কমেছে জমি, বেকার কৃষক

www.ajkerpatrika.com রামপাল প্রকাশিত: ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৬

বাগেরহাটের রামপালে দীর্ঘদিন ধরে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও সরকারের মেগা প্রকল্পের কারণে কমছে কৃষিজমি। গেল ২৫ বছরে অন্তত ৫ হাজার একর ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে শিল্প-কলকারখানাসহ নানা ধরনের অবকাঠামো। কৃষিজমির সংকটে কাজের সন্ধানে অনেক কৃষক পাড়ি জমিয়েছেন বড় শহরে। এভাবে শিল্পায়ন ও বসতবাড়ি নির্মাণ চলতে থাকলে শহরে আসার হার বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন গবেষকেরা।


বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, জেলার মধ্যে রামপালে সরকারি উন্নয়নকাজের জন্য জমি অধিগ্রহণের হার বেশি। গেল তিন দশকে এই উপজেলায় সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য প্রায় ৩ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ১ হাজার ৮৩৪ একর, খানজাহান আলী বিমানবন্দরের জন্য ৬৩০ একর, খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের জন্য ১৪১ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এ ছাড়া রামপাল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ফায়ার সার্ভিস, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, থানা, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলার সন্ন্যাসী এলাকায় প্রায় ২০০ একর জমির ওপর নির্মিত হয়েছে নৌ পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।


এর বাইরে পদ্মা সেতু নির্মাণের আগে ও পরে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের রামপাল উপজেলার ফয়লা বিমানবন্দর থেকে গোনাইব্রিজ পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে শতাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান জমি ক্রয় ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে। এর মধ্যে রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের অদূরে ৩৫০ একর জমি ক্রয় করে সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র করেছে শিল্পগোষ্ঠী ওরিয়ন গ্রুপ। এ ছাড়া ফারুক জুটস মিলস লি., বে-ইস্টার্ন করপোরেশন, রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস, ডেল্টা এলপিজি, পেট্রোম্যাক্স অফিসার্স রেসিডেন্স, ৫টি তেলপাম্প, কয়েকটি মাছ ক্রয়-বিক্রয় আড়ত গড়া হয়েছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি কৃষিজমিতে বাড়ি ও ছোট ছোট দোকান নির্মাণ করেছেন জমির মালিকেরা। এ ছাড়া পশুর, বগুড়াসহ বিভিন্ন নদ-নদীর ভাঙনে গেল তিন দশকে এই উপজেলার অন্তত ৫০০ একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে।


তবে রামপাল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, গেল ১৫ বছরে এই উপজেলায় আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ কমেছে ২ হাজার ৫০০ একর। সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে রামপাল উপজেলায় আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ছিল ৫০ হাজার ৬৬৩ একর। ২০২৫ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ৬৬৫ একরে। তবে বাস্তবিক অর্থে এই পরিমাণ আরও বেশি। এভাবে দিনের পর দিন জমি কমার কারণে কৃষিকাজ ও ধান চাষের ওপর নির্ভরশীল অনেকে এলাকা ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছেন ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ বড় শহরে।


উপজেলার রাজনগর এলাকার গুরুদাস মণ্ডল বলেন, ‘এলাকায় একসময় অনেক ধান উৎপাদন হতো, আবার মাছও পাওয়া যেত। কিন্তু ধানি জমি কমতে কমতে এখন অনেকের শুধু বাড়িটুকু আছে। কয়েক বছর আগে আমার প্রতিবেশী তারক দাস পরিবার নিয়ে কাজের আশায় ঢাকা চলে গেছে। মাত্র তিন কাঠা জমি আছে তার বাড়িতে, এতে কি আর সংসার চলে। শুনেছি, ঢাকায় নিজে রিকশা চালায়, বউ মানুষের বাসায় কাজ করে। ছেলে-মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করেছে।’ শুধু তারক নন, আশপাশের অনেকে কাজের সন্ধানে এলাকা ছেড়েছে বলে জানান এই বৃদ্ধ।


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও