বিদেশে সন্ত্রাসবাদে বাংলাদেশিদের নাম: শ্রমবাজার সুরক্ষায় এখনই পদক্ষেপ জরুরি

www.ajkerpatrika.com বিভুরঞ্জন সরকার প্রকাশিত: ০৪ জুলাই ২০২৫, ১২:২৪

সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় ৩৬ জন বাংলাদেশি নাগরিককে সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করার ঘটনা শুধু তাৎক্ষণিক উদ্বেগের বিষয় নয়, বরং এটি বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের শ্রমবাজার ও ভাবমূর্তির জন্য একটি বড় ধাক্কা। সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ এখন বৈশ্বিক এক অভিশাপ। কিন্তু যখন শান্তিপ্রিয় ও পরিশ্রমী একটি জাতির নাগরিকেরা এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে বিদেশে গ্রেপ্তার হন, তখন এই প্রশ্নই বড় হয়ে সামনে আসে এটা কি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা, নাকি এর পেছনে আছে বড় কোনো পরিকল্পনা বা ষড়যন্ত্র?


মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বাংলাদেশিদের জন্য জীবন-জীবিকার এক বড় উৎস। বাংলাদেশিরা সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত—এটা প্রমাণ হলে যে সন্দেহ ও অবিশ্বাস তৈরি হবে তাতে বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।


পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গত ৩ জুলাই জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার অধিকাংশ ব্যক্তিকে ফেরত পাঠানো হতে পারে এবং দেশে ফিরলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁদের বিষয়ে তদন্ত করবে। এটা অবশ্যই একটি দায়িত্বশীল পদক্ষেপ। তবে প্রশ্ন হলো, এতসংখ্যক বাংলাদেশি যদি সত্যিই কোনোভাবে সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন, তাহলে তাঁরা কীভাবে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করলেন, সেখানে কাদের সহায়তায় উগ্রবাদী কার্যকলাপে অংশ নিলেন এবং বাংলাদেশের ভেতর থেকেই তাঁদের এই পথচলার পেছনে কোনো মদদ ছিল কিনা—এসব প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধান জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।


মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেসব তথ্য দিয়েছেন, সেগুলো নিছক রাজনৈতিক বার্তা নয়, আদালতে পেশ করা চার্জশিটের আওতায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনও করা হয়েছে। আরও ১৬ জনের বিষয়ে তদন্ত চলছে। অর্থাৎ এই ঘটনাকে ‘সাজানো নাটক’ বা ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হিসেবে উড়িয়ে দেওয়ার অবকাশ নেই। বরং বাংলাদেশ সরকার, বিশেষত স্বরাষ্ট্র ও প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উচিত, মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করে পুরো বিষয়টি খোলাসা করা এবং দেশের জনগণকে এ বিষয়ে স্বচ্ছভাবে অবহিত করা।



মালয়েশিয়ার মতো দেশ, যেখানে বাংলাদেশি শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণ, কৃষি, রেস্তোরাঁ ও সেবা খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন, সেখানে এতজন বাংলাদেশি সন্ত্রাসবাদে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টি হালকাভাবে দেখা ঠিক হবে না। কারণ এর আগেও বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে।


২০১৫-১৬ সালে সিঙ্গাপুরে ২৭ জন বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয় আইএস-এর অনুরূপ এক সন্ত্রাসী সংগঠন গড়ে তোলার পরিকল্পনার অভিযোগে। তাঁদের কেউ কেউ বলেছিলেন, তাঁরা বাংলাদেশে ফিরে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। সিঙ্গাপুর সরকার ব্যাপারটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখে এবং গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের দেশে ফেরত পাঠানোর পাশাপাশি সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কঠোরতা বাড়ায়।


ভারতেও সময়-সময় সীমান্ত এলাকা ও শহরাঞ্চলে কিছু বাংলাদেশি নাগরিককে হুজি, জেএমবি বা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিশেষ করে বর্ধমান বিস্ফোরণ (২০১৪) মামলায় জেএমবির বাংলাদেশি সদস্যরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল।


তুরস্কে সিরিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা করার সময় বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী কিছু ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, তাঁরা সিরিয়ার রাকা শহরে আইএস-এর নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চলে যাচ্ছিলেন।


এ ছাড়া, যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যেও দ্বিতীয় প্রজন্মের কিছু তরুণ-তরুণী আইএসে যোগ দেওয়ার জন্য সিরিয়া চলে গিয়েছিলেন। শামীমা বেগম নামের এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ তরুণী ২০১৫ সালে ১৫ বছর বয়সে লন্ডন থেকে সিরিয়া গিয়ে আইএস সদস্যকে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে বিষয়টি আন্তর্জাতিক বিতর্কের জন্ম দেয় এবং ব্রিটিশ সরকার তাঁকে নাগরিকত্বহীন ঘোষণা করে।







সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও