‘পাগল তুই যে যাবি, আমাকে বলি যাবি না?’ কেঁদে বললেন রাজিয়ার মা

প্রথম আলো শেখ সাবিহা আলম প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০২৪, ১৭:৫৫

কালীগঞ্জের মৌতলায় জাতীয় দলের ফুটবলার রাজিয়া সুলতানার বাড়িতে পৌঁছাতে স্থানীয় এক সাংবাদিকের সহযোগিতা নিয়েছিলাম আমরা। স্থানীয় সাংবাদিক সামনে, আমি ও সহকর্মী কল্যাণ ব্যানার্জী পেছনে। তিনি মোটরসাইকেলের ব্রেক কষে ইঙ্গিত দিলেন, আমরা পৌঁছে গেছি। একটু অবাকই হলাম। নাহ্‌, নামফলক দূরে থাক, এ বাড়ির ফটকই নেই। ঢোকার মুখে অবিন্যস্ত খড়ের গাদা, সরু একচিলতে উঠানের দুই পাশে জীর্ণ সব কুটির।


রাজিয়াদের বাড়িতে যাই ১৯ মার্চ। ভেতরে ঢুকতেই এক নারী গায়ে আছড়ে পড়ে কাঁদতে লাগলেন। আকাশ-বাতাস বিদীর্ণ করে দেয় সেই আওয়াজ। তিনিই রাজিয়ার মেজ বোন নাজমা খাতুন। আমি তাঁকে সামলে নেওয়ার সুযোগ দিলাম। বেশ খানিকটা পর খোঁজ চাইলাম রত্নগর্ভা মায়ের।


বুঝলাম, কাছেই উবু হয়ে বসে যে নারী ঘুঁটে দিচ্ছেন, তিনিই আবিরন বেগম—রাজিয়া সুলতানার মা। আমাদের অনুরোধে কাছে এসে বসলেন, বললেন না কিছুই। শিশুটির খোঁজ নিই। জানতে পারি বাবা ইয়াম রহমান ছেলেকে নিয়ে গেছেন। ঢাকায় একটি পোশাকশিল্প কারখানায় কাজ করেন তিনি, স্থায়ী নিবাস রাঙামাটি।


আপাতত রাজিয়ার ছেলে দাদির কাছে রাঙামাটিতেই থাকবে। ততক্ষণে পাশের বাড়ি থেকে লাঠি ঠকঠকিয়ে রাজিয়ার ছোট চাচা সাকের আলী সরদার, আত্মীয়স্বজন, ছোটবেলার খেলার সাথি, পাড়া-প্রতিবেশী এসে হাজির। রাজিয়া তাঁদের সবার। মৌতলার সব মানুষের মুখ উজ্জ্বল করে দিয়ে তিনি এখন কবরের অন্ধকারে একা আছেন।


কেমন ছিলেন আমাদের রাজিয়া সুলতানা? চকচক করে ওঠে বোনটির চোখ। ছোটবেলার খেলার সাথি, গ্রাম সম্পর্কের মামি, এক বছরের বড় যে ভাই, যাকে চোখের আড়াল করতে দিত না, সবাই প্রতিযোগিতায় নামে। আট বছর বয়স থেকে রাজিয়ার খেলার শুরু। মামাতো-চাচাতো ভাইদের সঙ্গে সেও গরু চরাতে যেত। মার্বেল খেলত। জাম্বুরা হোক বা হাওয়া চলে যাওয়া বল, রাজিয়া গোল দেবেই। ছোটবেলার খেলার সাথি ইয়াছিন সরদার বলছিলেন, ‘তার হাঁডুটা আল্লাহ কি দে যে বানায়েছিল! তা কেবল আল্লাহ পাকই জানে। যে জোর ছিল, বাপরে বাপ। বসন্তপুরে যেবার খেলতে গেছিল, একাই সাতটা (গোল) করিছে।’


রাজিয়া প্রথম পাদপ্রদীপের আলোয় আসেন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় উভাকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলে। এরপর টানা অনূর্ধ্ব-১৩ থেকে অনূর্ধ্ব-১৯ ও জাতীয় দলে। ছিলেন ২০১৮ সালে ভুটানে অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের সদস্য। সেই ১১ বছর বয়স থেকে মৃত্যুর আগপর্যন্ত দেশের ভেতরে ও দেশের বাইরে ভারত, ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ ও সিঙ্গাপুরে যত জায়গায় খেলেছেন, সব খেলায় অংশগ্রহণের কার্ড যত্ন করে তোলা আছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও