বাজেটে চ্যালেঞ্জ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির আকাঙ্ক্ষা

ঢাকা পোষ্ট ড. কাজী মারুফুল ইসলাম প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২৫, ১৩:০০

জুনে জাতীয় বাজেট ঘোষণা হবে। এই বাজেট এমন এক সময়ে ঘোষিত হচ্ছে, যখন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বেশ অস্থির ও উত্তেজনাপূর্ণ। চলমান সংসদের অনুপস্থিতি এবং সম্ভাব্য জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এবারের বাজেট ঘোষণা ও আলোচনা একটি ভিন্ন মাত্রা পাচ্ছে। প্রচলিত সংসদীয় বিতর্কের সুযোগ না থাকায়, জনগণের অংশগ্রহণের প্রশ্নটি আরও জোরালো হচ্ছে।


বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে বেশকিছু গুরুতর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এর মধ্যে অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো:



  • কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ: বিভিন্ন অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগকারীরা কঠিন সময় পার করছেন। ব্যবসা সম্প্রসারণের গতি মন্থর হওয়ায় নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রতি বছর ২২ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে এলেও, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাত মিলে মাত্র ৬ লাখ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে। ফলে তরুণ ও শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

  • রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি: কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আদায় কম হওয়ায় বাজেট ঘাটতি পূরণে সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে। সুদ পরিশোধে একটি বড় অংশ ব্যয় হওয়ায় উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করার সক্ষমতা কমে যাচ্ছে।

  • সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী: মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। এ অবস্থায় সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা ও সুবিধাভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি জরুরি, যাতে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সুরক্ষা পায়। তবে এ খাতে বরাদ্দের আকার নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

  • স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ: শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের ওপর দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নির্ভরশীল। কিন্তু এবারের বাজেটে এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে এডিপি বরাদ্দ কমানো হয়েছে, যা মানবসম্পদ উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক চাপ বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির ভারসাম্যের ওপর প্রভাব ফেলছে।


পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য রপ্তানি খাত এই শুল্কের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যদিও কিছু প্রতিযোগী দেশের তুলনায় বাংলাদেশের শুল্ক হার কম, তবুও এই চাপ রপ্তানি আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এর মোকাবিলায় দ্বিপাক্ষিক আলোচনা, রপ্তানি বাজার বৈচিত্র্যকরণ, পণ্যের মান বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ নীতি উন্নয়ন এবং বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করার মতো বহুমুখী কৌশল গ্রহণ করা জরুরি।


ভারতের বাণিজ্য নীতিতে সম্প্রতি কিছু পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে, যা বাংলাদেশের বাণিজ্যে অস্বস্তি তৈরি করেছে। স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ কিছু পণ্য আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা উভয় দেশের বাণিজ্যে প্রভাব ফেলবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারত থেকে ৯০০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে, বিপরীতে ভারতে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য। এই বাণিজ্য ঘাটতি একটি উদ্বেগের কারণ। স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানিতে বিধিনিষেধের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের ব্যয় ও সময় বাড়বে, যা প্রতিযোগিতামূলক বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।


ণমাধ্যম বলছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার হবে প্রায় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) মূল বাজেটের চেয়ে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সরকারি ব্যয় কমানোর এই প্রবণতা অতীতে খুব একটা দেখা যায়নি।


রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা এবং এনবিআর-বহির্ভূত কর ও কর ব্যতীত রাজস্ব থেকে ৬১ হাজার কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।


বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরের মূল এডিপি (২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা) থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা কম। ইসিএনইসি কর্তৃক অনুমোদিত এই উন্নয়ন বাজেট ইঙ্গিত দেয় যে, এবারের বাজেটে বড় মেগা প্রকল্পগুলোর বদলে বাস্তবায়নযোগ্য এবং মিতব্যয়ী প্রকল্পগুলোয় জোর দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতেও বরাদ্দ কিছুটা কমানো হয়েছে, যা উদ্বেগের কারণ।


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও