উত্তরার সাহসী নারী ও সরকারের ‘শয়তান ধরা অভিযান’

প্রথম আলো উত্তরা সোহরাব হাসান প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:১৬

বাংলাদেশে অন্যায়ের প্রতিবাদ করার মতো মানুষ কমে গেছে। তা-ও যদি সেই অন্যায় হয়ে থাকে গরিব মানুষের ওপর। কেউ প্রতিবাদ করতে চান না। কেননা যাঁরা অন্যায় করেন, তাঁরা ক্ষমতাবান। কেউ অর্থে, কেউ অস্ত্রে। কে যায় খামোখা ঝামেলা করতে?


কিন্তু উত্তরার মেহেবুল হাসান ও নাসরিন আক্তার যখন দেখলেন, একটি মোটরসাইকেলে দুই তরুণ প্রচণ্ড শব্দে সামনের রিকশাকে ধাক্কা দিলেন, তাঁরা প্রতিবাদ করলেন। ওই রিকশায় শিশুসন্তানসহ এক দম্পতি যাচ্ছিলেন। যেকোনো বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।


কিন্তু অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে মেহেবুল ও নাসরিনের জীবন বিপন্ন হওয়ার উপক্রম। প্রথমে দুই মোটরসাইকেলে আসা তিন যুবক তাঁদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লেন। এরপর তাঁরা ওই যুগলকে আক্রমণ করলেন। একজন টেলিফোন করে অন্য সহযোগীদের ডেকে আনেন, যাঁদের একজনের হাতে ছিল ধারালো অস্ত্র।


ভাইরাল হওয়া ১৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, একজন নারী ও একজন পুরুষের ওপর দুজন ধারালো অস্ত্র (রামদা) দিয়ে হামলা করছেন। তাঁরা বাঁচার জন্য চিৎকার করছেন। একপর্যায়ে ফুটপাত ঘেঁষে রাখা একটি রিকশার পেছনে আশ্রয় নেন হামলার শিকার পুরুষটি। তখন এক যুবক রিকশার সামনের দিকে ঘুরে তাঁর ওপর হামলা করেন। নারীর ওপর হামলাকারী যুবকও দৌড়ে রিকশার কাছে আসেন। এরপর হামলার শিকার নারী দৌড়ে পুরুষের কাছে এসে ঢাল হয়ে তাঁকে রক্ষার চেষ্টা করেন।


বুধবার প্রথম আলোর প্রথম পাতায় ছয়টি ছবি ছাপা হয়েছে। এতে দেখা যায়, কখনো নারীটি ধারালো অস্ত্রের আঘাত থেকে বাঁচার জন্য আকুতি জানাচ্ছেন, কখনো পুরুষটির সামনে এসে দাঁড়াচ্ছেন, তাঁকে রক্ষার জন্য। অন্যদিকে অস্ত্রধারী একের পর এক আঘাত করে যাচ্ছেন। যুবকদের আঘাতে তাঁদের শরীর রক্তাক্ত হয়। হাত পা কেটে যায়। এরপরও ওই যুগল হাল ছেড়ে দেননি। তাঁদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন জড়ো হন। এগিয়ে আসে আশপাশে টহলে থাকা পুলিশ সদস্যরাও।



একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর রোডে কয়েকজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এক দম্পতিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাচ্ছে—এমন খবর এলে তৎক্ষণাৎ পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জনগণের সহায়তায় এ ঘটনায় জড়িত মো. মোবারক হোসেন ও রবি রায়কে গ্রেপ্তার করে।


এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নাসরিন আক্তার বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করেছেন। মঙ্গলবার বিকেলে আবদুল্লাহপুর পশ্চিম পাড়া থেকে রামদা দিয়ে ভুক্তভোগীদের কুপিয়ে আহত করা আসামি আলফাজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে গাজীপুরের কোনাবাড়ী থেকে সজীবকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর আসামি মেহেদী হাসান সাঈফকে টঙ্গীর মাজার বস্তি এলাকা থেকে বুধবার ভোরে গ্রেপ্তার হন। তাঁর কাছ থেকে ঘটনায় ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল ও ঘটনার সময় তাঁর গায়ে থাকা একটি শার্ট জব্দ করা হয়।


কারা এই যুবক? পুলিশের দাবি, আটক সবাই স্থানীয় অপরাধী চক্রের সদস্য ও ভাসমান। তাঁরা মোটরসাইকেলে দীর্ঘদিন নানা অপরাধ করে আসছিলেন। তাহলে আগে ধরা হলো না কেন? ঢাকা শহরে কিশোর গ্যাং ও ‘বুড়ো’ গ্যাংদের দৌরাত্ম্য চলছে বহু বছর ধরে।‘ বুড়ো’ গ্যাং মানে কৈশোরোত্তীর্ণ বয়সী।


আমরা ধারণা করেছিলাম, অপারেশন ডেভিল হান্ট এই অপরাধীদের সবাইকে একে একে ধরবে। কিন্তু কোথাও অঘটন না ঘটা পর্যন্ত কেউ ধরা পড়ে না। তাহলে সরকার কাদের বিরুদ্ধে এই অভিযান চালাচ্ছে?


স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, যত দিন ‘ডেভিলরা’ থাকবে, তত দিন যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান ‘ডেভিল হান্ট’ চলবে। ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে অভিযান চলছে। যাঁরা ধরা পড়ছেন, তাঁদের বেশির ভাগই ক্ষমতাচ্যূত রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও