
গণ–অভ্যুত্থানের মালিকানা কাদের হাতে চলে যায়
বাংলাদেশের ইতিহাসে গণ–অভ্যুত্থানের একটি বড় প্রভাব বিস্তারকারী ভূমিকা চিহ্নিত করা কঠিন নয়। ১৯৫২ সাল থেকে আমরা এটি বিশেষভাবে লক্ষ করতে পারি। সে সময় ভাষা আন্দোলন যখন একটি গণ–অভ্যুত্থানের রূপ নেয়, তখনই পাকিস্তান সরকার ভাষার দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয়। যদিও এখনো বাংলা ভাষার পরাজিত প্রান্তিক অপমানিত অবস্থা, তারপরও এই আন্দোলনের শক্তিই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ যাত্রাপথ তৈরি করেছিল। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লিগকে ধরাশায়ী করে হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্টের বিজয় এর প্রত্যক্ষ ফল।
এরপর জাতীয় পর্যায়ে দেশকাঁপানো গণ–অভ্যুত্থান আমরা দেখেছি ১৯৬৯, ১৯৯০ এবং সর্বশেষ ২০২৪–এ। শ্রমিক–কৃষকের ব্যাপক অংশগ্রহণে উত্তাল ১৯৬৯–এর গণ–অভ্যুত্থান পাকিস্তানের ‘লৌহমানব’ বলে পরিচিত সামরিক শাসক জেনারেল আইয়ুব খানের পতন ঘটিয়েছিল, তা ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের শক্তি তৈরি করেছিল।
বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর তিন বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসন, সপরিবার রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিব হত্যার পর সামরিক শাসন শুরু হয়। ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়া হত্যার পর ১৯৮২ সালে দ্বিতীয় দফা সামরিক শাসন শুরু হলে ১৯৮৩ সাল থেকে সামরিক শাসক এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৮৭ সালের নভেম্বরে পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হলেও ১৯৯০ সালের গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশের সামরিক শাসক জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দশকব্যাপী দুর্নীতিগ্রস্ত স্বৈরশাসনের অবসান ঘটায়।
- ট্যাগ:
- মতামত
- গণঅভ্যুত্থান
- জুলাই বিপ্লব