'তরুণদের হাতে ফ্যাসিস্ট শাসক কেবল পদত্যাগ করেনি, পলায়ন করতে হয়েছে। ঘটনার দিক থেকে এটা বিরাট ঘটনা। এই সিগনিফিকেন্সটা হলো অ্যাজ অ্যা মডেল অব দ্য মুভমেন্ট। সেই তরুণদের অনেক সমালোচনা হচ্ছে, আমিও করি। কিন্তু জাতির প্রয়োজনে এই তরুণ নেতৃত্বকে রক্ষা করতে হবে।'
কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহারের ৭৯তম জন্মদিন উপলক্ষে মোহাম্মদপুর ইকবাল রোডের নারীগ্রন্থ প্রবর্তনায় 'মোলাকাত ও শুভেচ্ছা বিনিময়'-এর আয়োজন করা হয়। সেখানেই কথাগুলো বলেন ফরহাদ মজহার।
তিনি বলেন, 'আমাদের চেতনায় রাষ্ট্র নেই, রাষ্ট্র শাসন আমরা পাইনি। আমরা কেবল সরকার দেখেছি, শোষিত হয়েছি ব্রিটিশ থেকে আজ পর্যন্ত। তাই আমাদের রাষ্ট্র গঠন করতে হবে। আমি সেই রূপান্তরের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলি, কাজ করি। এই বিষয়ে যতক্ষণ পর্যন্ত আরেকটা গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করতে না পেরেছি, সমস্ত জনগণের সঙ্গে কথাবার্তা, আলাপ-আলোচনা, তর্কবিতর্ক চলবে।'
তিনি আরও বলেন, 'আবার অনেকে না বুঝে আমার সমালোচনা করেন। আমাকে টার্গেট করে আছে, এটা অনেক আগ থেকেই। আমি গুম হয়েছিলাম, সেটা সবাই জানেন। আজকের সেনাবাহিনীও জানে আমাকে কোথায় ও কেন নেওয়া হয়েছিল।'
অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেন, 'ফরহাদ মজহার দীর্ঘদিন দুটি সত্ত্বা নিয়ে চলমান ও সজিব। একটি রাজনৈতিক, অন্যটি সৃজনশীল। দুটি সত্ত্বা কোনটা কার সহায়ক, সেটা অন্য আলোচনা। তবে রাজনৈতিক সক্রিয়তা তাকে সৃজনশীল পথে সজিব রেখেছে।'
অনুষ্ঠানের আয়োজক ও সঞ্চালক রোমেল রায়হান বলেন, '২০০১ সালের দিকে ফরহাদ মজহারের কাছাকাছি আসি, এসে দেখি তার লড়াই জাতি ও শ্রেণীর সংগ্রাম নিয়ে। এগুলো আমাদের বন্ধুদের মাঝেও আলোড়ন তোলে।'
ফরহাদ মজহারের জন্ম ৯ আগস্ট ১৯৪৭ সালে নোয়াখালীতে। বাংলা ভাষার অন্যতম কবি ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক তাত্ত্বিক। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন বিকল্পের নীতিনির্ধারণী গবেষণা-উবিনীগ এবং নয়াকৃষি আন্দোলনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। সম্পাদনা করছেন 'চিন্তা'। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঔষধশাস্ত্রে স্নাতক এবং পরে যুক্তরাষ্ট্রের দ্য নিউ স্কুল ফর সোশ্যাল রিসার্চ থেকে অর্থশাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে 'গণঅভ্যুত্থান ও গঠন', 'মোকাবিলা', 'এবাদতনামা', 'সাম্রাজ্যবাদ', 'মার্কস, ফুকো ও রুহানিয়াত', 'ক্ষমতার বিকার' ইত্যাদি।