জুলাই বিপ্লবের উদ্ভব ও ট্র্যাজেক্টরি

যুগান্তর মোবায়েদুর রহমান প্রকাশিত: ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১১:০৬

আজ ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট। আজ থেকে ঠিক ১ বছর আগে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এক মহাবিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে ঝাড়ে বংশে বিতাড়িত করেছিলেন কয়েকজন টগবগে তরুণের নেতৃত্বে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ। ওইসব তরুণের বিপ্লব যে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের কত বড় উপকার করেছে সেটি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। শুরুতে আমি নিজের ব্যক্তিগত একটি ঘটনা দিয়ে সেটা বোঝানোর চেষ্টা করছি।


২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যভাগ, সম্ভবত ১৫ ফেব্রুয়ারি। রাত ৯টার দিকে আমার ছোট ভাই আমার বাসায় এলো। ও রাজনীতি করে। খাওয়া-দাওয়ার পর সে বলল, আমার বাসাতেই রাতে থাকতে চায়। উত্তর দিলাম, ‘আমার বাসা অনেকেই চেনে। তোর বিরুদ্ধে ৭১ টেলিভিশন যে বিদ্বিষ্ট প্রচারণা চালিয়েছে তার ফলে পুলিশ তোর খোঁজে আমার বাসাতেও আসতে পারে। সুতরাং তুই আমার মেয়ের বাসায় চলে যা।’


তদনুযায়ী ওর গাড়ি আমার বাসায় রেখে অন্য এক গাড়িতে সে আমার মেয়ের বাসায় গেল। রাত ৩টা ৩০ মিনিটে ফোন পেলাম। আমার মেয়ে উত্তেজিত কিন্তু আতঙ্কিত কণ্ঠে জানাল, ‘আব্বু, এই মাত্র পুলিশ ছোট কাকুকে ধরে নিয়ে গেল।’ একটু পর ওর স্ত্রী আমাকে ফোন করে জানাল, টেলিভিশন স্ক্রলে আমার ছোট ভাইয়ের খবর দেখানো হচ্ছে। কিন্তু বলা হচ্ছে, পুলিশ বা কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেফতার করেনি।


পরদিন আমরা গুলশান থানায় গেলাম। এর মধ্যে আমরা জনাব শাহদিন মালিককে বিষয়টির দায়িত্ব দিয়েছি। আমি, আমার স্ত্রী এবং আমার মেয়ে গুলশান থানায় গেলে ওরা আমার জিডি নিতে চাইল না। বাইরে অপেক্ষমাণ ২০/২২ জন পত্রিকা ও টেলিভিশনের সাংবাদিক। সাংবাদিক ভাইদের চাপে থানার অফিসার আমাদের জিডি নিতে বাধ্য হলেন। এদিকে আমরা ভয়ানক চিন্তিত। কারণ গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, আমার ভাইকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ তুলে নেয়নি। ফলে তাকে যদি গায়েব করা হয় তাহলে আমরা কী করব?


ওইদিকে ড. শাহদিন মালিক উচ্চ আদালতে মামলা করেছেন। আদালত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশ দিল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমার ভাইকে আদালতে বা থানায় হাজির করা হোক।


আদালতের এ নির্দেশের পর রাত ১১টায় তাকে গুলশান থানায় নেওয়া হলো। পরদিন একটি জাতীয় দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠার প্রধান সংবাদে বলা হলো, আমার ভাই নাকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মরহুম সাদেক হোসেন খোকার সহযোগিতায় দুই একটি ছাত্রের লাশ ফেলবে। খোকা তখন নিউইয়র্কে ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছেন। ওই সংবাদে পুলিশের ডিবির সাবেক ডিজি মনিরুল ইসলামের বরাত দিয়ে আরও বলা হয়, আমার ভাইয়ের রাষ্ট্রবিরোধী কাজে পরামর্শ দিচ্ছে তার বড় ভাই, যে কিনা সাংবাদিক। অর্থাৎ আমি। এ খবর দেখার পর সঙ্গে সঙ্গেই আমি বিমানের টিকিট কিনি, পরদিন অস্ট্রেলিয়া চলে যাই।


৭ বছর পর আমার ছোট ভাই কারাগার থেকে ছাড়া পায়। পুলিশ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তো দূরের কথা, একটি চিরকুটও দাখিল করতে পারেনি। তারপরেও হাসিনা সরকার তার পাসপোর্ট আটকে রেখেছিল। হাসিনা বিতাড়িত হওয়ার পর সেই পাসপোর্ট ও ফেরত পায়।


হাসিনার বিতাড়নের পর এই ১ বছর হলো আমি, আমার ছোট ভাই, আমাদের পরিবার সবাই মুক্ত আলো-বাতাসে প্রাণভরে নিশ্বাস নিচ্ছি। দিন বা রাত কোথাও যেতে কোনো ভয় না। র‌্যাব এসে রাত ৩টায় উঠিয়ে নিয়ে যাবে, সেই ভয় নেই।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও