
রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মাধ্যমে সুনির্বাচনী প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ
ড. আল মাসুদ হাসানুজ্জামান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। তিনি ব্রিটিশ কাউন্সিল স্কলার, সিনিয়র ফুলব্রাইট স্কলার এবং জাপান ফাউন্ডেশন ফেলো। সংসদীয় প্রক্রিয়া, বিরোধীদলীয় রাজনীতি, রাজনৈতিক দল, তুলনামূলক রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনাসংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দিদারুল হক
স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে জনগণের কাছে আস্থাশীল কেন করা যায়নি?
স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনৈতিক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোয় ক্ষমতাসীন সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানো যায়নি। অতীতে নির্বাচনে বিভিন্ন হস্তক্ষেপের কারণে পুরো নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপরই জন-অনাস্থা তৈরি হয়েছিল, সেটা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। জন-অনাস্থার প্রেক্ষাপটে ক্রমান্বয়ে নিরপেক্ষ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচনের দাবি জোরদার হতে থাকে। ফলে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংযুক্ত করা হয়। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যেসব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সেগুলো তুলনামূলক গ্রহণযোগ্য হয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। এখন নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের দাবি যথার্থভাবে এসেছে। এ সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বলে বক্তব্য রাখছেন। এরই মধ্যে এ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চলমান কথায় সেগুলো ধ্বনিত হচ্ছে। এখন ভবিষ্যতে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচনী সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সময়ের দাবি। রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মাধ্যমে সুনির্বাচনী প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা মুখ্য হওয়া উচিত। সুষ্ঠু নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে পারলেই মানুষ স্বাধীনভাবে তার ভোট দিতে পারবে। বাংলাদেশে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন থাকলেও অতীতে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি। তাই রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মাধ্যমে সর্বজনস্বীকৃত সংস্কারগুলো আনতে হবে। এর মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া সুষ্ঠু করার জন্য সংশ্লিষ্ট অংশীজন যারা আছেন, তাদের প্রত্যেককেই এ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করতে হবে এবং সুষ্ঠু সমন্বয় থাকতে হবে। রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করা সম্ভবপর হলে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর ও জনগণের পছন্দের ভোটের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।