মজলুমের দোয়া আল্লাহ দ্রুত গ্রহণ করেন
বিশ্বময় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই আল্লাহপাক শ্রেষ্ঠনবি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লামকে শান্তির বার্তা দিয়ে প্রেরণ করেছেন। ইসলাম এমন একটি শান্তিপ্রিয় ধর্ম যেখানে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের স্থান নেই। ইসলাম জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী, সবার সাথে সম্প্রীতির বাঁধনে আবদ্ধ থাকার শিক্ষা দেয়। ইসলাম আমাদেরকে এমন সুন্দর শিক্ষা দেয় যা পালনে সমাজ ও দেশ হয়ে উঠে শান্তিময়।
ইসলাম অমুসলিমদের উপাসনালয়ে কোনরূপ আক্রমণ চালানোকেও কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। শুধু তা-ই নয়, বরং অমুসলিমরা যেসবের উপাসনা করে সেগুলোকে গালমন্দ করতেও আল্লাহপাক বারণ করেছেন।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহকে বাদ দিয়ে তারা যাদের উপাস্যরূপে ডাকে, তোমরা তাদের গালমন্দ করো না। নতুবা তারা শত্রুতাবশত না জেনে আল্লাহকেই গালমন্দ করবে।’ (সুরা আন আম, আয়াত: ১০৮)
এ আয়াতে শুধু প্রতিমা পূজারিদের সংবেদনশীলতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য নির্দেশ দান করা হয়নি বরং সব জাতি এবং সব সম্প্রদায়ের মাঝে বন্ধুত্ব এবং সৌহার্দ্য স্থাপনের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
পবিত্র কুরআন পাঠে আমরা দেখতে পাই, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যখন আদম সৃষ্টির মহা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন, তখন ফিরিশতাগণ আল্লাহতায়ালাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘তুমি কি সেখানে এমন কাউকে সৃষ্টি করতে যাচ্ছ, যে সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে আর রক্তপাত ঘটাবে? এর উত্তরে সর্বজ্ঞানী খোদা কেবল এটাই বলেছিলেন, ‘ইন্নি আ’লামু মালা তা’লামুন’ অর্থাৎ আমি তা জানি, যা তোমরা জানো না’ (বায়হাকি)।
বাহ্যত দৃষ্টিতে মনে হবে, যেখানেই ধর্ম সেখানেই অশান্তি, যেখানেই ধর্ম সেখানেই বিগ্রহ ও নৈরাজ্য। কিন্তু না, একটু মনোযোগ দিয়ে গভীর দৃষ্টিতে দেখুন। দেখতে পাবেন, এই বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য ধার্মিকদের পক্ষ থেকে নয় আর আল্লাহর পক্ষ থেকে আগত সত্য ধর্মের অনুসারীদের পক্ষ থেকেও নয়। কিন্তু যারা সমাগত সত্য সুন্দর জ্যোতিকে অস্বীকার করে অন্ধকারের পূজারি হয়ে থাকতে চেয়েছে, যারা তাদের প্রচলিত ধ্যান-ধারণা ও গলিত মথিত সমাজ দর্শন পরিত্যাগ করতে চায়নি- এসব অরাজকতা ও সন্ত্রাস সব সময় সর্ব যুগে তাদের পক্ষ থেকে পরিচালিত হয়েছে।
হজরত আদম (আ.) থেকে আরম্ভ করে হজরত মুহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত ইতিহাসের এই একই ধারার পুনরাবৃত্তি আমরা লক্ষ্য করবো। বিশ্বনবি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র জীবনী সবাইকে স্মরণ রাখতে হবে। তিনি সত্য প্রচার ও প্রসারের কারণে সারা জীবন কষ্ট করেছেন। মহানবির পবিত্র দেহ রক্তাক্ত হয়েছে, কতই না কষ্ট সহ্য করেছেন কিন্তু কারও প্রতি ধর্মের কারণে তিনি বলপ্রয়োগ করেননি। বরং তার পক্ষ থেকে পরিচালিত সব আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধ ছিল সবার ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য।