You have reached your daily news limit

Please log in to continue


হারাতে দেবো না কিছুতেই

আজ আবদুল গাফফার চৌধুরীর দ্বিতীয় মৃতুবার্ষিকী। বাবা মারা যাওয়ার পর আমি দুজন অভিভাবক পেয়েছিলাম। এদের একজন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মহিউদ্দিন ভাই, আরেকজন গাফফার ভাই। ২০২২ সালে কিছুদিনের ব্যবধানে দুজনেই লোকান্তরিত হয়ে আমাকে অভিভাবকহীন করে গেছেন।

কিছু কিছু মৃত্যু থাকে, যে মৃত্যুতে প্রিয়জনের চোখ পাথর হয়ে যায়, তাই জল পড়ে না; কিন্তু মাথা বনবন করে ঘোরে। গাফফার ভাই যেদিন মারা গিয়েছিলেন, সেদিন অফিসে বসে যখন তার মৃত্যুসংবাদ শুনেছিলাম, আমার হয়েছিল সেই দশা। শুধু মাথা ঘুরলেও চলত; কিন্তু ওই অবস্থায় রিসিভ করতে হচ্ছিল একের পর এক ফোন। গাফফার ভাই তার অন্তত ১০-১২টি কলামে আমার কথা উল্লেখ করেছিলেন বলে অনেকেই ভেবেছেন আমার কাছে তার মৃত্যুর প্রকৃত খবরটা পাওয়া যাবে। এদেশে বেআক্কেল লোকের অভাব নেই, ওপারের লোকটির মানসিক অবস্থা বুঝলেও কথা দীর্ঘ করা চাই। যা হোক, ফোন রিসিভ করতে করতে আমি ভাবছিলাম এখন আমার কী করা উচিত। চট করে করণীয় ঠিক করে ফেলেছিলাম। আমাকে যেতে হবে চতুর্থতলার অ্যাকাউন্টস সেকশনে। হতবিহ্বল আমি লিফ্ট ব্যবহার করতেও ভুলে যাই, সিঁড়ি দিয়ে অ্যাবসেন্ট মাইন্ডেড হয়ে পড়ে যাই পা পিছলে। সে অবস্থায় অ্যাকাউন্টস সেকশনে গিয়ে বলি, গাফফার ভাই মারা গেছেন, তার লাশের সঙ্গে নিশ্চয়ই তার মেয়েও আসবেন। গাফফার ভাইয়ের পাওনা হিসাব-নিকাশ করে ফেলেন, আমি সাইফুল ভাইয়ের (সম্পাদক) সঙ্গে কথা বলে নেব। টাকাটা যেন তার মেয়ের হাতে তুলে দিতে পারি। পরদিন অবশ্য বাংলাটিভির পিংকি আপা, যিনি গাফফার ভাইয়ের খুব ঘনিষ্ঠজন ছিলেন, তিনিও গাফফার ভাইয়ের সম্মানির টাকা দ্রুত দেওয়ার কথা বললেন। তিনি জানতেন না যে আমি ইতোমধ্যেই প্রক্রিয়া শুরু করেছি। আমরা গাফফার ভাইয়ের পাওনা কড়ায়-গণ্ডায় তার মেয়ের হাতে বুঝিয়ে দিয়েছিলাম।

গাফফার ভাইয়ের লাশ দেখতে শহিদ মিনারে যেতে পারিনি, গিয়েছিলাম প্রেস ক্লাবে। সে সময় শুধু মনে হয়েছিল, মানুষের তৈরি বিধান প্রয়োজনে পরিবর্তন করা যায়, প্রকৃতির বিধান যায় না। এই লোকটির সঙ্গে কোনো শক্তির বলেই আর কথা বলতে পারব না। কত কথা যে বলেছি তার সঙ্গে! প্রথমে বলে নিই আমার একটি অভিমানের কথা বলে। এই অভিমান আমার কোনোদিনও যাবে না। মৃত্যুর ৩-৪ মাস আগে তাকে ফোনে বলেছিলাম, গাফফার ভাই, আমি চাই আপনার কবর হবে শহিদ মিনারের পাশে। আপনি আপনার কলামে এ আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করুন। এরপর আমরা বিষয়টি নিয়ে ক্যাম্পেইন করব, প্রধানমন্ত্রীর কান পর্যন্তও পৌঁছানোর চেষ্টা করব। তিনি রাজি হননি। বলেছিলেন, আমার কবরের জায়গা ঠিক করা আছে স্ত্রীর পাশে। আমি বলেছিলাম, আপনি তো শুধু আপনার স্ত্রীর নন, আপনি গোটা জাতির। তাছাড়া আপনাদের দেখা হবে বেহেশতে। এ কথায় কোনো কাজ হয়নি। যা হোক, এবার মূল লেখা শুরু করি।

