দিল্লিতে কেজরিওয়াল ‘ডাউন’, কিন্তু এখনো ‘আউট’ নন

প্রথম আলো সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:৪৪

দীর্ঘ ২৭ বছর পর বিজেপি যে এবার দিল্লি দখল করবে, সেই দেয়াললিখন স্পষ্ট ছিল। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ললাটলিখনও। আম আদমি পার্টির (আপ) সর্বাধিনায়ক কোনো লিখনই খণ্ডাতে পারেননি। পারার কথাও ছিল না। নিজে হারলেন, দলকেও ডোবালেন। এখন তাঁর আত্মমন্থনের সময়। 


একদিকে কেজরিওয়ালের একের পর এক ভুল ও চারিত্রিক পরিবর্তন; অন্যদিকে বিজেপির যুদ্ধংদেহী মনোভাব লড়াইটা অসম করে তুলেছিল। দিল্লিবাসীর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, আপ নামক ‘আপদ’ বিদায় না করলে জনতাকে পস্তাতে হবে। জনজীবন জেরবার হবে। 


দুই-আড়াই বছর ধরে দিল্লিতে রাজনীতি ও শাসনের নামে যা চলছিল, তা ছিল ওই হুংকারের সংক্ষিপ্ত ট্রেলার। শেষ পর্যন্ত দিল্লিবাসী মোদির গ্যারান্টির ওপর ভরসা রাখাকেই ঠিক মনে করেছেন। আগামী পাঁচ বছর তাঁর প্রতিশ্রুতি পালনের সময়। 


এটা ঠিক, ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত কেজরিওয়াল ও তাঁর দল নিরুদ্বেগে রাজ্য চালিয়েছে। বিকল্প রাজনীতির ক্যানভাসে বিরোধীদের আঁচড় পর্যন্ত কাটতে দেয়নি। উপায়ান্তর না দেখে কেজরিওয়ালের কর্তৃত্বে মোদি প্রথম রাশ টানেন ২০২১ সালের মার্চে দিল্লি শাসন-সম্পর্কিত আইন সংশোধন করে। 


ওই সময় নির্বাচিত সরকারের চেয়ে বেশি ক্ষমতাবান করে তোলা হয় অনির্বাচিত ও কেন্দ্র মনোনীত উপরাজ্যপালকে। ওই বছরের নভেম্বরেই কেজরিওয়াল করে বসেন তাঁর রাজনৈতিক জীবনের প্রথম বড় ভুল। চালু করেন নতুন আবগারি (মদ) নীতি। সেই নীতি যে তাঁর গলার কাঁটা হয়ে খচখচ করবে, তা বোঝেন পরের বছর। উপরাজ্যপাল বিনয় কুমার সাকসেনার নীতি কার্যকরের ক্ষেত্রে অসম্মতি জানানোর পাশাপাশি সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করার সময়। 



কেজরিওয়ালের ধাক্কা খাওয়ার সেই শুরু। তত দিনে অভিযোগ উঠে গেছে, নতুন নীতি রূপায়ণের জন্য আপ নেতৃত্ব মদ কারবারিদের কাছ থেকে ১০০ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন। দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের ঢেউয়ে ভেসে ক্ষমতায় আসা আপ নেতৃত্ব সততা ও স্বচ্ছতার যে চালচিত্র তৈরি করেছিলেন, সেই প্রথম তা কালিমালিপ্ত হলো। একে একে জেলে যেতে হয় সত্যেন্দ্র সিং, মণীশ সিসোদিয়া, সঞ্জয় সিং, কেজরিওয়ালদের। বিতর্কের মুখে নীতি প্রত্যাহার করেও পার পায়নি দল। 


দিল্লিবাসী তবু কেজরিওয়ালকে ভরসা করেছিলেন জনমুখী নীতির কারণে। শুরু থেকেই দরিদ্রদের আর্থিক সুরাহার দিকে তিনি নজর দিয়েছিলেন। গরিব, প্রান্তিক, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের নয়নের মণি হয়ে উঠেছিলেন। প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে তিনি পাড়া-মহল্লায় নিয়ে এসেছিলেন। বিনা খরচে ডাক্তার-বদ্যি ওষুধের ব্যবস্থায় খোলেন প্রায় ৫০০ মহল্লা ক্লিনিক। এর দরুন দিল্লি পৌরসভার ভোটেও বিজেপিকে হারিয়ে আপ জয়ী হয়। প্রমাদ গোনে বিজেপি। রাশ টানতে আইন বদলে পৌরসভাকেও কেন্দ্র নিয়ে আসে উপরাজ্যপালের এখতিয়ারে। গণতন্ত্রের অন্তর্জলি-যাত্রা পাকাপাকি করে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরায় কেন্দ্র। উপরাজ্যপালের সম্মতি বিনা কিচ্ছুটি করার জো রইল না দিল্লির নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর।


মোদির মনোভাব ও আগ্রাসী নীতি আঁচ করে কেজরিওয়াল শোধরাতে পারতেন। কিন্তু ২০২২ সালে পাঞ্জাব দখল তাঁর উচ্চাশা তুঙ্গে তোলে। কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতের নীতি যত তীব্র হয়, ততই তিনি কোণঠাসা হতে থাকেন রাজনৈতিকভাবে। অথচ পূর্বসূরি শীলা দীক্ষিতের শাসনের স্টাইল দেখে তিনি কৌশলী হতে পারতেন। মানুষের স্বার্থে শীলা কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের সাহায্য নিয়েছিলেন। ডিজেলচালিত সরকারি বাস তুলে দিয়ে গ্যাসচালিত করতে, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বেসরকারীকরণে, রাস্তা-ফ্লাইওভারের মতো অবকাঠামো নির্মাণ কিংবা হাসপাতাল গড়তে জমি পেতে। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও