারটি মাস হারাম বা সম্মানিত তা হলো, মহররম, জিলক্বদ, জিলহজ্ব ও রজব। দরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক, সৃষ্টিকুলের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মানিত রসূলের প্রতি, যাঁকে আল্লাহ তা’য়ালা সমগ্র জগৎবাসীর জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছেন। তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবাদের প্রতি করুণাধারা বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই। তিনি একক, অদ্বিতীয় তাঁর কোন অংশীদার নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয় মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রিয় বান্দা ও সম্মানিত রসূল। হে সম্মানিত মুমীন শ্রোতামন্ডলী: আপনারা অবগত আছেন যে, হাদীসে রসূলের আলোকে নিশ্চয় এই মাস আল্লাহর মাস মহররম, হিজরি সনের প্রথম মাস, এটাকে আল্লাহর মাস নবীদের মাস বলা হয়। এ মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে বহু হাদীস শরীফ বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহর পূণ্যাত্ন নেককার বান্দাগন এ মাসকে মর্যাদা দিয়েছেন। সে ব্যক্তি কতই সৌভাগ্যবান যিনি পূণ্যময় আমলের মাধ্যমে বিগত বছরকে অতিবাহিত করেছেন। মহান আল্লাহ তা’য়ালা এরশাদ করেন, “হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। প্রত্যেক ব্যক্তির চিন্তা করা উচিৎ আগামীকালের (পরকালের) জন্য সে কি প্রেরণ করেছে। আমাদের উচিৎ আল্লাহ হিসাব গ্রহনের পূর্বে নিজেরা নিজেদের হিসাব করে নেয়া। জেনে রাখুন সৌভাগ্যবান তিনিই যিনি নিজের হিসাব নিজেই নিয়েছেন। যেমন প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, (আল্লাহ কর্তৃক) তোমাদের হিসাব নেয়ার পূর্বেই তোমরা নিজেদের হিসাব করে নাও তোমাদের আমলের ওজন দেয়ার পূর্বেই নিজেরাই ওজন করে নাও। (মুসনাদে আহমদ, খন্ড ৪র্থ, পৃ-১২৪) প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, তোমরা পাঁচটি বিষয়কে পাঁচটি বিষয়ের পূর্বে মূল্যবান মনে করো। ১. বার্ধক্যের পূর্বে যৌবন কালকে, ২. রোগ ব্যাধির পূর্বে সুস্থতাকে, ৩. দারিদ্রতা আসার পূর্বে তোমার সচ্ছলতাকে, ৪. তোমরা কর্মব্যস্ততার পূর্বে অবসর সময়কে, ৫. তোমার মৃত্যুর পূর্বে তোমার জীবনকে। (তিরমিযী শরীফ) হিজরি বর্ষের প্রথম মাস মহররম: ইসলামী হিজরি সনের প্রথম মাস মহররম। আল্লাহর মাস ও সম্মানিত নবী রাসূলগণের মাস হিসেবে অসংখ্য ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর স্মারক এ পবিত্র মাস। আল কুরআনের আলোকে মহররম মাসের গুরুত্ব: মহান আল্লাহ তা’য়ালা মহা গ্রন্থ আল কুরআনে এরশাদ করেছেন, “নিশ্চয় আল্লাহর নিকট আল্লাহর কিতাবে গণনার মাস বারটি আসমান সমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টির দিন থেকে তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। (সূরা: তাওবা, আয়াত: ৩৬) আয়াতের ব্যাখ্যায় বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (র.) গুনীয়াতুত তালেবীন কিতাবে উল্লেখ করেছেন চারটি সম্মানিত মাসের প্রথম তিনটি ধারাবাহিক বিন্যস্ত জিলক্বদ, জিলহজ্ব, মহররম, চতুর্থ মাস হচ্ছে জমাদিউল উলা ও শাবানের মধ্যবর্তী মাস রজব। পশ্চিমাকাশে নবচন্দ্র দর্শনের মাধ্যমে চান্দ্র মাসের তারিখ গণনার যাত্রা সূচনা হয়। আমিরুল মুমেনীন ইসলামী জগতের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব রাদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুর খিলাফত কালে ইসলামী হিজরি সনের সূচনা হয়। তিনিই সর্ব প্রথম মুসলমানদের জন্য পৃথক ও স্বতন্ত্র চান্দ্রমাসের পঞ্জিকা প্রবর্তন করেন, হিজরি সন মুসলিম বিশ্বে মহিমান্বিত ও মর্যাদাপূর্ণ ইসলামী সন। ৬২২ খ্রিস্টাব্দে নবীজির হিজরতের স্মৃতিধারণ করে ৬৩৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭ বৎসর পর হিজরি সন চালু