জনপ্রতিনিধির ধর্মপ্রীতি (!)

www.ajkerpatrika.com মামুনুর রশীদ প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩২

জনপ্রতিনিধিরা চিরকালই ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আসছেন। খুব সহজে তা দিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব বলে তাঁরা মনে করেন। আজকাল এসব ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বেশ কিছু সংসদ সদস্য প্রকাশ্যেই শিল্প-সাহিত্যের বিরোধিতা করে গানবাজনাকে এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের একজন চেয়ারম্যান উচ্চ কণ্ঠে বলেছেন, তাঁর এলাকায় গানবাজনা করা যাবে না। প্রায় সব এলাকাতেই এখন প্রাইমারি স্কুলের চেয়ে মাদ্রাসার সংখ্যা বেশি। তাই মাদ্রাসার অনুশাসনে থাকা, এসব মান্য করা স্বাভাবিক।


একজন সংসদ সদস্য যাঁর মাথায় খুনের মামলা ঝুলছে, সারা দেশে যাঁর পরিচিতি একজন সন্ত্রাসী হিসেবে, তিনি স্কুল-কলেজে পয়লা বৈশাখে গান গাইতে দেন না। শীতকালে তো বটেই, অন্য সময়েও তিনি ওয়াজ মাহফিল ও ধর্মসভার আয়োজন করেন। মাদ্রাসা-অধ্যুষিত এই এলাকায় পেশিশক্তির প্রবল ব্যবহার। যেহেতু এলাকায় কোনো সংস্কৃতিচর্চা নেই, তাই কোনো মানবিক ও সুকুমার বৃত্তির চর্চাও হয় না। এলাকায় নানা সাংস্কৃতিক সংগঠন থাকা সত্ত্বেও তাদের কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। গান-নাচ-আবৃত্তি-নাটক-সাহিত্য-চিত্রকলা যাঁদের অন্তরে কোনো স্পন্দন তোলে না, তাঁদের খুনি-সন্ত্রাসী হতে বাধা কোথায়? নারীশিক্ষা যেখানে বোরকার অন্তরালে মাদ্রাসা পাঠ, বিজ্ঞানচিন্তা যেখানে অন্তর্হিত, সেখানে তালেবানি শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে অসুবিধা কোথায়?


দেশে একটা মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের একটা প্রধান বিষয় ছিল, অসাম্প্রদায়িকতা। যার আরও সুনির্দিষ্ট কথা ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু দেশে অনেক ব্যাপার ঘটে গেছে। দেশদ্রোহীরা রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদারি পেয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ছায়াতলে আমাদের দেশের সেনাবাহিনী স্থান পেয়েছে। পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার স্বপ্নে তারা বিভোর হয়েছে। সেখানে অবশ্য দেশের শিল্পী-সাহিত্যিক, ছাত্র-জনতা এবং রাষ্ট্রক্ষমতার বঞ্চিত অংশ ও গণতন্ত্রকামী রাজনীতিকদের যৌথ আন্দোলনে তা ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু ওই সাম্প্রদায়িকতার ভূত চলে যায়নি। একটা বড় অংশ ওই ব্যাপারে ভূতগ্রস্ত। সেই ভূতগ্রস্তদের একটা বড় অংশ আবার বর্তমানের শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে ঢুকে পড়েছে। তাঁরা ধর্মকে ব্যবহার করছেন নানাভাবে। তাঁদের মধ্যে শিক্ষা-সংস্কৃতি নেই, তাঁরা বাংলাদেশের ইতিহাস জানেন না। তবে টাকাটা চেনেন ভালোভাবেই। তাঁরা ব্যবসায়ী, বিশাল মুনাফার মালিক। তাঁরা ব্যবসার নামে লুট করেন এবং বিদেশে টাকা পাচার করে দেন। নমিনেশন কিনতে পারলে তাঁর তো কোনো শিক্ষা-দীক্ষা বা বাংলার সংস্কৃতি জানার প্রয়োজন পড়ে না!


দীর্ঘদিন ধরেই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয় না। রাজনীতি শেখার সূতিকাগার এই সব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ। দুই বড় দলের টাকা উপার্জনের একটা বড় জায়গা হচ্ছে নমিনেশন-বাণিজ্য। লুটেরা ব্যবসায়ীরাও মুক্তহস্তে এসব জায়গায় লগ্নি করে থাকেন। সংসদ নির্বাচন ছাড়াও তাঁদের বিস্তৃতি ঘটেছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে। কোটি টাকার আদান-প্রদান সেখানে। কোনো ত্যাগী রাজনীতিবিদের পক্ষে এই প্রতিযোগিতায় দাঁড়ানো কি সম্ভব?


তাঁদের সবচেয়ে বড় সুবিধা যে তাঁরা জানেনও না দেশপ্রেমটা কী। দেশের অর্থ লুট করে বিদেশে পাচার করা যেকোনো রাষ্ট্রেই একটা দণ্ডনীয় অপরাধ। এই সব অপরাধ ধরার জন্য সব দেশেই শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে তা এখন পর্যন্ত দুর্বল শুধু নয়, নানা প্রভাব-প্রতিপত্তিতে অসহায়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও