চিকিৎসা ব্যয় কমাতে পারে মেডিটেশন

বণিক বার্তা শ্যামল আতিক প্রকাশিত: ২১ মে ২০২৪, ১১:৫৬

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুসারে, ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ জনসংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৮০ হাজার, ২০২২ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৫৩ লাখ। জনমিতি বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রবীণ জনগোষ্ঠীর বৃদ্ধির এ ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। জনসংখ্যার পিরামিড দেখলে বোঝা যায়, ২০৩০ সালের পর থেকে এ বৃদ্ধির ধারা প্রকট হতে শুরু করবে। 


আমরা সবাই জানি, আমাদের জনগোষ্ঠীতে এখন তরুণদের সংখ্যা বেশি। জনমিতির ভাষায় একে বলা হয় ডেমোগ্রাফিক বোনাস। রাস্তাঘাট, হাটবাজার যেখানেই তাকাই—সবদিকেই তরুণ জনসংখ্যার আধিক্য। কিন্তু আমরা কি একটু ভেবে দেখেছি, আজ যাদের আমরা তরুণ দেখছি, ঠিক ২০ বছর পর তাদের কয়জনকে আমরা তরুণ বলতে পারব। যদি আরেকটু ভেঙে বলি, এ তরুণ জনগোষ্ঠীটিই ভবিষ্যতে প্রবীণ জনগোষ্ঠীতে পরিণত হবে। এটাও সত্য, বয়স যত বাড়তে থাকে নানা ধরনের স্বাস্থ্য জটিলতা বাড়তে থাকে। 


আজকে যে মানুষগুলোকে আমরা রাস্তাঘাটে হাটবাজারে দেখতে পাচ্ছি তাদের বড় একটি অংশ ভবিষ্যতে দেশ-বিদেশের নানা হাসপাতালগুলোয় ছুটোছুটি করবে চিকিৎসার জন্য। বুঝতেই পারছেন, দেশের বিদ্যমান হাসপাতালগুলোর ওপর কেমন চাপ বাড়বে। এছাড়া মানুষজন প্রবীণ হতে থাকে, তার কর্মক্ষমতাও কমতে থাকে (কিছু ব্যতিক্রম বাদে)। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা উপার্জন করার মতো অবস্থায় থাকে না। একদিকে উপার্জন নেই, অন্যদিকে চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে যাওয়া। দিন শেষে বাড়তি এ খরচের বোঝা রাষ্ট্রের ওপরই এসে পড়বে। 


তার সঙ্গে যোগ হচ্ছে আরেকটি আশঙ্কা। একাধিক রোগের বোঝা। আগে একজন মানুষের সাধারণ একটি অথবা দুটো রোগ থাকত। এখন একই ব্যক্তির মধ্যে একাধিক রোগের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। অধিকাংশ বয়স্ক মানুষের মধ্যেই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তার সঙ্গে আরো যোগ হয়েছে কিডনি জটিলতা, হাড়ক্ষয়, স্ট্রোক, অনিদ্রা, ক্যান্সার, ডিমেনশিয়াসহ নানা জটিল ব্যাধি। অর্থাৎ এখন প্রবীণ মানুষজনের মধ্যে রোগের সংখ্যা বেশি। রোগের সংখ্যা বেশি মানে চিকিৎসা ব্যয় বেশি। 


আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে খুব বেশি উচ্ছ্বসিত হওয়ার সুযোগ নেই। সীমিত বাজেট ও জনবল, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, সঠিক ব্যবস্থাপনাসহ অনেক কিছুরই ঘাটতি আছে। তার সঙ্গে যদি প্রবীণ মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং প্রবীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে যদি মাথাপিছু রোগের উপস্থিতি বৃদ্ধি পায়, তাহলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য বাজেটের ওপর কী পরিমাণ চাপ পড়বে তা সহজেই অনুমান করা যায়। 


বুঝতেই পারছি, ভবিষ্যতে আমরা একটি জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছি। তাহলে সমাধান কোন পথে? এক্ষেত্রে দুটো সমাধান হতে পারে। এক. চিকিৎসা খাতে ব্যয় এবং পুরো স্বাস্থ্যসেবার অবকাঠামো এমনভাবে প্রস্তুত করা যেন তা বাড়তি এ চাপ সামলাতে পারে। দুই. দেশের জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশকে সুস্থ জীবনাচারে (অর্থাৎ সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম ও ইতিবাচক দৃষ্টভঙ্গি লালন) অভ্যস্ত করিয়ে রোগ ও বার্ধক্যজনিত শারীরিক সমস্যার লাগাম টেনে ধরা। 


প্রথম সমাধান নিয়ে কারো মধ্যে কোনো প্রশ্ন নেই। কারণ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রস্তুতি আমাদের মধ্যে থাকতেই হবে। তবে বুদ্ধিমান যে কেউই দ্বিতীয় মতের পক্ষেও গুরুত্ব দেবেন। কারণ এটাই উত্তম পন্থা। আসলে আমাদের জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশকে যদি সঠিক খাদ্যাভ্যাস, যোগ ব্যায়াম এবং মেডিটেশনে উদ্বুদ্ধ করাতে পারি, তাহলে জাতির সামষ্টিক স্বাস্থ্যে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা সম্ভব। এতে রোগের প্রকোপ কমিয়ে আনার পাশাপাশি রাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ব্যয়কেও উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা সম্ভব। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও