You have reached your daily news limit

Please log in to continue


রকিব হাসান ছিলেন গোয়েন্দাদের গোয়েন্দা

‘হ্যালো, কিশোর বন্ধুরা, আমি কিশোর পাশা বলছি, আমেরিকার রকি বীচ থেকে। জায়গাটা লস অ্যাঞ্জেলসে, প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে, হলিউড থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে। যারা এখনও আমাদের পরিচয় জানো না তাদের বলছি, আমরা তিন বন্ধু একটা গোয়েন্দা সংস্থা খুলেছি, নাম তিন গোয়েন্দা।’

ব্যস, এভাবেই শুরু জাদুকরী, তুমুল পাঠকপ্রিয় রকিব হাসানের তিন গোয়েন্দা সিরিজের প্রায় প্রতিটি আখ্যানের শুরু। শুরুতেই তিনি এমনভাবে কল্পকাহিনি বা গল্প ফেঁদে বসেন যে, পুরো বই শেষ না করা অব্ধি পড়ার টেবিল থেকে উঠে আসা রীতিমতো কষ্টসাধ্য। বলে নেওয়া ভালো, তিন গোয়েন্দা সিরিজের গল্পগুলো মৌলিক নয় বরং বিদেশি গোয়েন্দাগল্পের ভাবানুবাদ বা ছায়া অবলম্বনে লেখা হয়েছে। ১৯৮৫ সালে রকিব হাসান স্বনামে তিন গোয়েন্দা সিরিজ লিখতে শুরু করেন, যার বেশকিছু গল্প তিনি নিয়েছিলেন রবার্ট আর্থারের ‘থ্রি ইনভেস্টিগেটরস’ সিরিজ থেকে, আর কিছু নিয়েছেন এনিড ব্লাইটনের ‘ফেমাস ফাইভ’ থেকে।

কিশোর পাঠক হিসেবে রকিব হাসানের তিন গোয়েন্দা সিরিজ আমি বলতে গেলে গোগ্রাসে গিলেছি। আর শুধু আমার কথাই বা বলছি কেন, সমসাময়িক এমন কিশোর বা তরুণ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর যারা কিনা পড়বার বইয়ের ভেতর লুকিয়ে বুঁদ হয়ে রকিব হাসানকে পড়েনি।

এক কথায় তিনি ছিলেন আমাদের কৈশোরে সবচেয়ে পাঠকপ্রিয় লেখক, উত্তুঙ্গ ছিল তার জনপ্রিয়তা। শুধু কাহিনি বিন্যাস নয়, লেখার ঢঙ, শব্দ, ভাষা, গাঁথুনিতে ছিল তার গভীর মুনশিয়ানা। কিশোর মনন পড়তে পারার তার অসামান্য সক্ষমতা জীবিতকালে তাকে সেই বিরলপ্রজ লেখকের সম্মান এনে দিয়েছিল, যা কিনা খুব কম লেখকের ভাগ্যেই জোটে। তিনি শারীরিকভাবে এখন ধরাধামে নেই কিন্তু তার পরিচিতি, চেনাজানা, সম্মান, জনপ্রিয়তা তাকে পাঠকের হৃদয়ে সজীব করে রাখবে।

১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। মজার ব্যাপার আমারও জন্ম ডিসেম্বরেই, তবে কিছুদিন পর, ২৭ তারিখ। আরও একটা অদ্ভুত মিল আছে আমাদের—তার লেখা প্রথম বই প্রকাশিত হয় ১৯৭৭ সালে, আর আমার জন্মও সেই একই বছর। প্রথম বইটি অবশ্য স্বনামে নয়, বরং ছদ্মনামে ছাপা হয়েছিল সেবা প্রকাশনী থেকে। যতদূর জানা যায়, অন্তত দুটো ছদ্মনামে লিখেছিলেন তিনি—জাফর চৌধুরী এবং আবু সাঈদ।

তার এমন সুন্দর একটি নাম থাকতেও কেন তিনি লেখালেখির ক্ষেত্রে ছদ্মাবরণ গ্রহণ করলেন সেই রহস্য আমার কখনো জানা হয়নি। বেশ মনে পড়ে, রকিব হাসান অনূদিত ব্রাম স্টোকারের ‘ড্রাকুলা’ উপন্যাস পড়ে সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। কখনো মনে হয়নি আমি বিদেশি উপন্যাসের বঙ্গানুবাদ পড়ছি।

রকিব হাসান অসম্ভব পাঠকপ্রিয় ‘টারজান’ সিরিজ এবং অ্যারাবিয়ান নাইটসও অনুবাদ করেন। জেরাল্ড ডুরেল, ফার্লে মোয়াট, এরিক ফন দানিকেনের মতো ওয়ার্ল্ড ক্লাসিক লেখকদের বইও অনুবাদ করেন তিনি। তাকে না পড়লে হয়তো জানাই হতো না, বিদেশি গল্পের অনুবাদও এমন মনোগ্রাহী এবং প্রসাদগুণে উপভোগ্য হয়ে উঠতে পারে। তাকে সহস্র প্রণাম।

তিন গোয়েন্দা সিরিজের বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়ার আগে আরও দুটো বিশেষ তথ্য দিয়ে রাখতে চাই। রকিব হাসান ‘গোয়েন্দা রাজু’ বলে একটি স্বতন্ত্র চরিত্র বিনির্মাণ করেছিলেন, আরও লিখেছিলেন ‘রেজা-সুজা রোমহর্ষক’ সিরিজ। মজার ব্যাপার হলো এই—বাজারে তিন গোয়েন্দা সিরিজ এসে গেলে এই দুটো চরিত্রকে পাঠক আর খুব একটা খুঁজে নেয়নি। কিন্তু লেখক হিসেবে আমি মনে করি একজন লেখকের সৃষ্ট কোনো চরিত্রই তিনি ব্রাত্য মনে করেন না, বরং হারিয়ে যাওয়া কিছু গল্প বা চরিত্র প্রায়শ তাকে স্ট্রাগল এবং দুঃসময়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন