ডেঙ্গু দমাতে দরকার বারোমাসি পরিকল্পনা

জাগো নিউজ ২৪ ড. মো. ফখরুল ইসলাম প্রকাশিত: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১২

ডেঙ্গু এখন বাংলাদেশের শহর গ্রাম নির্বিশেষে সব মানুষের নিকট চিরচেনা আতঙ্ক। এক সময় বর্ষানির্ভর এ রোগটি আজ সারাবছর সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। এর প্রাদুর্ভাব কখনও কম, কখনও বেশি কিন্তু কখনোই থামছে না। চারদিকে সবাই প্রশ্ন করছেন এবার কেন ডেঙ্গুর প্রতাপ দমছে না? উত্তর একটাই তা হলো, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমাদের পরিকল্পনা মৌসুমি কিন্তু ডেঙ্গু এখন বারোমাসী রোগ। তাই এর নিয়ন্ত্রণে সমাধানও হতে হবে সারাবছরের সমন্বিত উদ্যোগে।


বাংলাদেশে বছরের পর বছর এর সংক্রমণ বাড়ছে, মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। আর আমরা বহুদিন ধরে এর চিকিৎসায় প্রায় একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। কীটনাশক স্প্রে, ফগিং, মাইকিং, জরুরি সভা করছি কিন্তু সামগ্রিকভাবে ডেঙ্গু দমছে না। তাই দ্রুত ডেঙ্গুকে একটি জাতীয় স্বাস্থ্যঝুঁকি হিসেবে স্বীকার করা উচিত। এটা কেবল মৌসুমি নগর সমস্যা নয়, গোটা দেশের সমস্যা। ডেঙ্গু এখন জলবায়ু-নির্ভর রোগ, সারাবছর ঝুঁকি তৈরি করে। তবু আমাদের অধিকাংশ উদ্যোগ শুরু হয় বর্ষা মৌসুমের পরে বা সংক্রমণ বাড়ার পর। কিন্তু প্রয়োজন আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া, বারোমাসি পরিকল্পনায় এনে এর জন্য সারাবছরের বাজেট এবং নতুনভাবে প্রশিক্ষিত স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা।


বেশ কবছর ধরে ডেঙ্গুকে মৌসুমি সমস্যা হিসেবে দেখার ভুলটি আমাদের বারবার ব্যর্থ করছে। সংক্রমণ বাড়লেই তৎপরতা, কমলেই কাজের মধ্যে নিস্তব্ধতা নেমে আসে। এই চক্র বহুবছর ধরে চলছে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন এডিস মশার প্রজননকে এমনভাবে বদলে দিয়েছে যে শীতকালেও সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। সুতরাং, যে রোগ সারাবছর সক্রিয়, তার সমাধান মৌসুমি পদ্ধতিতে সম্ভব নয়।


ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমাদের বারোমাসি পরিকল্পনার মূল ভিত্তি হওয়া উচিত এর উৎস ধ্বংসের কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা। ফগিং বা স্প্রেতে মশা সাময়িক কমে, কিন্তু জন্মস্থান অক্ষত থাকলে কয়েক দিনের মধ্যে আবার বাড়ে। তাই প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থায়ীভাবে সাপ্তাহিক উৎস শনাক্ত অভিযানও মাসিক উৎস ধ্বংস টাস্কফোর্স চালু করতে হবে। নাগরিকদের বাধ্যতামূলক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সিটি করপোরেশনের তদারকি আরও কঠোর হওয়া জরুরি।


এছাড়া কীটনাশকের মাননিয়ন্ত্রণ এবং বৈজ্ঞানিক তত্ত্বাবধান ছাড়া ডেঙ্গু দমন হবে না। অতীতে অকার্যকর ওষুধ ব্যবহারের অভিযোগ ছিল; আবার অনেক সময় পুরোনো ফর্মুলা দিয়েই অভিযান চলে। বারোমাসী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রয়োজন আন্তর্জাতিক মানসম্মত কীটনাশক কিনে ব্যবহার, গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করা, এবং তদারকিতে বিশেষজ্ঞদের বাধ্যতামূলক উপস্থিতি।


আমরা জানি নগর অবকাঠামোর উন্নয়ন ছাড়া যে-কোনো পরিকল্পনাই অর্ধেক বাকি থেকে যায়। জলাবদ্ধতা, বন্ধ ড্রেন, নির্মাণাধীন ভবনের খোলা পানি এগুলো এডিস মশার স্থায়ী আবাসস্থল। বারোমাসি পরিকল্পনার একটি বড় অংশ হওয়া উচিত ড্রেনেজ সংস্কার, নির্মাণকাজে নিয়মিত পরিদর্শন এবং দু’একটি প্রজেক্টভিত্তিক না করে সারাবছরের জন্য সকল অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ করার উদ্যোগ নেয়া।


আমাদের দেশে নগর পরিকল্পনার চিরায়ত বিশৃঙ্খলা বিরাজমান। প্রশাসনের তদারকির অভাব এবং নাগরিকদের উদাসীনতা মিলিয়ে এডিস মশা যেন রাজ্যের মালিকানা পেয়েছে। শহর ও পৌরসভা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, প্রতিটি সংস্থা আলাদাভাবে কিছু করছে। কিন্তু একীভূত কর্মপরিকল্পনা নেই। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে দায় ঠেলাঠেলি করা যেন প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও