২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস। ফার্মাসিস্টদের সর্ববৃহৎ সংগঠন আন্তর্জাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশন (International Pharmaceutical Federation বা FIP) এর উদ্যোগে ২০০৯ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী ফার্মাসিস্টরা এ দিবসটি খুব গুরুত্ব সহকারে পালন করে আসছে।
২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস হিসেবে বেছে নেওয়ার কারণ হলো ১৯১২ সালের এ দিনে নেদারল্যান্ডস-এ আন্তর্জাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। মূলত সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যসেবায় ফার্মাসিস্টদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে জনগণের নিকট তুলে ধরা ও স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে ফার্মাসিস্টদের বিভিন্ন কার্যক্রমকে উৎসাহিত করায় এ দিবস পালন করার উদ্দেশ্য।
আন্তর্জাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশন প্রতিবছর বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবসের একটি প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করে থাকে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো—‘Think Health, Think Pharmacist’ অর্থাৎ সুস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করুন, ফার্মাসিস্টের কথা মনে রাখুন।
ফার্মাসিস্ট কারা?
‘ওষুধ ও কসমেটিকস আইন ২০২৩’ অনুযায়ী- “একজন ফার্মাসিস্ট হলেন বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল কর্তৃক ‘এ’ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধিত কোনো ব্যক্তি”। বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের ‘এ’ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধিত হতে একজন ফার্মাসিস্টকে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চার বছরের বিফার্ম (অনার্স) বা পাঁচ বছরের বিফার্ম (প্রফেশনাল) ডিগ্রি অর্জন করতে হয়। অর্থাৎ ওষুধ ও কসমেটিকস আইন ২০২৩ অনুযায়ী ‘ফার্মাসিস্ট’ হলেন ফার্মেসিতে ডিগ্রিধারী একজন বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েট।
আন্তর্জাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশনের সংজ্ঞা অনুযায়ী—“ফার্মাসিস্টরা হলেন ওষুধ প্রস্তুত ও ওষুধের উপযুক্ত ব্যবহারের ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ। রোগীরা যাতে ওষুধ থেকে সর্বোচ্চ চিকিৎসাগত উপকার পান, ফার্মাসিস্টরা তা নিশ্চিত করেন। ফার্মাসিস্টরা ওষুধ ও তার কার্যপ্রণালী সম্পর্কে সর্বাধিক বিশদ জ্ঞানসম্পন্ন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, যারা নিরাপদ, কার্যকর ও যৌক্তিক ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের স্বাস্থ্য উন্নয়নে অবদান রাখেন।”
বিশ্বে ও বাংলাদেশে ফার্মাসিস্টের সংখ্যা কত, তারা কোথায় কর্মরত?
আন্তর্জাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল ফেডারেশনের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে বর্তমানে ফার্মাসিস্টের সংখ্যা ৫৫ লাখ ৭০ হাজার। এ বিশাল সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর ডিগ্রিধারী ফার্মাসিস্টদের প্রায় ৫৮ শতাংশ কাজ করেন কমিউনিটি ফার্মাসিস্ট হিসেবে, ৩২ শতাংশ হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ক্লিনিক্যাল ফার্মাসিস্ট হিসেবে, বাকি ১০ শতাংশ কাজ করেন ওষুধ কোম্পানির বিভিন্ন সেক্টরে (যেমন- ওষুধ প্রস্তুত, গবেষণা ও উন্নয়ন ইত্যাদি), বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও গবেষক হিসেবে, ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ইত্যাদি।
তবে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় ফার্মাসিস্টদের গড়ে প্রায় ৫৫ শতাংশ ওষুধ কোম্পানির বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিল এ পর্যন্ত ২৩ হাজার ৮৫০ জন গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্টকে রেজিস্ট্রেশন প্রদান করেছে, যারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থেকে ফার্মেসিতে স্নাতক ডিগ্রিধারী।