ছবি সংগৃহীত

আপনার শ্লেস্মা/কফ দেখে যা বুঝে নেবেন

সাবেরা খাতুন
লেখক
প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০১৬, ১১:৩৮
আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৬, ১১:৩৮

ফটো সোর্স : www.livestrong.com

(প্রিয়.কম)-ভাইরাল ইনফেকশন হলে বা ফ্লুতে আক্রান্ত হলে ঠান্ডা ও কাশি হওয়া খুবই সাধারণ। কিন্তু আপনার কফের রঙ আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে অনেক তথ্য প্রকাশ করে এটা কি আপনি জানেন? শ্বাসনালীর মিউকাস মেমব্রেন থেকে আঠালো যে পদার্থ উৎপন্ন হয় তাকে মিউকাস বা কফ বা শ্লেষ্মা বলে। নাক ও গলাকে পিচ্ছিল রাখাই এর কাজ। কিন্তু ইনফেকশন বা অন্যকোন কারণে এই মিউকাস ঘন হয়ে গলায় জমা হতে থাকে। তখনি শ্বাসনালীর কফ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য কাশির মাধ্যমে শ্লেষ্মা বের করে দিতে চেষ্টা করে শরীর। আপনার কফ বা শ্লেষ্মার রঙ আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে যে তথ্যগুলো প্রকাশ করে সে সম্পর্কে জেনে নিই চলুন।

১। পাতলা স্বচ্ছ মিউকাস

পাতলা পানির মত শ্লেষ্মা যা দেখতে স্বচ্ছ বর্ণের হয় তা কোন ধরণের ইনফেকশন শুরুর লক্ষণ প্রকাশ করে। এটি হতে পারে ভাইরাস জনিত ইনফেকশনের লক্ষণ অথবা ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের প্রাথমিক অবস্থা।

২। ঘন সাদা বর্ণের মিউকাস

ঘন সাদা বর্ণের মিউকাস পুঁজভর্তি মিউকাস নামেও পরিচিত। ঘন, দইয়ের মত সাদা মিউকাস বা শ্লেষ্মা ব্যাকটেরিয়ার ইনফেকশনের প্রধান লক্ষণ প্রকাশ করে। এই ধরণের লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। নিজে নিজে কফ-কাশি দূর করার সিরাপ সেবন করা বা নিজেই চিকিৎসা করা থেকে বিরত থাকুন।

৩। সবুজাভ হলুদ বা হলুদ কফ

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ ধরণের মিউকাস অন্তর্নিহিত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের লক্ষণ প্রকাশ করে। মারাত্মক পর্যায়ে নিউমোনিয়া বা ফুসফুসের ফোড়াকেই নির্দেশ করে সবুজাভ হলুদ বা হলুদ কফ। এছাড়াও সিস্টিক ফাইব্রোসিস ও ব্রংকাইটিসের ও লক্ষণ প্রকাশ করে। প্রদাহের ফলে লিউকোসাইট জমা হয় বলে মিউকাস হলুদ বর্ণ ধারণ করে। সঠিকভাবে রোগ নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

৪। লাল রঙের কফ

এটি নিঃসন্দেহে একটি সতর্ক সংকেত। কফের সাথে রক্ত আসা শ্বাসনালীর সংক্রমণ বা ফুসফুসের সমস্যার কারণে হতে পারে। লাল রঙের কফ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাওয়া ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজনীয়। কোনভাবেই অবহেলা করবেন না।

৫। কালো রঙের কফ

এটি যদিও খুব বিরল কিন্তু আপনার ও এমন কাল রঙের কফ দেখা দিতে পারে। ফুসফুসে অতিরিক্ত ধোঁয়া জমে গেলে এমন কফ আসতে পারে। অথবা অন্তর্নিহিত কোন ছত্রাকের সংক্রমণের কারণেও এমন হতে পারে। ঔষধের মাধ্যমে এই সমস্যাগুলোর সমাধান করা সম্ভব।

৬। বাদামী রঙের কফ

ধূমপায়ীদের মিউকাস বাদামী রঙের হওয়া খুবই স্বাভাবিক যা তারা প্রতিদিন সকালেই দেখতে পায়। তীব্র বায়ু দূষণের কারণেও বাদামী রঙের কফ হতে পারে। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণেও মিউকাস সবুজাভ-বাদামী বর্ণের হতে পারে। মিউকাস বাদামী হওয়ার আরেকটি গুরুতর কারণ হতে পারে এতে রক্তের উপাদানের উপস্থিতি। যা মারাত্মক ধরণের ফুসফুসের সংক্রমণকে নির্দেশ করে।

৭। গোলাপি কফ

ফুসফুসে তরল জমা হলে তাকে পালমোনারি এডিমা বলে। গোলাপি রঙের কফ একেই নির্দেশ করে। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস এর মতে, হৃদরোগের সমস্যার প্রাথমিক ইঙ্গিত বহন করে গোলাপি কফ।    

কফ দীর্ঘদিন ধরে থাকলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। আপনার কফ কাশি অ্যালার্জির কারণেও হতে পারে। অ্যালার্জির চিকিৎসা করা না হলে অ্যানাফাইলেটিক শক এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।         

লিখেছেন-

সাবেরা খাতুন

ফিচার রাইটার, প্রিয় লাইফ

প্রিয়.কম