
আমেরিকান ভোক্তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে
বুধবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব আমদানির ওপর ১০ শতাংশ গ্লোবাল বেসলাইন শুল্ক ঘোষণা করেছেন; দাবি করেছেন, এই পদক্ষেপ মার্কিন অর্থনীতির ‘মুক্তি দিবস’ হিসাবে চিহ্নিত হচ্ছে। তবে যদি এই শুল্ক বজায় থাকে, তাহলে এটি মার্কিন অর্থনীতি, আমেরিকান ভোক্তা এবং বিশ্বে দেশটির অবস্থানের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হবে।
১০ শতাংশ শুল্কটি মূলত বেসলাইন। ট্রাম্পের মার্কিন অর্থনীতির মুক্তির প্রচেষ্টায় আরও অনেক বেশি উচ্চ শুল্ক আরোপিত হয়েছে। একটি উদাহরণ হলো তার ২৫ শতাংশ শুল্ক, যা সব গাড়ি আমদানির ওপর কার্যকর হয়েছে তার ‘মুক্তি দিবসে’। ট্রাম্প দাবি করেছেন, তার নীতির উদ্দেশ্য মার্কিন উৎপাদন ভিত্তির পুনরুদ্ধার করা, কিন্তু এই সক্ষমতা অর্জনের জন্য সময় দেওয়া হয়নি। ট্রাম্প অবশ্য এ বিষয়গুলোর প্রতি খুব কম গুরুত্ব দেন। গাড়ির যন্ত্রাংশের জন্য ২৫ শতাংশ শুল্কও এক মাসের জন্য বিলম্বিত হয়েছে এবং মে মাসে কার্যকর হবে। এতে গাড়ির দাম বেড়ে যাবে এবং সরবরাহ চেইনগুলো আটকে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি গাড়িনির্ভর অর্থনীতি। ভোটারদের একটি বড় অংশ এ পদক্ষেপের দ্বারা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে অন্যান্য পশ্চিমা দেশের তুলনায়। কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর ট্রাম্পের মার্চে আরোপিত শুল্ক ইতোমধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। বেশির ভাগ মার্কিন গাড়ি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এ দুই দেশের সঙ্গে সম্পৃক্ত। দাম বৃদ্ধির ধারণাটি প্রায় সর্বজনীন।
কিন্তু এ প্রবণতা অন্য অনেক সরবরাহ চেইনের মধ্যেও পরিলক্ষিত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সহযোগী দেশগুলোর ওপর উচ্চ শুল্ক চাপানো হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যগুলো ২০ শতাংশ শুল্কের সম্মুখীন হবে। জাপানি পণ্যসম্ভারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ২৪ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হবে। তাইওয়ানের পণ্য, যার সরবরাহকৃত চিপ মার্কিন প্রযুক্তি শিল্পের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, ৩২ শতাংশ শুল্কের সম্মুখীন হবে। ভারত ও ভিয়েতনাম, যেসব দেশে ট্রাম্পের প্রথম প্রশাসন কাজ শুরু করার পর থেকেই মার্কিন সরবরাহ চেইনগুলোর পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে, তারা যথাক্রমে ২৬ ও ৪৬ শতাংশ শুল্কের মুখোমুখি হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র মূল্যস্ফীতির আঘাত মোকাবিলার জন্য তেমন প্রস্তুত নয়। দেশটি এখনো কোভিড-১৯ মহামারির সময় বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনগুলোর সংকটের কারণে সৃষ্ট সর্বশেষ মূল্যস্ফীতির আঘাত মোকাবিলার জন্য লড়াই করছে এবং ২০২২ সালের রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেনে হামলার আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অভিঘাত মোকাবিলা করছে। ট্রাম্পের শুল্কের মূল্যস্ফীতির প্রভাব শিগগিরই অনুভূত হবে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- বৈদেশিক বাণিজ্য নীতি
- শুল্ক আরোপ