হয়। হাদীস শরীফের আলোকে মহররম মাসে রোজা রাখার ফজিলত: মহররম মাসে রোজা পালনে অসংখ্য ফজিলত রয়েছে হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, রমজান মাসের পর সর্বোত্তম রোজা হল আল্লাহর মাস মহররম মাসের রোজা। আর ফরজ নামাজের পর সর্বোত্তম নামায হল রাতের নামায। (মুসলিম শরীফ) হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, তোমরা ৯ ও ১০ মহররম রোজা পালন করে ইয়াহুদীদের বিরোধীতা কর। (তিরমিযী শরীফ) হে মুমীনগণ, আপনারা এ বরকতময় মাসে সাধ্যনুযায়ী শরীয়ত সম্মত পূণ্যময় আমল করুন। কুফর, শির্ক, বিদয়াত, মিথ্যাচার, গীবত, চোগলখুরী, এবং সকল প্রকার মন্দ অপকর্ম থেকে বিরত থাকুন। রাফেজী ও শিয়া সম্প্রদায়ের মতো নবীজির পরিবার বর্গের প্রতি অশ্রদ্ধা ও অপমানমূলক কথাবার্তা ও আমল করা থেকে বিরত থাকুন। আল্লাহকে ভালবাসুন। তাঁর প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ভালবাসা প্রদর্শন করুন। আহলে বায়াত রসূলের প্রতি ভালবাসা অন্তরে ধারণ করুন। কেননা নবীজির পরিবারবর্গের প্রতি ভালবাসা প্রদর্শন করা ঈমানের আলামত। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, হযরত আবু যর রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু হতে বর্ণিত তিনি পবিত্র কাবা ঘরের দরজা ধরে বলেন, আমি প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি তোমাদের মধ্যে আমার আহলে বায়তের দৃষ্টান্ত হচ্ছে হযরত নুহ্‌ আলাইহিস সালাম এর কিস্তির ন্যায়, যে এতে আরোহণ করেছে সে মুক্তি পেয়েছে, যে এটা হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে সে ধ্বংস হয়েছে। (মিশকাত শরীফ) আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের আপনাদের সকলকে কুরআনুল করীমের বরকত রহমত হেদায়ত ও নুর দান করুন। আমি বিতাড়িত শয়তানের প্রতারণা হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। শিয়াদের অনুসরণ ও অনুকরণ থেকে বিরত থাকুন: পবিত্র মহররম মাসকে কেন্দ্র করে ইসলামের নামে পথভ্রষ্ট সম্প্রদায় শিয়ারা বিভিন্ন প্রকার অনৈসলামিক কর্মকান্ড করে থাকে। যা কখনো ইসলাম অনুমোদন ও সমর্থন করে না। তাজিয়া মিছিল করা, আতশবাজি করা, নারী পুরুষ একত্রে মিলিত হয়ে নিজেদের শরীর রক্তাক্ত করে বুক চাপড়িয়ে মাতম করা। এসব অপকর্ম আহলে বায়তে রাসূলের মধ্যমনি সৈয়্যদুশ শোহাদা হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) সহ শোহাদায়ে কারবালার পবিত্র রক্তের সাথে বেঈমানী করার নামান্তর। এ ছাড়াও লাল, কালো ও সবুজ রঙের কাপড় পরিধান করে শোক মিছিল আয়োজন করা। এ জাতীয় শরীয়ত বিরোধী কর্মসূচিতে সহযোগিতা করা, অংশগ্রহণ করা, শিয়া রাফেজীদের কুপ্রথা, যা ইসলামে সম্পূর্ণরূপে নাজায়েজ ও হারাম। [ইরশাদাতে আ’লা হযরত, কৃত: ইমাম আহমদ রেযা (র.)] মুমীন মুসলমানদের উচিৎ মহররম মাসে নফল রোজা রাখা, নফল ইবাদত, কুরআন তিলাওয়াত ও শোহাদায়ে কারবালা তথা আহলে বায়তে রসূলের স্মরণে কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক আলোচনা করা, শোহাদায়ে কেরামের জীবনাদর্শ অনুসরণে নিজেদের জীবনকে আলোকিত করা, সকল প্রকার অন্যায় অবিচার পাপাচার মিথ্যাচার, শটতা, কপটতা, জুলুম নির্যাতন নিপীড়ন ও নিস্পেষণের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলা মহররম তথা কারবালার প্রকৃত আদর্শ ও শিক্ষা। আল্লাহ আমাদের আপনাদেরকে কুরআনুল করীমের কল্যাণ ও জ্ঞানগর্ভ নসীহত দ্বারা উপকৃত করুন। তিনি মহান দানশীল রাজাধিরাজ, পূণ্যময় অনুগ্রহশীল ও দয়ালু। আমিন। লেখক : অধ্যক্ষ, মাদরাসা-এ তৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া ফাযিল (ডিগ্রী), বন্দর, চট্টগ্রাম। খতীব, কদম মোবারক শাহী জামে মসজিদ।.tdi_3_d1d.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_3_d1d.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও