কেতাবে আছে গোয়ালে নাই

জাগো নিউজ ২৪ ড. হারুন রশীদ প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২৪, ১১:১৯

‘ভরবো মাছে মোদের দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ’- প্রতিপাদ্যে পালিত হচ্ছে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৪। ৩০ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত পালিত হবে মৎস্য সপ্তাহ। কিন্তু মাছ চাষ করতে হলে তো জল বা জলাশয়ের দরকার। জলই যদি না থাকে তাহলে মাছ থাকবে কোত্থেকে। জলের আধার হচ্ছে নদী-নালা-খাল-বিল। কিন্তু নদী দখল দূষণে হারিয়ে যাওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে মাছের উৎপাদন অনেক কমে গেছে। এখন মাছ উৎপাদনে একটি বিপ্লব ঘটলেও তা হয়েছে নিছক বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে। এটা অনেকটা কাজির গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নাই’র মতো। কারণ বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হলেও সেই মাছে বাঙালি রসনাতৃপ্ত হয় না। এছাড়া মাছের উৎপাদন বাড়লেও তাতে পুষ্টি চাহিদা মিটছে না। এ জন্য দেশীয় মাছের উৎপাদন বাড়াতে হবে। প্রাকৃতিকভাবেই যেন দেশি মাছ উৎপাদন বৃষ্টি পায় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। আর মাছে-ভাতে বাঙালিকে প্রাকৃতিক মাছের অমৃতের স্বাদ দিতে হলে নদী-নালা-খাল-বিল বাঁচাতে হবে সবার আগে।


এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, দেশে ৫৪ প্রজাতির মিঠাপানির মাছ প্রায় বিলুপ্ত, ২৮ প্রজাতির মাছ চরম বিপন্ন এবং ১৪ প্রজাতির মাছ সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে। এর প্রধান কারণ বাংলাদেশ এখন প্রায় খাল-বিল-নদী-নালা শূন্য। খাল-বিল ভরাট করে চলছে নানা স্থাপনা তৈরির মহোৎসব। প্রশ্ন হচ্ছে, খাল-বিল না থাকলে মাছ থাকবে কোত্থেকে? আর যেসব নদী অবশিষ্ট রয়েছে, সেগুলোতে দূষণের মাত্রা এত বেশি যে মাছের পক্ষে বেঁচে থাকা কঠিন। বুড়িগঙ্গাসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর অবস্থা আরো সঙ্গীন। হাজারি বাগের টেনারি শিল্প সাভারে স্থানান্তরের পর বুড়িগঙ্গা তা রূপ ফিরে পাচ্ছে এটা আশার কথা। এভাবেই অন্যান্য নদীগুলোকেও দূষণ থেকে রক্ষা করতে হবে।


পৃথিবীর আশ্চর্যতম এক নদীর নাম হালদা। চট্টগ্রামের ব্যতিক্রমী এই নদীতেই মাছ পূর্ণিমা-অমাব্যসার একটি বিশেষ সময়ে ডিম ছাড়ে। বহু সংখ্যক মানুষের জীবন-জীবিকা নির্বাহ হয় এই নদীকে কেন্দ্র করেই। নদীর পানিও ভূউপরিস্থ জলের আধার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। শহরে এই নদী থেকেই পানি শোধন করে তা পানের জন্য সরবরাহ করা হয়। অথচ দখল দূষণে এই নদীও মৃতপ্রায়। হালদা দখল করে হচ্ছে ইটভাটা, বসতবাড়ি। এটা এক আত্মঘাতী প্রবণতা। যেখান থেকে শত শত মণ মাছের ডিম উৎপাদন হয় সেখানে এখন মাছের এক মণ ডিম পাওয়াও এখন দুস্কর। এরফলে মাছের অভাব যেমন দেখা দিচ্ছে, তেমনি নদীতীরবর্তী বহুসংখ্যক মানুষ তাদের জীবিকা হারিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এটা মনে রাখা দরকার হালদা নদী বাঁচলেই প্রাকৃতিক মাছের বিশাল এক ভাÐার রক্ষা পাবে। হালদা একটি বিশেষ ধরনের নদী একে রক্ষা করতে হবে যে কোনো মূল্যে। সুন্দরবন যেমন অনন্য, আমাদের দেশকে পৃথিবীর বুকে তুলে ধরবে এর রূপ-রস-গন্ধ দিয়ে। তেমনি হালদাও। একটি সুন্দরবন যেমন সৃষ্টি করা সম্ভবনা কৃত্রিমভাবে। তেমনি হালদাও। এই বিশিষ্টতার মূল্য দিতে জানতে হবে।


কৃষিজমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে এই কীটনাশক বৃষ্টির পানি বা সেচের মাধ্যমে বিল, জলাশয়গুলোতে গিয়ে পড়ে এবং মাছের বেঁচে থাকার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। এভাবে প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট নানা কারণে আস্তে আস্তে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে মাছ। বর্তমানে মৎস্যচাষিরাও এমন প্রজাতির মাছ চাষ করছেন, যেগুলো অতি অল্প সময়ে দ্রæত বর্ধনশীল। বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক শুধু সেইসব মাছ চাষের কারণে এবং উন্মুক্ত জলাশয়ে দেশি মাছ চাষ করার ব্যাপারে অনীহার কারণেও আমরা হারিয়ে ফেলছি দেশীয় নানা মাছ। চাষের এসব মাছে কোনো স্বাদ নেই। অথচ ছোট-বড় নানা দেশি মাছের স্বাদ সে তো অতুলনীয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও