মাঙ্কিপক্স: ইতিহাস বর্তমান প্রাদুর্ভাব এবং ভবিষ্যৎ

জাগো নিউজ ২৪ ড. মো. হাসিনুর রহমান খান প্রকাশিত: ১৯ আগস্ট ২০২৪, ১১:২৩

মপক্স, যা আগে মাঙ্কিপক্স নামে পরিচিত ছিল। এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা বেশ জোরালো ভাবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। গত ১৪ আগস্ট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মাঙ্কিপক্স নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো একটি বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। এর আগে জুন ২০২২ সালে মাঙ্কিপক্স নিয়ে একইভাবে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল।


মপক্স প্রথমবারের মতো ১৯৫৮ সালে আবিষ্কৃত হয়। সে বছর ডেনমার্কে গবেষণাগারে পোষা বানরের মধ্যে দুটি মহামারি ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে এটি বানরের মধ্যে আবিষ্কৃত হওয়ায় এই রোগটির নাম হয় ‘মাঙ্কিপক্স’। তবে, গবেষণায় পরে প্রমাণিত হয় যে এই রোগের মূল বাহক সম্ভবত বিভিন্ন রকমের ছোট স্তান্যপায়ী প্রাণী। বিশেষ করে আফ্রিকান রডেন্টস এবং অন্য ছোট প্রাণী। মানুষের মধ্যে প্রথম মপক্স সংক্রমণের ঘটনা ১৯৭০ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোতে। সে সময়ে বিশ্বব্যাপী ছোট পক্স (গুটি বসন্ত) নির্মূল করার প্রচেষ্টা চলছিল এবং এর ফলে ছোট পক্স ভাইরাসের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, যা মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ক্ষেত্রে একটি প্রভাবক হতে পারে বলে মনে করা হয়।



যা জানা যায়, তাতে মাঙ্কিপক্স ভাইরাসটি এক ধরনের অরথোপক্সভাইরাস, যা ভ্যারিওলা ভাইরাসের (যা গুটি বসন্তের কারণ) সাথে সম্পর্কিত। এই ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে দুটি প্রধান উপায়ে: ১. প্রাণী থেকে মানব সংক্রমণ: মাঙ্কিপক্স মূলত একটি জুনোটিক (পশু থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত) রোগ, অর্থাৎ এটি প্রধানত প্রাণী থেকে মানুষে ছড়ায়। আফ্রিকার রডেন্টস, বিশেষ করে গাম্বিয়ান পোউচড র‌্যাট এবং ডরমাইস, এই ভাইরাসের প্রধান বাহক। সংক্রমণ সাধারণত সংক্রমিত প্রাণীর রক্ত, দেহের তরল পদার্থ বা চামড়া/শ্লেষ্মা ঘায়ের সাথে সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমে ঘটে। ২. মানুষ থেকে মানুষ সংক্রমণ: মাঙ্কিপক্সের মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ ঘটে সংক্রমিত ব্যক্তির শ্বাসযন্ত্রের স্রাব, ক্ষত থেকে নির্গত তরল বা দূষিত বস্তু যেমন বিছানার চাদর বা কাপড়ের মাধ্যমে। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদি ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ এবং যৌনমিলনের মাধ্যমেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।


মাঙ্কিপক্সের ইনকিউবেশন পিরিয়ড, অর্থাৎ সংক্রমণের পর লক্ষণ দেখা দেওয়ার সময়সীমা, সাধারণত ৬ থেকে ১৩ দিন, তবে এটি ৫ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত হতে পারে। রোগটি সাধারণত স্বল্পমেয়াদি হলেও কিছু ক্ষেত্রে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে, বিশেষ করে শিশু, গর্ভবতী নারী এবং কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে। যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল, যেমন এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তি বা ক্যানসার, অর্গান ট্রান্সপ্লান্ট গ্রহণকারীরা, তাদের জন্য মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ মারাত্মক হতে পারে। এছাড়া যারা সংক্রমিত রোগীদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেন, যেমন স্বাস্থ্যকর্মী, তাদের জন্য মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি।



মাঙ্কিপক্সের লক্ষণগুলো সাধারণত ফ্লু-এর মতো শুরু হয়, যার মধ্যে থাকে জ্বর, মাথাব্যথা, পেশি ব্যথা এবং ক্লান্তি। এর সাথে লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া (লিম্ফ্যাডেনোপ্যাথি) ঘটে, যা মাঙ্কিপক্সকে গুটি বসন্ত থেকে আলাদা করে। এরপর ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দেয়, যা মুখ থেকে শুরু করে শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এই ফুসকুড়ি বিভিন্ন পর্যায়ে যায়: প্রথমে ম্যাকুলস, তারপর প্যাপুলস, ভেসিকলস, পুস্টুলস, এবং শেষে স্ক্যাব।


মাঙ্কিপক্সের জন্য নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। সাধারণত রোগটি ২ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়। তবে, গুরুতর ক্ষেত্রে রোগীদের সহায়ক চিকিৎসা প্রয়োজন হয়, যেমন তরল ও ইলেক্ট্রোলাইট সাপোর্ট, সংক্রমণের চিকিৎসা, এবং অন্য উপসর্গের ব্যবস্থাপনা, যা জানা যায় তাতে, মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের দুটি জেনেটিক ক্লেড বা শাখা রয়েছে, ক্লেড I এবং II। একটি ক্লেড হলো ভাইরাসের একটি বিস্তৃত গোষ্ঠী, যা কয়েক দশক ধরে বিবর্তিত হয়েছে এবং জেনেটিক ও ক্লিনিক্যালভাবে স্বতন্ত্র। ২০২২ সালের প্রাদুর্ভাবের জন্য ক্লেড II দায়ী ছিল, তবে ক্লেড Ib বেশি গুরুতর রোগ সৃষ্টি করে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও