পারিবারিক ওষুধের বিগ বাজেট সংকুলানে নাভিশ্বাস

জাগো নিউজ ২৪ ড. মো. ফখরুল ইসলাম প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫৮

বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর মাসিক ব্যয়ের তালিকায় আজ নতুন এক আতঙ্কের নাম ওষুধের খরচ। বিদ্যুৎ, ভাড়া, বাজার ও স্কুল ফি সামলে যখন পরিবারগুলো কষ্টেসৃষ্টে সংসার টিকিয়ে রাখছে তখন হঠাৎই চিকিৎসা ও ওষুধের খাত সেই টানটান ভারসাম্য ভেঙে দিচ্ছে। অনেক পরিবারে এখন ওষুধের জন্যই মাস শেষে ধারদেনা করতে হচ্ছে। কেউ কেউ প্রয়োজনীয় খাবার বা পোশাকে কাটছাঁট করছে, শুধু নিয়মিত প্রেসক্রিপশনের ওষুধ কেনার জন্য। এই হলো বাংলাদেশের বাস্তব চিত্র। যেখানে কারো কঠিন অসুখ হলেই ওষুধ কেনার চিন্তা ও হাসপাতালের বিরাট খরচ মানুষকে হতাশ করে তুলছে। এমনকি অনেকের ক্ষেত্রেই পরিবারের চিকিৎসা খরচ এখন শিক্ষা খরচের চেয়েও বেশি।


আমাদের দেশে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর নিকট আগে যেখানে চিকিৎসা ব্যয় ছিল হঠাৎ রোগে পড়লে এককালীন চাপ, এখন সেটি পরিণত হয়েছে মাসিক বাজেটের স্থায়ী খাতে। ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, থাইরয়েড, গ্যাসট্রিক বা অ্যালার্জির মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের ওষুধ কিনতে গিয়ে অনেক পরিবারই প্রতিমাসে কয়েক হাজার টাকা ব্যয় করছে। ফলত সংসারের খাদ্য, শিক্ষা বা সঞ্চয়ের খাত থেকে কেটে নিতে হচ্ছে ওষুধের জন্য বরাদ্দ। এই পরিস্থিতি যেন অসুখে নয়, ওষুধেই নিঃস্ব হওয়ার দুঃসহ বাস্তবতা তৈরি করছে।


আমাদের ওষুধ শিল্পে আত্মনির্ভরতার গল্প অনেক পুরোনো। কিন্তু দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারি ভূমিকা প্রায় অদৃশ্য। একই উপাদান বা জেনেরিক নামের ওষুধের দাম বিভিন্ন কোম্পানিতে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। ব্র্যান্ড সচেতনতা নামের এক অদৃশ্য মনস্তাত্ত্বিক বাণিজ্য চালাচ্ছে ওষুধ কোম্পানিগুলো, যেখানে ডাক্তার থেকে শুরু করে ফার্মেসি পর্যন্ত জড়িয়ে আছে প্রণোদনার অজস্র জাল। রোগীরা নিজের অজান্তেই এই অযৌক্তিক মূল্য ব্যবস্থার শিকার।


ওষুধের এই অগ্নিমূল্য পরিস্থিতির পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত, মূল্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার দুর্বলতা। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর কাগজে-কলমে দাম নির্ধারণ করলেও বাস্তবে ফার্মেসি পর্যায়ে তা মানা হয় না। একই জেনেরিক উপাদানের ওষুধের দাম কোম্পানিভেদে তিন থেকে চারগুণ পর্যন্ত পার্থক্য দেখা যায়। দ্বিতীয়ত, ডাক্তারদের ব্র্যান্ডনির্ভর প্রেসক্রিপশন সংস্কৃতি, যেখানে সাশ্রয়ী বিকল্প থাকলেও রোগীকে দেওয়া হয় দামি ওষুধের নাম। তৃতীয়ত, প্রণোদনা ও কমিশনের অঘোষিত চক্র, যা ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর ব্যবসাকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে তুলেছে। এর ক্ষতি বহন করছে সাধারণ জনগণ।


আরেকটি বাস্তবতা হলো, সরকারি হাসপাতালের ওষুধ বিতরণ ব্যবস্থা কার্যকর নয়। প্রান্তিক পর্যায়ের ক্লিনিক ও উপজেলা হাসপাতালে ফ্রি মেডিসিন পাওয়া যায় এই ধারণা এখন প্রায় মিথে পরিণত হয়েছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ নেই, আর যেগুলো আছে, মানের নিশ্চয়তা নেই। ফলে রোগীরা বাধ্য হয়ে বেসরকারি ফার্মেসির দ্বারস্থ হচ্ছেন, যেখানে দামও বেশি, নিয়ন্ত্রণও শিথিল।


একইসঙ্গে স্বাস্থ্যবীমা বা রাষ্ট্রীয় সহায়তার কোনো নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা না থাকায় জনগণ পুরো খরচ নিজে বহন করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে মোট ব্যয়ের প্রায় ৬৮ শতাংশই জনগণ দেয় নিজ পকেট থেকে। এই ‘আউট-অফ-পকেট’ ব্যয় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ। ফলে পরিবারগুলো একের পর এক আর্থিক বিপর্যয়ে পড়ে, কেউ কেউ চিকিৎসা মাঝপথে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়।


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও