আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা: ঝুঁকির দিকগুলো কী

প্রথম আলো ডেভিড বার্গম্যান প্রকাশিত: ১৫ মে ২০২৫, ১৪:৪৪

২০০৮ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগ ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় ফিরে আসে। জনগণের মধ্যে ব্যাপক আশা ছিল যে তারা বিএনপির চেয়ে ভালো একটি গণতান্ত্রিক বিকল্প হিসেবে কাজ করবে; বিএনপি ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল। তবে সেই আশা শিগগিরই নিরাশায় পরিণত হয়।


নির্বাচনকে প্রভাবিত করা, স্বাধীন চিন্তা দমন, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের রাজনৈতিকীকরণ এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দ্রুত আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের বৈশিষ্ট্য হয়ে ওঠে। পূর্ববর্তী সরকারগুলোও এ ধরনের অসদাচরণের বাইরে ছিল না। তবে আওয়ামী লীগের অধীনে এর মাত্রা ও তীব্রতা ছিল অভূতপূর্ব, যা একে স্বৈরাচারী শাসন হিসেবে চিহ্নিত করার ভিত্তি তৈরি করে। শাসক দল কিছু বিশেষভাবে উদ্বেগজনক আচরণও প্রতিষ্ঠা করে।


এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, জোর করে তুলে নেওয়ার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ এবং শেখ মুজিবুর রহমানকে মহিমান্বিত করা। তবে ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনকে বাংলাদেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটি চরম সংস্করণ হিসেবেই চিহ্নিত করা সম্ভব।


১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটনাপ্রবাহ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে দেয়। ছাত্রদের নেতৃত্বে সংগঠিত প্রতিবাদকে সরকার নির্মমভাবে দমন করতে থাকে। আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী, এই সময়ে প্রায় ১ হাজার মানুষ নিহত হন। জাতিসংঘের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে সরাসরি এই কঠোর দমন-পীড়নকে আওয়ামী লীগ সরকারের ওপরের স্তরের নির্দেশনা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে গুলি করে হত্যা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।



স্বাধীনতা–পরবর্তী বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন নিষ্ঠুরতা কখনোই দেখা যায়নি। এটাকে পূর্ববর্তী কোনো সরকারের বা দলের কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করা চলে না। ৫ আগস্টে যখন সেনাবাহিনী প্রতিবাদকারীদের ওপর গুলি চালাতে অস্বীকৃতি জানায়, তখন দ্রুত সরকারের পতন ঘটে। এই পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ বিষয়ে অবস্থান কী হওয়া উচিত, তা এক জরুরি জাতীয় প্রশ্ন হয়ে ওঠে। বিশেষত দলটিকে কি নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন কি না, সে প্রশ্ন দেখা দেয়।


এ ব্যাপারে খুব একটা সংশয় নেই যে ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টের সময় অত্যন্ত গুরুতর অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এর মাত্রা এতখানি যে তা সংজ্ঞা অনুযায়ী আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যায়ে পড়তে পারে। যাঁদের বিরুদ্ধে এসব অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, তাঁরা অনেকেই সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও দলীয় নেতৃত্বের অংশ। বলা বাহুল্য, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিত এবং প্রমাণ মিললে বিচার ও দণ্ড নিশ্চিত করা প্রয়োজন।


এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন ওঠে যে খোদ দলটির ব্যাপারে কী করা হবে। একে কি বাংলাদেশে কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হবে? তারা কি জাতীয় রাজনীতিতে অংশ নিতে পারবে, বিশেষ করে সামনের জাতীয় নির্বাচনে?


ঢাকার কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অংশের উদ্যোগে এবং ইসলামপন্থী দলগুলোর দৃঢ় সমর্থনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার গত শনিবার ঘোষণা করে যে উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে।


গত সোমবার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি সংশোধনী আনে সরকার। আইনে সংশোধন এনে ‘দলের সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ’ বলার অর্থ কী, তা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এখন থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষে বা সমর্থনে কোনো প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করা নিষিদ্ধ; একইভাবে গণমাধ্যম, অনলাইন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে দলের সমর্থনে কোনো ধরনের প্রচারণা চালানো যাবে না। এমনকি মিছিল, সভা, সংবাদ সম্মেলন আয়োজন বা জনসমক্ষে বক্তব্য দেওয়াও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও