রাজস্ব আদায়ে ভ্যাট বাড়ানোই সহজ পথ?
অর্থবছরের মাঝামাঝি প্রায় একশো পণ্যের ওপর মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা ফোরামে সরকার সমালোচনার মুখে পড়ায় কিছুটা পিছু হটেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। রেস্তোরাঁসহ কিছু পণ্য ও সেবায় ভ্যাট আগের মতোই বহাল থাকবে বলে জানানো হয়েছে। গত ১৬ জানুয়ারি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সাধারণ মানুষের ওপড় প্রভাব ফেলে এমন কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য এবং ওষুধ ও রেস্তোরাঁর মতো খাতে সম্প্রতি বৃদ্ধি করা ভ্যাটের হার পর্যালোচনা করছে সরকার। তিনি বলেন, ‘সরকার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার(আইএসপি), ফোন, আমদানি করা বিদেশি জুসের মতো কিছু পণ্যের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধি করেছে যা খুব বেশি লোক কেনে না এবং এগুলোর তেমন প্রভাব পড়ে না। তা সত্ত্বেও সরকার কিছু পণ্যের ওপর ভ্যাট না বাড়ানোর বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করছে।
প্রশ্ন হলো, বছরের এই সময়ে এসে কেন সরকারকে ভ্যাট বাড়ানোর মতো একটি অজনপ্রিয় উদ্যোগ নিতে হলো যখন এমনিতেই দেশের মানুষ নানামুখী আর্থিক চাপে রয়েছে; যখন অনেক শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে প্রচুর মানুষ বেকার হয়েছেন; যখন অনেক প্রতিষ্ঠানে খরচ কমানোর জন্য কর্মী ছাঁটাই করা হচ্ছে এবং অনেক প্রতিষ্ঠানে হয় বেতন বন্ধ হয়ে গেছে না হয় বেতন অনিয়মিত হয়ে গেছে? গত এক দশকে উচ্চ প্রবৃদ্ধির মধ্যেই যেখানে কাঙ্ক্ষিত হারে কর্মসংস্থান হয়নি; যখন দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছাড়িয়েছে দুই অংকের ঘর—এমন পরিস্থিতিতে ওষুধ, এলপি গ্যাস, মোবাইলে ফোনের সিম কার্ডের মতো প্রয়োজনীয় পণ্যসহ শতাধিক পণ্য ও সেবায় আমদানি, উৎপাদন, সরবরাহ পর্যায়ে শুল্ক ও কর বাড়ানোর সিদ্ধান্তটি সরকার নিলো, তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন আছে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- রাজস্ব আদায়
- ভ্যাট ফাঁকি