
ছবি সংগৃহীত
সোরিয়াসিসের প্রকোপ কমাবে যে খাবার গুলো
আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৫, ০৩:২০
ফটোসোর্স: awesomejelly.com
(প্রিয়.কম )- সোরিয়াসিস ত্বকের প্রদাহজনিত দীর্ঘমেয়াদি রোগ। সোরিয়াসিস হলে ত্বকে যন্ত্রণা হয়, ত্বক ফুলে যায়, লাল হয়ে যায়, রুপালি আঁশের মত প্লাক হয়। শরীরের বিভিন্ন অংশে বিশেষ করে কনুই, হাঁটু, মাথার তালুতে, শরীরের পেছনের ও নীচের অংশে হতে দেখা যায়। সোরিয়াসিস আস্তে আস্তে বা হঠাৎ করে হতে পারে। আক্রান্ত স্থানে ব্যাথা পেলে বা আক্রান্ত ব্যাক্তি স্ট্রেস বা চাপের মধ্যে থাকলে সোরিয়াসিস চরম পর্যায়ে যেতে পারে কারণ তখন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং টক্সিন বৃদ্ধি পায়।
সোরিয়াসিসে আক্রান্তদের এমন স্বাস্থ্যকর খাদ্যতালিকা অনুসরণ করতে হয় যা ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করবে। গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, স্বাস্থ্যকর খাদ্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে যা রোগ ও সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা নির্দিষ্ট কিছু খাদ্যের পরামর্শ দিয়ে থাকেন যা সোরিয়াসিসের প্রকোপ ও প্রদাহ কমতে সাহায্য করে। আসুন সেই খাদ্য গুলো সম্পর্কে জেনে নেই।
১। মাংস
যাদের সোরিয়াসিস আছে তাঁদের লাল মাংস খাওয়া বাদ দিতে হবে। যদি লাল মাংস খাওয়ার প্রবল ইচ্ছা হয় তাহলে চর্বিহীন গরুর মাংসের পাতলা অংশ খেতে পারেন। সাদা মাংস যেমন- মুরগীর মাংস খেতে পারেন নিশ্চিন্তে যা ত্বক ও হার্টের জন্য ভালো।
২। মাছ ও মাছের ডিম
American Heart Association এর মতে যাদের সোরিয়াসিস আছে তাঁদের উচিৎ সপ্তাহে অন্তত দুই বার ফ্যাট সমৃদ্ধ মাছ গ্রহণ করা যা হৃদরোগকে দূরে রাখবে। সোরিয়াসিস আর্থ্রাইটিস ও কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজের ঝুঁকি বাঁড়ায়। এছাড়াও মাছের ডিম DHA ও EPA নামক ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড এর প্রাকৃতিক উৎস যা শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদানে সমৃদ্ধ ফলে এরা সোরিয়াসিসকে দমন করতে ও ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে সাহায্য করে।
৩। হোল গ্রেইন বা আস্ত শস্যদানা
আস্ত শস্যদানা যেমন- ওটস, গম, বার্লি ইত্যাদিতে প্রচুর ফাইবার ও পুষ্টি উপাদান থাকে। আস্ত শস্যদানার গ্লিসামিক ইনডেক্স কম থাকে এবং রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রন করে। এছাড়াও আস্ত শস্যদানা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, এনার্জি প্রদান করে এবং হজমে সাহায্য করে। হোল গ্রেইনে ফোলেট থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
৪। রসুন
রসূনে এন্টিবায়োটিক উপাদান আছে যা সোরিয়াসিস নিরাময়ে কাজ করতে পারে। রসূনে লাইপোক্সিজেনাস ইনহিবিটর থাকে যা প্রদাহের জন্য দায়ী এনজাইময়ের কাজকে বাধা প্রদান করে।
৫। বাদাম ও অ্যাভোকাডো
বাদাম ও অ্যাভোকাডোতে উচ্চমাত্রার হেলদি ফ্যাট থাকে। এদের মধ্যে পলিআনসেচুরেটেড ফ্যাট থাকে। বাদাম ও অ্যাভোকাডো সহনীয় পর্যায়ে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো। একটি অ্যাভোকাডোর অর্ধেক অংশ ও এক মুঠো বাদাম আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন।
৬। ফল ও সবজি
সোরিয়াসিস কে নিয়ন্ত্রণের জন্য আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল ও সবজি রাখুন। জাম, গাজর, ফুটি ও কমলায় শুধু অ্যান্টিঅক্সিডেন্টই থাকেনা বরং প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি থাকে। এই ভিটামিন গুলো ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক উপকারি।
বাহ্যিক ভাবে সোরিয়াসিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যাক্তিগত ভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, প্রতিদিন গোসল করুন, বেশি ক্ষার যুক্ত সাবান পরিহার করুন, নির্দিষ্ট শ্যাম্পু ব্যবহার করুন এবং ত্বকে অনেক জোরে জোরে ঘষাঘষি করা থেকে বিরত থাকুন।
আভ্যন্তরীণ ভাবে সোরিয়াসিসকে নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বাস্থ্যকর ও ব্যালেন্স ডায়েট মেনে চলুন, ব্যায়াম করুন এবং ঘুমের সঠিক সময়সূচী মেনে চলুন।
লিখেছেন
সাবেরা খাতুন
ফিচার রাইটার, প্রিয় লাইফ
প্রিয়.কম