২২ বছর আগে আমি আমেরিকার বোস্টনে কেমব্রিজ পাবলিক লাইব্রেরির বাংলা বিভাগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গেস্ট স্পিকার হয়ে গিয়েছিলাম। অনুষ্ঠান শেষে ‘বোস্টন গ্লোব’-এর (এটি আমেরিকার একটি লিডিং ডেইলি) এক সাংবাদিক আমাকে বলেছিলেন, শুনলাম তুমি একজন কলামিস্ট। তো কতদিন পরপর কলাম লেখো? বলেছিলাম, মাসে ৪টি। সেই সাংবাদিক চোখ কপালে তুলে বলেছিলেন, ওয়াও! মাসে ৪টা? তুমি নিশ্চয়ই খুব মেধাবী। ওই সাংবাদিক গাফফার ভাইয়ের কথা শুনলে না জানি কী বলতেন। হ্যাঁ, গাফফার ভাই প্রতিদিনই একটা করে কলাম লিখতেন। পৃথিবীতে আর কোনো কলামিস্ট এত কলাম লিখেছেন কিনা আমার জানা নেই। তার নাম গিনেস বুক অব রেকর্ডসে অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত। বাংলা-ইংরেজি মিলিয়ে ঢাকার কয়েকটি পত্রিকা ও ইন্ডিয়ার স্টেটসম্যানে তো লিখতেনই, এছাড়া লন্ডন ও নিউইয়র্কের বাংলা পত্রিকাগুলোয়ও লিখতেন মাঝে মাঝে। তো আমি যুগান্তরেই তার প্রায় ৫০০ কলাম এডিট করেছি। চলতিপত্র ও মৃদুভাষণেও করেছি অনেক। অন্য যে কারও লেখা, তা তিনি যতো জ্ঞানী-গুণীই হোন (দু’-চারজন বাদে, তারা অবশ্য পণ্ডিত নন, সাংবাদিক), জায়গায় জায়গায় কলম চালাতে হয়। কিন্তু কী বানান, কী বাক্য গঠন, যতিচিহ্নের ব্যবহার অথবা এক্সপ্রেশন-গাফফার ভাইয়ের লেখায় কলম চালাতে হতো না বললেই চলে। মাঝে মাঝে শুধু বলতাম, গাফফার ভাই, এই তথ্যটা ঠিক আছে তো? তিনি বলতেন, ক্রসচেক করে নিও। বলতাম, ’৬৫ সালের ঘটনা ক্রসচেক করবো কীভাবে? আমার ওপর খুব নির্ভর করতেন তিনি। হেডিং চেঞ্জ করলে মাইন্ড করতেন না। একদিন সাহস করে বলে ফেলেছিলাম, গাফফার ভাই, আপনার বিশ্লেষণ আপনার মতো করবেন; কিন্তু খেয়াল রাখবেন তথ্যবিকৃতি (তিনি যেহেতু লন্ডন থেকে লিখতেন) যেন না ঘটে। তথ্যের ঘাটতি থাকলে অবশ্য তিনি হয় আমাকে, না হয় মোনায়েম ভাইকে ফোন করতেন। কখনো কখনো আমি কলামের সাবজেক্টও ঠিক করে দিয়েছি। রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণে কিংবা মন্তব্য প্রকাশ করার ক্ষেত্রে নন-পার্টিজান দৃষ্টিভঙ্গি থাকা দরকার-এমন কোনো পরামর্শ একজন প্রিয়ভাজন হিসাবে আমি তাকে কখনো দিইনি। অনেক কারণে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন